অমিত চক্রবর্তী
নিজের মস্তিষ্কের আওয়াজ ঢাকতে
নিজের মস্তিষ্কের আওয়াজ ঢাকতে নিরো তখন
বেহালা বাজাচ্ছিলেন, আর আমি সেই ফাঁকে, ক্যামেরা কাঁধে,
রাজপ্রাসাদে ঢুকে পড়ি, আগুনের ছবি তুলতে থাকি।
স্ফুলিঙ্গ থেকে দাবানল, তাদের সবাইকে যেন নিরো
ভায়োলিন সোনাটা শুনিয়েছে, প্রেমের কবিতা
এক ধরণের বিষণ্ণ আফিমবুঁদে সব বা ভাঙনের অবশিষ্ট,
তারপর স্রোত এসে, ধুলো এসে, বড় উচ্চাকাঙ্ক্ষী দামাল তারা
উঁচু সৌধকেও কাছে টেনে নেয়, নিজের করে নেয়।
মস্তিষ্কের আওয়াজ ঢাকতে আমারও এখন হুডি দেওয়া কভার,
কানে হেডফোন, রোডম্যাপ বলতে অস্থিরতা এখানে,
তাই আমাকে দৌড়তে হবে জোরে, আরো আগবাড়িয়ে
আগুন পেরিয়ে, পেছনে থাকুক সেই সর্বাশী আঁচ, চুল্লী হাপর
গলে যাওয়া পিচ রাস্তায়, তরল তাড়ায়
চলে যাব আমি ঠিক, চলে যাব গেট টপকে …
চলে যেতে যেতে একদিন, একবার শুধু আমি চলকে যাব।
তোমার ভাগ্য সুপ্রসন্ন, ধ্বংস হওয়ার জন্যে তুমি রেডি
সে দিনটা হতে পারত একেবারে সাধারণ, কিছু পিছুটান বা
আনুগত্যের বোঝা, কিছু বা আপস, সমঝোতার ভিড়।
এতে ভুল বোঝাবুঝির আশঙ্কা কম, চুরি হয়ে
যাওয়ার অবকাশ নেই। এক উজ্জ্বল পোঁচে কিন্তু
সে আমাকে পৌঁছে দেয় ওই ফজলি গাছটার মুখে,
আহারে, বুকের বন্ধু ছিলে একদিন
ভুল বোঝাবুঝি শেষে উধাও হলে দুজনে
স্মৃতির সিন্দুক থেকে,
এখন এই নাও পুনরায় কিছু অমীমাংসা,
পুনরায় কিছু অপরিসীম কথোপকথন ।
যেন আমারই কোনো ভীরু সংস্করণ, চাপা পড়েছিল ভিড়ে বা
যুদ্ধ শেষের মোহে, সে শহর খুঁড়ে ধ্বংসাবশেষ তোলে।
এত সাবলীল এত চোরা আততায়ী
ক্ষিপ্রতা তার যে বেআইনি মনে হয় আমার
হয়তো ঔৎসুক্য এবার ধ্বংস করে দেবে শরীর, যুদ্ধ যা পারেনি,
তোমার ভাগ্য সুপ্রসন্ন, ধ্বংস হওয়ার জন্যে তুমি রেডি,
সে বলেছিল।
ছাউনিতে লুকোতে হবে স্বাতন্ত্র্যের কেউটে ফণা
একটু অসতর্ক পা ফেলা, একটু নজর ফেরানো
চ্যালেঞ্জ রাউন্ড থেকে, আর তখনই সে এসে দাঁড়ায়
প্রম্পটার বা পাপেট শোয়ের ওস্তাদ,
আমি তো বেয়াড়াপনা করিনি কখনো
অবিশ্বাসীও নই, তবে কেন আমাকে ফের
টেনে নিয়ে যাওয়া, হিঁচড়ে ফেরত
বোকামোর উৎসে,
এ কি ধরণের ব্যান্ডবক্স, অফ করলেও
থামে না, থাবড়ালেও না, জাতশত্রুর মত সেই
স্পর্শ-অনুভূতি রয়ে যায়, গায়ে ছোপ ফেলে দেয়
ন্যাবা হলুদ হীনমন্যতার। কালশিটের দৈন্যে আমি
ভারাতুর এখন, পোড়ো বাড়িতে গোপন
কুপিত ভুজঙ্গ, ছাউনিতে লুকোতে হবে ঠুলিচোখ,
স্বাতন্ত্র্যের কেউটে ফণা।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন