সৌমী আচার্য্য
শূন্য হয়ে শূন্যে
ঘন হয়ে নদীর ধারে বসে থাকতে থাকতে বোদের কেমন যেন নেশা লাগে। শালা বাপ চোদ্দগুষ্টির ঠিকানা নেই অথচ সে কিনা রাতারাতি স্টার বনে গেল। কী করে বনল? এই বিলিতি মদের হেব্বি খাঁই। জিভ টাগরা সব ঝিঁঝিঁঝিঁঝিঁ চ্যানচ্যানে। বোদে কিছুতেই ঘাড় তুলতে পারেনি এখনও না আর শিতলকুচির তুলির কাছেও না। সেই কবে ওদের বাপ ঠাকুর্দা নাকি বোদের চোদ্দগুষ্টিকে পিটিয়ে শহরছাড়া করেছিল চোর বলে। বোদের মা বাবা ছিল স্বভাব চোর। প্রয়োজনের থেকে বেশি ইচ্ছেতে শখে চুরি করত। তাই তুলির কাছে ঘেঁষলেই কাঁচা খিস্তি ঝাড়ে।
-মুখ খোলাবিনা বোদে। শালা চোরের ব্যাটা। শখ কত! আমার সাথে পিরীত করতে আসে। বেবোধ গাণ্ডু একটা।
অথচ এই নদীর পাড়ে সন্ধ্যা হলেই খড়ি দিব্যি ওকে চাটতে আসে। ঐ আদিবাসী পাড়ায় থাকে। বুকের উপর ভারী হয়ে চেপে বসলেই বোদে ওকে ছুঁড়ে নদীতে ফেলে। সেখানেই উল্টেপাল্টে পিষেই সুখ। মেয়েটার সারা গায়ে হাসি আর নদীর চিকচিকে বালি।
-খাঁই বটে তুর। আমার গায়ের গন্ধে লেশাচাপে লাকি!
বোদে গলার ভিতর পাকিয়ে আসা থুথুটা সজোরে ছুঁড়ে মারে মাটিতে। একটাও কথা না বলে হাঁটা দেয় ভেজা জামা প্যান্টে। ওর বছর তেইশের শরীরটা ঝিমোতে ঝিমোতে এগোয়। ছেলেগুলো রোজই কিচাইন করে বড়ো রোডে ওঠার রাস্তায়। কিসব ছবিছাবা তোলে ফোনে, বিস্তর লাফালাফি, গানা, বাজানা। ও পারতপক্ষে কিছু বলেনা আজও চলেই যাচ্ছিল ঘাড় নীচু করে হঠাৎ একটা ছোকড়া খুঁচিয়ে দিতেই ওর মুখ থেকে টবাজারের পচা নর্দমাটা হাট হয়ে গেল। পরদিন স্টার। ভাইরাল। মুকুটবাবুর গোলায় ঢুকতেই হাঁক।
-এই যে শুয়োরের নাতি এত কান গরম করা গালাগাল তুমি কাকে ভেবে উগড়েছো চাঁদ!
একথা ঠিক গালাগাল দিতে ইচ্ছে হলেও কি দেওয়া যায়? কারো কাছে পেট বাঁধা, কারো কাছে জীবন। ঝিরিঝিরি আমলকি রোদে নিজেকে শুকিয়ে তুলতেই ননী এসে মোবাইলটা খুলে ধরল। চটের ইস্কুলে দুলে দুলে, ভোর হলো দোর খোলো খুকুমণি ওঠো রে, পড়াটা মনে পড়ে যায়। প্রেতের মতো হাত পা নেড়ে মোবাইলে যে কথা বলছে সে কে? বোদে নিজেকে ভালো করে দেখে বুঝতে পারে না। বলে ফেলে, 'সাহস আছে বটে, তেড়ে গাল দিচ্ছে ছেলেটা।'
-ও মুকুট কাকা এতো নিজেকে নিয়ে হেব্বি খুশি গো।
-ওর তেল বেড়েছেরে ননী, আজ টবাজারের সব মাল ওকেই খালাস করতে দে।নবাবপুত্তুরের ভাইরাল হওয়া বার করছি।
এই রাগগুলো সবকটা বোদের চেনা। ঝাপসা ঘোলাটে অতীতের বারোভাতারি রাতের আঁশটে গন্ধ মুখ ভরে থুথু ঠেলে। ভিক্ষে বেশি পেলেই বোদে ডবল ডিমের ঝোলভাত নিয়ে হাঘরে মুখে তৃপ্তি বুনতো আর ডুলু বোষ্টমী ছ্যাড়ছ্যাড় করে মুতে দিত ঠিক খাবার পাতের পাশে। শেষ ঝোলটুকু এত নোনতা বিস্বাদ তবু ছাড়া যেত না, বেশি টাকা মাসে দুতিনবার ছাড়া যে জুটতো না। তোড়ে খিস্তি দিত বোদে আর ডুলু চিল্লে বলত, 'খা খা আবেগীর ছেলে খা।' ডুলুর রাগের কারণ কী ছিল? ওর পেটে ঘা বলে ডিমের ঝোল খেতে পারত না, সেটাই হবে হয়তো। বোদে ওর থেকে দূরে সরতেই একদিন হাঁটা লাগিয়েছিল। হাঁটতে হাঁটতে সময় পেরিয়ে এঘাট সেঘাট ঘুরে জুটিয়ে ফেলল মুকুটবাবুর গোলায় কাজ। মাথাটা ফাঁকা লাগালেও শরীরের খিদে তার খুব। টবাজার কমিটির অষ্টপ্রহর কীর্তনের মোচ্ছবে একবালতি খিচুড়ি সে একাই নামিয়ে দেয়। লোকে বেশি খাওয়া নিয়ে খোঁচালেই বোদে মুখের শব্দে ঝাল মেটায়।
তবে এখন তার মনে একটাই প্রশ্ন। এই খিস্তি শুনে লোকে কী পায়? মানে যার বুক খড়খড়ে সে হয়তো গাল দিয়েই জল নামায় অথবা ওর মতো যারা রাস্তায়, ব্রিজের নীচে প্লাস্টিক টাঙিয়ে এর ওর গায়ে ঘুমিয়ে চকচকে জীবনের স্বপ্ন দেখে, তাদের বিলাস বলতে কতগুলো অশ্লীল শব্দের কারণ অকারণ জাবর কাটা কিন্তু ঐ স্বপ্ন স্বপ্ন বাড়িগুলোতে যারা থাকে, যাদের জীবনে উপচে থাকে সুখ তারা কেন শুনছে মোবাইলে খিস্তি? ননী বলে, 'আরে যে কথা আমি বলতে চাই কিন্তু পারিনা সেটা অন্যের মুখে শুনলে একটা গরম ভাপ আসে। দেখিসনা সিনেমায় হিরো যখন ক্যালায় আমরা কেমন চিল্লাই।' এই কথাটা অবশ্য ননী ঠিক বলেছে। তুলির জামায় পোসেনকে হাত ঢুকাতে দেখে পৈশাচিক আনন্দে চিৎকার করতে ইচ্ছা হয়েছিল কিন্তু কিছু বলার আগেই পোসেন ওকে দেখে হাত না সরিয়েই হুঙ্কার দিল, 'এ্যাই শালা চোরের বাচ্চা, অন্ধকারে ঘুরঘুর করছিস কেন? কী চুরির মতলব। ভাগ এখান থেকে।' অন্ধকার গলিতে তেরছা ভাবে ক্লাবের হলদে আলো ফোকাস ফেলে রেখেছিল। বোদে দ্রুত পা চালানোর আগে বমি করে এসেছিল কাঁচা শব্দ।
স্টেশানের পিছনে চক্কোতিদের গ্যারেজ। ওখানেই থাকে রাতে। মাঝেসাঝে দু একটা খদ্দের সাইকেল নিতে আসে। বাইক আসে গোটা তিনেক। এছাড়া বেশ আরামেই ঘুমায়। শুধু শীতকালে বাঁদিকের ফাঁকা দিক দিয়ে ঠাণ্ডা হাওয়া ঝাঁপিয়ে আসলে কুকুরের মত গুটিয়ে ঘুমায় বোদে। হৃদয় চক্কোতির মনটা অবশ্য দয়ায় ভরা। শীতকালে পুরোনো গা কুটকুটে কম্বলটা ওকে দিয়ে দেয়। গরম পড়তে না পড়তেই নিয়ে নেয়। ধুয়ে কেচে রাখবে বলে। তখন হঠাৎ হঠাৎ একেক দিন ঠাণ্ডা পড়লে বোদে কুকুর হয়েই কাটায়।
স্টেশনে বসে ট্রেন যাওয়া আসা দেখতে ওর খুব ভালো লাগে। মাথার ভেতরটা ঝিম হয়ে থাকে। লোক! লোক! কত লোক! আচ্ছা হঠাৎ বাবা মা ভাই বোন ঝপাঝপ ট্রেনটা থেকে নেমে আসতে পারেনা? খুব সুন্দর মহিলা দেখলে মা ভেবেও চোখ আটকায় বুকে আর তখনি মনটা চঞ্চল হয়ে যায়। মা খুঁজে খুঁজে হয়রান এমন কথা ওর বেলায় খাটে না। বোদে বোঝে ও একটা ফালতু। থাকলেও হয় না থাকলেও হয়। তবে দুটো ছেলে স্টেশনে ওকে ধরে বেশ রাজা গজা মার্কা ভাবসাব করাতে প্রথমে বেশ মজাই পেল। ওর গালাগাল শুনতে এসেছে। লোকে নাকি হেব্বি খাচ্ছে।
-আমার গালাগাল ভালো লাগেনা। আমি নদী, স্টেশন আর ঘুম ভালোবাসি। কুকুরের মতো ঘুম। গোটানো। সজাগ। ভুক্ ভুক্ আওয়াজ করা ঘুম।
তবু নাছোড়বান্দা ছেলেগুলোকে গোটা কতক অনর্গল পচা শব্দ হাসি মুখে উগরেই দিল। কারণটা অবশ্য জোরালো। ওরা দুশো টাকা, কিছু খাবার দাবার হাতে গুঁজে দিয়েছিল। কটা খারাপ শব্দ সমান সমান ভালো খাবার ও টাকা। বোর্ডে সুখেনস্যার লিখে দিয়ে বললেন, 'এই গরু বুঝেছিস?' হাম্বা হাম্বা করে বোদে আওড়ে নিল কথাটা। কখনো কালো কখনো ফর্সা, কখনো ন্যাকা কখনো বোকা সব রকম ঢং করা লোকজন আসতেই থাকল। মুকুটবাবুর কাজে আসতে বলা মেজাজটার মুখে থুথু ছিটিয়ে ব্যোমভোলা হয়ে উঠল বোদে। ননী ডাকতে এসেছিল, বোদেকে দেখে চোখ পিটপিট করে দাঁড়াল।
-কী দেখছিস বে হাঁ করে? রণবীর কাপুরের মতো লাগছে তো আমায়? লাগবেই। খিস্তি বেচি আমি, নগদ টাকা। বসে বসে খাই আর খিস্তি ঝাড়ি। ঐ মুকুট ঢ্যামনাটাকে বলিস আমার বাঁ পাও আর যাবেনা ওর সিমেন্টের গোলায়।
-কিন্তু বোদে এই খিস্তি তোকে কদ্দিন খাওয়াবে?
-খাওয়াবে খাওয়াবে। আর শোন। আজ নদীর ধারে তুলি আসবে, কথা দিয়েছে।
-বোদে ভুলেও একাজ করিস না। পসেন কিন্তু রক্তাগঙ্গা বইয়ে দেবে।
তোড়ে মা বোন উঁচুনীচু করতেই ননী ঘেন্নায় সরে গেল। নদীর পাড় আলো করে তুলি চেয়ে বসল চুমু। বোদে ব্যোমকে গেল। সে থাপুড় থুপুড় উপুর করতে ওস্তাদ। চুমুটুমু তার আসেনা। অস্হির হতেই টেনে চড় কষায় তুলি।
-জানোয়ার তুই। ফুল শুঁকতে জানিসনা! শুধু তেলের ঘানি পেষাই!
