পোস্টগুলি

সম্পাদকীয়

ছবি
  বাতিঘর অনলাইন হৈমন্তিক সংখ্যা কোনো কোনো জানালার নাম একাকীত্ব। কোনো কোনো নদীর নাম বিষণ্নতা। সেইসব জানালায়, নদীতে যখন হেমন্তের রোদ এসে পড়ে, মায়া জাগে। হলুদ পালকের স্পর্শ গায়ে মেখে জেগে ওঠে শব্দেরা। বান ডাকে। হাতে হাত ধরে হেঁটে চলে গুরু ও লঘু ভাবাবেগ। আমাদের দেখা হয়ে যায় ডিজিটাল পেজে, বইয়ের আড্ডায়। আলাপের শুরু আছে, শেষ নেই। স্মৃতির দোঁয়াশে কে যেন বুনে যায় ধানবীজ। কবিতার ঘরবাড়ি গড়ে ওঠে। দেয়াল জুড়ে গদ্যের মুক্ত ভাস্কর্য। অনুবাদ কবিতা ঠোঁটে নিয়ে উড়ে আসছে অ্যালবাট্রস। ওর লিপ্তপদ ছুঁয়ে যায় কবেকার জলজন্ম। নীল ভ্রমণের স্বরলিপি লিখে রেখে যায় রাতের শিশির। বাতিঘরে জাহাজ ভেড়ে। শূন্যের দিকে উড়ে যায় অটাম সিনড্রোম। আচমকাই ধেয়ে আসে শীতের বাতাস, ঝরে পড়ে কামনাফুল। আমরা এসে দাঁড়াই বাতিঘরের ভার্চুয়াল বারান্দায়। খাতাভর্তি মনখারাপ নিমেষে অনাবৃত, ভিজে যায় মরশুমি উচ্ছ্বাসে। হেমন্ত চলে গেছে কবে অথবা গিয়েও যায়নি। আজও কোনো কোনো আড্ডার নাম ওয়েবিনার। কোনো কোনো ঝর্ণার নাম অপ্রকাশিত কবিতা … একসাথে জেগে ওঠো, জাগাও একসাথে নিভে যাও, নেভাও একসাথে একা একা কবিতামন্থন।  

অজিতেশ নাগ

ছবি
    আগুনপথে একমাত্র আগুন যা পারে পুড়িয়ে দিতে সব আত্মসম্মান, একমাত্র আগুন যে এনে দিতে পারে সেই নির্মম চাহিদা, যে চাহিদা এখন শবের অস্তিত্ব নিয়ে স্বপ্নপূরনে ব্যর্থ কোন অলীক দ্বীপে বাস করে সেই স্বপ্নের প্রেমিকা, একমাত্র আগুন পারে মধ্যের সব জলটুকু শুষে নিতে। আমাকে সেই আগুন নিতে দাও, দগ্ধ হতে দেখি সীমাহীন যতিচিহ্নটুকু, বিরামহীন প্রদোষ যেন একটি একটি আগুনের বিন্দু। এক অনন্তযাত্রীবাহী নৌকা ভিড়েছে ঘাটে, আমি উঠে যাব রাত শেষ হবার আগেই, ঊষাকাল শ্মশান হয়ে আছে এখনো ধিকিধিকি, নিঃশব্দ পথটা হারাতে দিলো না আমায়, তাই আগুন দাও প্রিয়া, আমি মাঝের সামান্য পথটুকু পেরোতে চাই।  

মীরা মুখোপাধ্যায়

ছবি
    হেমন্তের লেখারা এসেছে " Season of mists and mellow fruitfulness....."                               John Keats রাতের শিশির পড়ে পিছল হয়েছে পথটুকু টাঁড়ে কোন ফসল ফলে না, শুধু রুক্ষ শীত খানিকটা আগে থেকে বাড়িয়ে দিয়েছে তার জোব্বা শুদ্ধু রোগা হাতখানা....... এবছরও তাহলে থেকে গেলাম ! এবারও নামাতে হবে কীটদষ্ট কালো শাল অবসলিট হয়ে যাওয়া হাতে বোনা ছেঁড়া সোয়েটার। কীটস জীবনকে ভালোবাসতেন, ওটুকু বয়সে ভালোবাসা ছাড়া কীই বা থাকে.... তাই ওই " mellow fruitfulness...." আমি হাঁটছি মৃত্যু উপত্যকার দিকে,আর সেখানেই অসম্ভব মরবিড হেমন্তের লেখারা এসেছে  

সব্যসাচী মজুমদার

ছবি
   মজার ব্যাপার মজার ব্যাপার - শব্দ করেই আসছিল সে দেখছিলামও কিন্তু, আমার সরার কোনও বিকল্প নেই মাথার ওপর দুলছে পরজীবীর ছায়া বাতাস বহে চতুর্কোণেই বাতাস ভরা অল্প নদী         নদীর পারে ধর্মপিতা মাছ ধরেছে     দুর্গাপাখি ডাকছিল কী! শব্দ করেই আসছিল সে দেখছিলামও … কিন্তু, আমার সরার কোনও বিকল্প নেই…     এটাই স্বতঃসিদ্ধ না তো!  

