রাখী সরদার

 



হরবোলা যুবক

আবারও ঘোর রক্তবসন্তে

হরবোলা যুবকটি ডেকেছিল আমাকে

কখনও কোকিলস্বরে,কখনও বা

সোমত্ত বাঘের গর্জনে


সন্ধ্যা এলেই বুঝতে পারি সে ছেলে

আমাকে অনুসরণ করছে।

আমিও অতি দ্রুত হেঁটে দাঁড়িয়ে পড়ি

স্বাতী তারার নীচে।


থমকে দাঁড়িয়েছি দেখেই

খুব নীচু স্বরে জানিয়েছে,

তোমাকে

দেখেছি বহুবার:

শালফুলে হাওয়া দিলে নীল ভ্রমরের

ডানায় দেখেছি তোমার গভীর চোখের প্রচ্ছায়া–হরপ্পার ওপার থেকে সিন্ধু হরিণ ডেকে উঠলে

ছুটে যাই তোমার জানালায়;

দেখি তোমার কালো পিঠের লালচে

জড়ুলে ঠিকরে পড়ছে রোদ!

নেশায় টলতে টলতে

গিয়ে বসি জুয়ার টেবিলে‌।

একে একে সব হারাই, তবু যিশুর

মতো দুর্লভ সাহসী হয়ে উঠি,

বুকের লালচে ধুকপুক পণ রেখে

ডেকে উঠি বাঘের স্বরে।


একবার, একটিবার খুব যৌনতার

রাত যদি দাও

মরণবাহী শ্রেষ্ঠ মিথ হয়ে

চলে যাব সেই প্রাচীন বাঘিনীর

ডেরায়, যে আমাকে রোজ ফালাফালা করে রেখে দেবে

মাটির নিবিড়ে।


অকস্মাৎ চিৎকার করে উঠি

আমার গভীর থেকে,

চোখের নিমেষে মরা পাখির ডাক

ডেকে ডেকে উড়ে গেল সে

যাওয়ার আগে আমাকে ডুবিয়ে দিল

আধিদৈবিক এক গাঢ় অন্ধকার...

           –--*---


রোমাঞ্চকর হাত

এখন

অসম্ভব চেনা চরিত্রগুলো

কালো চোখ মেলে মিশে যায়

                        রাতের আকাশে


মনের মধ্যে ঘুরপাক খাওয়া অভিযোগ ডিঙিয়ে পড়ে থাকে

পাহাড়ের অতি রূঢ় দাপট ও তোমার

                                ঝাপসা মুখ


এই সব কিছুর পাশে যেটুকু

আমি বেঁচে–আমাকে লিখে রাখে

                          একটি হাত, একটি

                             রোমাঞ্চকর হাত।

               ----*---


মহাকথা


তুমি কথা বলছ

তার উত্তরে আমি চুপ থাকলাম

তুমি চোখ তুলে তাকালে–

কিছু বলতে পারলাম না; কেবল,

তোমার কথাটার আশপাশ দিয়ে

ঘোরাঘুরি করে চলে এলাম।

আসলে যখন তুমি কথা বলো

তোমার চারপাশে ছুটে আসে

অজস্র গ্রহ-নক্ষত্র!


সেইসব আকাশবস্তকে সরিয়ে

তোমার কাছে পৌঁছতে পৌঁছতে 

তুমি হয়ে পড়ো প্রকাণ্ড এক ব্ল‍্যাকহোল! যেখানে টগবগ করে

ফুটছে অনন্ত অন্ধকার আর


                              অন্ধকার!



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোমা দত্ত

মঞ্জরী গোস্বামী