নীলম সামন্ত
বসন্ত বিলাপ
---------------------
টুপ করেই সকালটা হয়ে যায়৷ প্রতি বছর শীতের পর বসন্ত আসার আগে ভয়ানক গরম পড়ে। রোদের সে কী গর্জন। এই দিনগুলোতে রাত বারোটা নাগাদ কোন ভাবেই মনে হয়না সকালটা চাইলেই পুড়িয়ে দিতে পারে ধুলো ছায়ার সামগ্রী। অথবা ডেকে আনতে পারে চলতি জীবনের শুকনো পাতা চাপা গহীন খাদ৷ এই যেমন আমি লিখতে বসেছি, পর্দা টেনে নিজেকে সরিয়ে রেখে ভাবছি পুড়তে পুড়তে একটু স্বস্তি খোঁজার যে চাহিদা আজকের গদ্যটা তার ওপরেই লিখি। যেখানে গহীন কিংবা সামগ্রী-র মতো শব্দ থাকবে না৷ আর গদ্যের মাঝবরাবর হেঁটে যাবে একটি মেয়ে৷ যে কিনা সবুজ পাহাড়ে থাকতে চায় বলে শরীরের নানান অঙ্গে গাছ লাগিয়েছে৷ মেয়েটিকে আমি কতটা চিনি সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা হলো মেয়েটি পাহাড়ের ভেতর লুকিয়ে ফেলছে তার নদীজন্মের ইতিহাস৷ এই নদীজন্ম পেতে সে সমস্ত রঙের নাম বদলে সাদা রেখেছিল। প্রিয় মানুষটির বুকে জ্বালিয়ে দিয়েছিল রঙের মশাল।
এরপর যা কিছু সবই বিজ্ঞানসম্মত৷ প্রতিসরণ মাথায় রেখে পথ পরিবর্তনের সময় আলো নিজের নাম বদলায় না৷ আমরা জানালা কিনে আনি। রংবেরঙের পর্দা ঝুলিয়ে ভাবি সুন্দর! প্রতিবেশীরা সকলেই অফিস যাত্রী। তাই জানালার সাথে বসে থাকার মতো অবসর বলতে পোয়াতি পাখি নতুবা হৈ হৈ করে বেরিয়ে আসা ফুসফুসের বিভ্রান্তি৷ নিজেকে নিয়ে কিছু ভাবছিনা এই মুহুর্তে, একটু আগে যে মেয়েটির কথা বললাম তাকে নিয়েও বিশেষ কিছু বলার নেই৷ কারণ জানালা সে যেমনই হোক না কেন তার সম্পত্তি বলতে একফালি আকাশ, আয়তাকার হাওয়া-বাতাস খুব বেশি হলে এক চোখ দৃষ্টির মাপে না ঘটানো ভুমিকম্প৷ এখানে নিজের থেকেও বেশি দু'অক্ষর বিশিষ্ট একটা আশ্রয়ের যাপন উল্লেখযোগ্য। যার শরীর বলতে স্বরবর্ণের ঘনঘটা সহ পাশাপাশি বসে থাকা একই ব্যঞ্জনবর্ণ। ব্যক্তিগত যাপন হিসেবে আমার হাতে তুলে দিয়েছিল সিগারেটের ধোঁয়া আর নিবিড় জ্বর৷
আশ্রয়ের কথা এটুকুই থাক। ফিরে আসি নদীজন্মে। দিলখুশের অন্যমনস্ক অন্ধকারে আতরমাখা হাত তলপেটে রাখার পরই জন্মেছিল নদী৷ বরফের প্রবাহ সব কিছু ভাসিয়ে কঙ্কালের ওপর তুলে দিচ্ছিল ফিসফিস সংলাপ৷ আমি কি এমনই নদীজন্ম চেয়েছিলাম? নরম দুটো চোখ কপালের ওপর রান্নাবাটির সংসার পাতুক। যা নিয়ে লেখার সময় প্রতিটি গদ্যই হয়ে উঠবে বসন্তের আফিম৷ শব্দের জন্য আমি তখন ডুবুরি হয়ে অতল তুলে আনব। শুরুতেই লিখব কি চাই? খুব করে বলো কি চাইইই।
অসাধারণ
উত্তরমুছুনBhalo
উত্তরমুছুন