নিলয় নন্দী

ছবি
    একটি হেমন্তের কবিতা  একটিমাত্র হেমন্তের কবিতা লিখেছি এযাবৎ টক কমলালেবুর খোসা ছাড়াতে ছাড়াতে শিশিরে ডুবিয়েছি নির্বিষ ফণা, তারপর প্রত্যাশার চেয়েও অনেক দ্রুত দৌড়ে গিয়েছি হলুদ শাড়ির দিকে, মগ্নপাঠ বিকেলের দিকেও ঘরের সমস্ত দরজা খোলা রেখে আমি হেমন্তের মাঠে উপুড় হয়ে শুই, পিঠে পদ্মপাতা অথৈ জল নখের দাগে কামসূত্র, এলে তুমি? অপেক্ষা অনন্ত হোক বা ক্ষণজন্মা, শীত আসে অঘ্রাণ তলিয়ে যায় হিমাঙ্কে.. সেই একটিই হেমন্তের কবিতা লিখেছি এযাবৎ বাকি সবই তো বর্ষা, বসন্ত বা তোমার কবিতা।  

দেবাশিস ঘোষ

ছবি
    রিষড়ার এক রাত মেলা ফেরত জ্যোৎস্নার ঢেলায় সাবধানী পা ফেলে আমরা হাঁটছিলাম। অপেক্ষায় মা চতুর্পাশ উন্মুক্ত, সাদা, আবছাটে ঘরবাড়ি, গাছপালা আমাদের কথা ছিল আগামীর দিনগুলি আমাদের সঙ্গে হেঁটে চলছিল নীরব চাঁদ আর তার যাবতীয় ছলাকলা দু'পায়ে বিছিয়ে থাকা ঢেলার রুক্ষতা পেরিয়ে মাটির এক পথ গাছের বিশ্রাম এসে ছুঁয়ে দেয় আমাদের দু'জোড়া পা কিশোরী রাত্রি সবে যুবতীর দিকে তখনও দূরের থেকে ভেসে আসা কবিগান উদোম জমিতে শীত আঁকড়ে আছে ফসলের স্মৃতি আমাদের কথাগুলো ভবিষ্যতমুখী আমাদের হেঁটে চলা দিগন্তের দিকে সেসব জ্যোৎস্নাগুলো গুটিয়ে নিয়েছে চাঁদ সেসব কথারা কবে শুকিয়ে গিয়েছে তবু দূর থেকে কবিগান বয়ে আনে হাওয়া  

চিরন্তন সরকার

ছবি
   অধিবেশন নদী। সংক্রান্ত স্রোতের নীচে কামানগর্জনের গম্ভীর শব্দ হয়। ভাষা। সংক্রান্ত অক্ষরে প্রাক-লেখ‍্য সময় স্মৃতি হয়ে ফোটে। ঘুড়ি। সংক্রান্ত ধর্মদন্ডে শকুন মুহূর্তকাল পাখা মুড়ে বসে। জুতো। সংক্রান্ত গর্তে মাকড়েরা মুখে মুখে গোপন বার্তা বোনে। ক্ষেত। সংক্রান্ত আলের ধারে চাষা আনমনে বিড়ি ধরায়। ট্রাক। সংক্রান্ত খাকি বুট হেমন্তে পিষে দেয় লাল চিনারপাতার স্তূপ। ছাদ। সংক্রান্ত কোণে অপঘাতে মৃত বধূ ফের এসে দাঁড়িয়েছে। ব্রেক। সংক্রান্ত চাকা সিকিমের খাদে গড়াতে গড়াতে নামে। দাঁত। সংক্রান্ত কামড়ে ফল চিরে গিয়ে নিমেষে দু-খন্ড হয়। চার্চ। সংক্রান্ত কবর-জঙ্গলে হাওয়া তোলে ম্যাক্লাক্সিগঞ্জ। বোমা। সংক্রান্ত হাত উড়ে এসে ন্যায়বিচারের কক্ষে পড়ে। মেঝে। সংক্রান্ত আলোর টুকরো খলসে মাছের মতো নড়ে। হাট। সংক্রান্ত চালসায় ওরা কুকরি দিয়ে পশুর হাড় কাটে। ঝরনা। সংক্রান্ত পাথরে শীতের হাওয়া তীক্ষ্ণ আঁচড় বসায়। গলি। সংক্রান্ত বাড়িরা নিভৃত বিকেলে একে অন্যের দিকে ঝোঁকে। নেতা। সংক্রান্ত কপ্টার দুর্গতদের জন্য শুভেচ্ছা পাঠায়। হাতি। সংক্রান্ত মাহুত বীরসা ভগবান সেজে এই জঙ্গলকে জাগায়। টিলা। সংক্রান্ত ধারা ভুটান