-আচ্ছা রাগ করিসনা, শিখিয়ে দে।
-একটা ভালো ফোন কেন। সুন্দর ছবি তুলবো দুজনে। আর তুই নিজেই একটা একাউন্ট খুলে গালাগাল দে না।
বোদের মাথার উপর দিয়ে অর্দ্ধেক কথা সাঁতার কেটে চলে গেল। ওকে আরো অবাক করে দিল পোসেন। তিনদিনের মাথায় তুলি নদীর পাড়ে যখন ওকে নিয়ে এল।
-দ্যাক্ বোদে তুই ভালো ছেলে। তোর কথা তুলি আমায় বুঝিয়েছে। তোকে সব করে দেব, বুঝিয়ে দেব। তুই শুধু খিস্তি দিবি আর আমি যা বলব করবি। তবে লোকের মোবাইলে দিবিনা। নিজের মোবাইলে দিবি। টাকার বন্যা বয়ে যাবে রে।
সপ্তা খানেক পর খড়ি তেলকুচো মুখ আরও কালো করে বলল, 'তু ভাবিসনা আমার রিষ হইছে। তুই তুলি মুলি চুলোচুলি যার সাথে ইচ্ছা কাটা না কেনে আমার কিছু বলার নাই। শুদু ডরাই। তুর সবটা লদীর চরে লষ্ট না হয়।' আরে ধুর ধুর এই খড়িকে এড়িয়ে চলাই ভালো। নাচানাচি ঢলাঢলি মুখ খারাপের বন্যার মাঝে স্রোতের মতো টাকা আসতে লাগল। বোদের হাল ফিরল। টবাজারের পাশে একটা ঘর ভাড়া নিল। তবে পোসেনের আর তুলির চমক বাড়ল বেশি, ব্যাঙ্কে টাকাও বাড়ল বেশ। তুলির মা, বোন ভাইয়ের একাউন্ট হল। পোসেনের একটা জমি হল। তারপর বছর ঘুরতেই একদিন পুলিশ এল।
নদীর ধারের হাওয়ায় এখন বোদের খুব ঘুম পাচ্ছে। ভালো লাগছে। বিলিতি মদ শালা ঘাড় ধরে ধুলো চাটিয়ে তুলছে। হাত পা গুলোর সাথে সাথে পেট, পেটের ভিতরের মালমশলা সব যেন নেতিয়ে ভূমি পুজো করছে। পুলিশগুলো তুলে নিয়ে গিয়েই সাঁটন শুরু করল। পা, পাছা, পিঠ রগড়ে দিল আচ্ছাসে। হাত উপরে বাঁধা। বুক, মুখ ছুঁয়েও দেখল না।
-কী রে শুয়োরের বাচ্চা, মুখ খোল শালা, শুনি কেমন খিস্তি দিতে পারিস। তোর কন্টেন্টে তো পুলিশ, নেতাদের খিস্তি দিয়ে ভূত করেছিসরে কুত্তার বাচ্চা। তাহলে এখন কেন চুপ মেরে আছিস। খোল মুখ খোল। নাকি এত মোলায়েম খিস্তিতে তোর পোষাচ্ছে না!
বোদে অবাক হয়ে দেখল এরপর পুলিশ অফিসারের তেল চকচকে, দারুণ সুন্দর মুখটা টবাজারের খোলা ড্রেন হয়ে গেল সহজেই। ওনার কি ইউটিউব চ্যানেল আছে? উনিও কি খিস্তি বেচেন? মার খেতে খেতে ঘুম পেয়ে গেল বোদের। বেশ চ্যানচ্যানে ঘুম। যখন ঘুম ভাঙল থানার বড়ো মেজো সেজো সবাই চা খাচ্ছে। সুন্দর গন্ধ। ওর ফোনটা রেখে দিল। আর বাছা বাছা শব্দের সাথে চুল কান ঝুলপি ধরে টেনে টেনে সুখ করে নিয়ে ছেড়ে দিল। বাইরে বেরোতেই রোদ্দুর হাওয়া। বেশ আনন্দময় ভাব। ঝাকানাকা একটি মেয়ে ওর দিকে এগিয়ে এসে অনেক কিছু বলল। এই এক বোদের দোষ থেকে থেকে কিছুই বুঝতে পারেনা। যাহোক মেয়েটা যে গাড়িতে উঠতে বলছে, এটা বেশ বুঝতে পেরে টকাস করে চড়ে বসল গাড়িতে। মাঝেমাঝেই ওর সন্দেহ হয়, আসলে এসব কিছুই হচ্ছে না। সব স্বপ্ন। মেয়েটা সব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জিজ্ঞাসা করল। ফোনে রেকর্ড করল। ওকে হাজার খানেক টাকা দিয়ে ফিসফিস হাওয়ায় বলল, তোমার সব জয়েন্ট একাউন্ট কেন? পোসেন আর তুলির থেকে আলাদা হয়ে যাও। ওরা তোমায় ঠকিয়েছে। ফাঁসিয়েছে।
