অরিত্র দ্বিবেদী
অন্ধকারের পর
রাত ৯টা ৪৯।
শেয়ালদা ১৯ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে একটা ট্রেন ছাড়ছে। ফাঁকা; লোক নেই।
কাচের ওপারে যে শহর থাকে, গন্তব্য ততদূরই। প্রতিমাসে একটা গাঢ় রাতে এ
ট্রেন অপেক্ষায় থাকে। মুরাকামির উপন্যাসের হারিয়ে যাওয়া সব লোক এর খবর
রাখে। সে শহরে একটা প্রস্রবণ আছে, তারা মানুষকে ভরিয়ে দেয়, যাতে প্রতি
শীতে তারা একা থাকতে পারে। যাতে আর খোঁজ না চালিয়ে যেতে হয় তাদের। রাত
৯টা ৪৫, অ্যানাউন্সমেন্ট শোনা যায়, "Anyone who falls in love is
searching for the missing pieces of themselves", আজকের রাতটা খুব গাঢ়,
খুব...
পাপা কলিং
ঘুমের
মধ্যে অনুরাগ কাশ্যপের ফিল্মোগ্রাফি জুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আপনি। এ দেশের
সবথেকে ঘুপচি, সবথেকে সাধারণ গলিতে গলিগুলোতে। জামাকাপড় খুলে গেছে গা
থেকে, রাস্তা আটকে পড়ে আছে, একটা বিরাট বাথটাব। সেখানে চান করবেন আপনি।
জুনিয়ার আর্টিস্ট বাবার ডাকে ঘুম ভাঙে আপনার। আপনার জড়বুদ্ধি ভাই আপনার
মায়ের আঙুলবিহীন হাত থেকে কেড়ে, ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছে ময়লা চাঁদ। পিছনে
কোথাও রিল ফুরোনোর শব্দ হয়। আপনি চোখে অন্ধকার দেখেন...
প্রেসিডেন্সীর পাশে কোথাও
পুরোনো
বই খুললেই সেই গন্ধটা আসে। যে গন্ধ ছিল আমাদের শহরের, সহজাত। সেই ধুলোটা
আসে, যা মিশে যেত কবরে কবরে। সেই দৃশ্যগুলো আসে, যেগুলো ঘটেনি অথবা ঘটেছিল
আমাদের নিজস্ব কাতর হত্যাকাণ্ডে! সৃষ্টি ধ্বংসের মুখোমুখি প্রিয়তমা, এসো
চিঠিটা শেষ করি, হাত ধরাধরি করে এগিয়ে যাই, যেদিকে পৃথিবীর শেষ লাইব্রেরী
অপেক্ষায় আছে...
ঘুড়িঘর
প্রাচীন
কলেজবাড়ি। দেওয়ালে হিসেব না মেলা অঙ্কের ধার করা সংখ্যার আঁক। পিছনের
গাছে ঘুড়ি আটকে আছে। পেটকাটি না চাঁদিয়াল? বছর ঘুরে যায়, উড়তে না পারা
ঘুড়িরা একে একে এসে জড়ো হয় গাছের খালি ডালে। সভ্যতা গড়ে ওঠে। অঙ্কের
হিসেব না মেলা ঘুড়ির মালিকেরা রোজ সন্ধ্যায় এক হন। খোঁজ নেন নিজেদের
হারিয়ে যাওয়া ঘুড়ির। বছর ঘুরে যায়, নতুন লোক আসেন দলে। সন্ধ্যের
হাওয়ায় প্রশ্ন ঘুরে ওঠে, 'পেটকাটি না চাঁদিয়াল'? নতুন লোক উত্তর দেন না।
অঙ্ক অসমাপ্ত থেকে যায়...
বেশ ভালো লাগলো 🙏🏻🙏🏻
উত্তরমুছুনBhalo...bhalo
উত্তরমুছুনশমিত মণ্ডল
উত্তরমুছুনকবিতার ভেতরে অনেক না বলা কথা কবিতা হয়ে উঠেছে--- যা গদ্য কবিতার প্রাণ।