অমিত চক্রবর্তী

 


 


মেঘ কিভাবে কথা বলে তার অন্তর্গত বিদ্যুতের সঙ্গে


 

বেড়াতে এসেছ? “এসো ভাই, বোসো ভাই, ভাত বেড়ে দি

খাবে ভাই”, বলে মুচকি হাসে স্মৃতি, এই রান্নাঘরে আমি

আজন্ম কাটিয়েছি, স্মৃতির এই মৌচাকে, ফুল থেকে মধু,

মধু থেকে শিরা, সুরভি … এখন তির মনে হয়,

সময় খুলে ফেলেছে সেই স্বর্গীয় বাক্স না কি সেটা ছিল

একটা লাইফ জ্যাকেট, সিটের নীচ থেকে টানা

একটা স্বপ্নের পুনরাবৃত্তি, কিন্তু আমি তো

কখনও যাই নি এই দ্বীপে, কারা এলো আমার উদ্ধারে এখন …

 

স্মৃতি ঘুরে ফিরে আসে আবার, একটু উসখুশ করে

একটু পায়চারি শেষে ফ্রেশ স্টার্ট, তাজা কুঁড়ির গন্ধ আনে সে

লাইলাক, ল্যাভেন্ডার, এইসব ভুলে যাওয়ায় –

চলে যাবার আগে একটা বেলুন বেঁধে দিয়েছিল

জানলাটায়, পরিহাস না উদ্বেপ সে নিয়ে যখন

মাথা ঘামাচ্ছিল তারা, সেই সব বিদগ্ধ সমালোচকের দল

আমি ঝুঁকি শিহরনে, আমি শুধু ভাবি,

মেঘ কিভাবে কথা বলে তার অন্তর্গত বিদ্যুতের সঙ্গে…




মন্তব্যসমূহ

  1. শুধু অসাধারন বললে দায়সারা বলা হয়---, অমিতের এই লেখা সীমার বাঁধনে অসীমকে স্মরণ করায় যা চিরকালিন~~~সেই অসীমের টানে আমরাও ভেসে চলি~~~~~👌🌹

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. আমি আপ্লুত। প্রাপ্তি আমার। অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই - অমিত

      মুছুন
  2. শিরোনামই এক আস্ত কবিতা! কবিতার শেষতম পংক্তিও এটি। এই ভিন্নার্থবোধক পংক্তি থেকে বিষয়ান্তরে মানসভ্রমণের যে মার্গ সূচিত হয়, তা-ই অমিতদার কবিতা। শুধু কিছু শব্দ দিয়ে তৈরী একটি কাঠামোকেই কবি তাঁর কাঙ্খিত লক্ষ্য মনে করেন না। তাঁর লেখার ধারা অনুধাবন করতে গেলে পাঠককে উপলব্ধি করতে হবে সত্য ও সুন্দরের সাযুজ্য। আর ভাষার আগল খুলে দেওয়ার দূত, কবি ভাবকেই প্রাধান্য দিয়েছেন বরাবর। এখানেও টুনটুনির গল্প-এর স্পর্শ থেকে তাঁর কবিতা মহাকালের অমোঘ অভিমুখে ধাবিত হল এবং এমন এক আশ্চর্য হার্দ্য সংঘাতে মুখোমুখি করালো পাঠ অভিজ্ঞতাকে, যার কোন তুলনা হয়না। সে স্বয়ম্ভূ। দর্শন থেকে বিজ্ঞান থেকে আধ্যাত্মিকতা থেকে সম্পর্কের আসঞ্জনে অবাধ গতায়াত করাতে করাতে কখন যে ঘাট ছেড়ে তরী ভেসে গেছে অসীমের দিকে, বোঝাই যায়না...যখন অনুভব ঘনিয়ে ওঠে, ততক্ষণে অন্দরে এক প্রচন্ড তুলকালামে বোধ হয়, আর একটুও অবশেষ বলে কিছু নেই।

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. কী যে বলি। তুলে রাখলাম মণিকোঠায়। ভালো থেকো ভাই। - অমিত দা

      মুছুন
  3. ভুল হোক বা ঠিক, এক আধটা কবিতা পড়ে মনে হয় সব মায়াবী স্পর্শ, সব ঐন্দ্রজালিক গাঢ়তা, সব অনুভবের গহন অথবা সব অভিব্যক্তির অন্তঃস্পন্দন বুঝিবা একটা লাইনেই সংহত! আর সব বাচনিক অনুপুঙ্খ, বাক শরীরের আর সব সন্নিধি, ব্যঞ্জনার আরসব স্তর পরম্পরা শুধুইবা ঐ কথাটির যোগ্য বিস্তার! "মেঘ কীভাবে কথা বলে তার অন্তর্গত বিদ্যুতের সঙ্গে"----- শুধু এই লাইনটা নিয়েই বুঝি চলে যাওয়া যায় এক নির্জন দ্বীপে! হাতে অনন্ত সময়! আবিষ্কার করার জন্য রইল গোটা পৃথিবী আর সম্পূর্ণ কবিতাটা!----Pallab Ganguly

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. কী যে বলি। আমার বিশাল প্রাপ্তি। এইটুকু শুধু বলতে পারি, স্মৃতির বিদ্যুৎ শুধু জমে যাচ্ছে, জমে যাচ্ছেই আপনাদের শুভকামনা পেয়ে পেয়ে। - অমিত চক্রবর্তী

      মুছুন
  4. প্রথম লাইনটাই মনের আকাশে চমক এনে দিল। বিদ্যুত স্বতস্ফুর্ততার!

    উত্তরমুছুন
  5. চমৎকার লেখা। আপনার নিজস্বতায় ভরা।
    - রাজদীপ ভট্টাচার্য

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোমা দত্ত

সব্যসাচী মজুমদার

সৌম্যজিৎ আচার্য