এই লুকোলুকি ব্যাপারটা হেব্বি লাগে ওর। কত রাতে ডুলু বোষ্টমী ওর হাত টেনে নিয়ে পাহাড়, খাল, বিল, পিছল গুহা মুখ ঘুরিয়ে এনেছে। ফিসফিস করে বলেছে, 'কাউকে বললি কপালে জোর দুকখু আছে।' মা বাবা চোর ছিল সে শুনেছে, কোনো এককালে তুলির বাড়ির লোকেরা তাদের পেঁদিয়ে এই শহরছাড়া করেছিল সেটাও শুনেছে কিন্তু কোথায় গেল তারা বোদে জানেনা। বোদেকে ফুটপাতে ফেলেই তারা ধাঁ হয়েছিল। বাবা মার কথা সে কখনো কাউকে জিজ্ঞাসা করেনি। আবার ডুলুর গোপন সুখ, তার হাতের টকটক স্বাদের কথা সে কাউকে বলতে পারেনি তবু কেন যে কপালে সুখ নেই এটাই জানেনা। মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে হেসে টাকাটা নিয়ে চৌমাথায় নেমে গেল। বিলিতি মদ আর এক পেট মাংসভাত খেয়ে নদীর ধারে ঝিম ধরে বসে থাকল। ওর ব্যাঙ্ক একাউন্ট গুলো হেব্বি ভোজবাজি জানে। রাতারাতি শূন্য হয়েছে। ম্যানেজারকে বাপ, মা, বোন তুলে ধুইয়ে দিয়েছে। এখন সম্বল কড়কড়ে তিনশো। নদীর জলের কাছে বোদে ফিসফিস করে, এবার কী বেচা যায়? একটু বুদ্ধি দে দেখি। বুদ্ধি শুনে গিয়ে দাঁড়ায় মুকুটবাবুর ডেরায়।
-কি খিস্তির পকেট ফাঁকা নাকি? তা ননীকে দিয়ে যে বলে পাঠালি তোর বাঁ পায়ের ঠ্যাকা! আবার এলি কেন তবে?
মুকুটবাবুর চাঁটিটা বদহজম হয়। অনাভ্যাসে বিদ্যানাশের মতো। পিঠটাও টনটন করে। সিমেন্টের গুঁড়োয় গলার কাছটাও জ্বলতে থাকে। দুপুরে কুমড়োর ঘ্যাঁট দুটো রুটি আর সন্ধ্যায় লাইনের ধারে কালীপুজোর খিচুড়ি জ্বলতে জ্বলতে পেটে নামে। গ্যারেজের শেডে কাঠের তক্তার উপর নোংরা চাদরে শুয়ে বোদের হঠাৎ টাকার অঙ্কটা মনে পড়তেই, চোখ ঠিকরে আসতে চাইল। পোসেন আর তুলির জন্য চিল্লে চিল্লে খিস্তি করতেই শরীরটা তেজ হারিয়ে নেতিয়ে গেল। ভোরের আলোয় গুটিয়ে শুয়ে থাকা বোদেকে খানিকটা মেরুদণ্ডহীন সরীসৃপ মনে হতে থাকে অনেকের।
দুর্দান্ত গল্প
উত্তরমুছুননাম না থাকায় বুঝতে পারলাম না, তবে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই
উত্তরমুছুনএক অন্যস্বাদের গল্প।একবার নয় দুবার পড়লাম।
উত্তরমুছুনএকটু তাড়িয়ে তাড়িয়ে পড়তে হয়।গোগ্রাসে পড়লে অনেককিছুই মাথার ওপর দিয়ে যায়।দারুন প্লট।ভালো লাগলো
খুব ভালো লাগল
মুছুনএককথায় অনবদ্য। তোমার গল্পের গতিময়তাই বেশি টানে আমাকে।
উত্তরমুছুনআন্তরিক ভালো লাগা
মুছুনখুব সুন্দর লেখা , বোদে চরিত্র টি সামনে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি । এক নিঃস্বাসে পড়লাম।
উত্তরমুছুনআনন্দম্
উত্তরমুছুন