বনশ্রী
সোনাঝুরি কন্যে
দূরত্ব পেতে পেতে ভালোবাসা অপার্থিব হয়ে উঠলে হলুদ আলোয় ঝলমল করে ছায়াপথ ৷
নক্ষত্রজন্মের আয়োজনে ঋতুকন্যার শরীর মনের বাঁধ ভাঙে ৷ কোমল নারী হৃদয় ধানের শিষে দোল খায় ৷
—এদেহ অলস মেয়ে
পুরুষের সোহাগ অবশ
চুমে লয় রৌদ্রের রস ৷
হৈমন্তীর নরম তালুতে রিক্ত ঋষির স্পর্শ লাগে ৷ উষ্ণ ঠোঁটের পেলব আলিঙ্গনে ধ্যানমগ্ন পৃথিবী জাগ্রত হয় ৷ শিরা -উপশিরায় , ধমনীতে রক্তরসের তোলপাড় ৷ কানে কানে সে বলে ওঠে
— নারী ,তুমি আমার 'পিপাসার গান'
প্রেমে -কামে ,দেহ - দেহাতীতে, সৃষ্টিতে - তৃপ্তিতে তুমি বইছো নয়নাভিরাম ৷
যে নারীদেহ ভোরের শিশিরজলে মাখামাখি, মোহময়ী চাউনিতে ঝিরঝিরে দেবদারু কাঁপন ;পাতাঝরার শব্দ ভালোবেসে সে কন্যা ঘর বাঁধে পুরুষ বুকে ৷
নির্জন মেয়েবেলায় নক্ষত্রের আলোয় পোড়া পাঁজর ৷ দহনে পুড়ে মন আকাশদীপ হয়ে নির্জনে রাতভর জ্বলতে থাকে ৷বুকের ভিতর কিশোরীর প্রগলভতা লুকিয়ে মৌনকন্যার দুচোখে একাকিত্বের স্তবগান ৷ তবু সেই উদাস চোখের কোণে কোথাও প্রতীক্ষার খিড়কি হাট করে খোলা ৷ নিঃসঙ্গতার খবর মাঠভরা পাকা ধানের শিষের কানে পৌঁছোয় ৷ ৷ কানাকানি কথা ওঠে ফুলেদের উঠোনে ৷
হাওয়ায় উড়ছে অজস্র স্বপ্ন ৷ কুমারী মন নিংড়ে ফল্গু স্রোত বইছে তীব্র বেগে৷ সে যোগী চৌকাঠে এসে দাঁড়ালে , কন্যা সর্মপণ করবে ইহকাল - পরকাল ৷ সুখী মনের জানালায় বসবে হলুদ পাখি ৷ রূপকথার মতো নক্ষত্র ফুটবে কন্যার যুবতী আকাশে ৷ আছড়ে পড়বে রাগ রাগিণী ৷ আলথালু ভোরের প্রথম আলো গুঞ্জা ফুলের উপর পড়লে , গুঞ্জাহার গলায় পড়ে মেয়ে ৷ হাওয়ায় ওড়ে অগোছালো চুল ৷ পরনে হলুদডুরে শাড়ি ৷
উত্তুরে হাওয়ায় ভেসে আসে যোগীবরের ঘ্রাণ ৷রুক্ষ্ম শুষ্ক চন্দ্রমৌলি এসে দাঁড়ায় খালি পায়ে ৷ ঋষিকন্যা দেহমনের সর্মপণের নেশায় তাঁর দিকে ছুটে চলে ৷জাল ছিঁড়ে উড়ে যায় হলুদ প্রজাপতি ৷
সে পথে যাওয়া আছে ,ফেরা নেই ৷ নেই কোনো প্রতিধ্বনি ৷ শব্দবন্ধনীর ফাঁসে আটকে শূন্য ৷ পার্থিব অপার্থিব মেলবন্ধনে প্রেম বিলীন হয় এক অনন্ত মহাশূন্যে ৷
খুব সুন্দর লেখা 👍
উত্তরমুছুনধন্যবাদ
মুছুনখুব সুন্দর লেখাটি পড়লাম। পৃথা চট্টোপাধ্যায়
উত্তরমুছুনআনন্দ পৃথা
উত্তরমুছুন