আশুতোষ বিশ্বাস
উত্তরাধিকার
চান করতে গিয়ে আব্দুল কাদিরের মুখ ভেসে ওঠে বালতির জলে
জলে হাত ডুবিয়ে মগ তুলে নিতে জল উঠে আসে হাতে— সেই জল কোথায় ঢালি
মাথায় না পায়ে? কোন পায়ে সবার আগে জল ঢালতে হয়?
কোনও একদিন কাদির আমাকে বলে দিয়েছিল
খাবার খেতে বসে মায়ের পেতে দেওয়া বিবর্ণ আসন— মনের ছবিঘরে
চলকে পড়ে, এখনও শুনতে পাই— ‘ভাত বাড়ছি খোকা তাড়াতাড়ি আয়’
এখন খাবার টেবিলে বসে মুঠো মুঠো অপরাধ গোগ্রাসে গিলি
ভাত মাখাতে গেলে অমিতাভদার কুশলী আঙুলগুলো
আমার মাখানো ভাতের দলার চারিদিকে ঘোরাফেরা করে
ভাতকে অসম্মান করতে নেই — সবাই এই ভাতের সওদাগর
ভাতের থালার পাশে জলের গ্লাস— কোন হাতে ধরে পান করব
আমার শৈশবের সুধীরকাকু এখনও বলে দেন
মঞ্চে দাঁড়িয়ে কিছু বলতে গেলে প্রিয় মাস্টারমশাই— সুমিতবাবুর মুখ
মঞ্চের ক্যানভাসে ভেসে ওঠে— আমি সেই মুখ তর্জমা করি
কী বলি আমি জানি না, কুয়াশার ওপার থেকে মুহুর্মুহু হাত স্পন্দিত হতে থাকে
অনুকরণ ছাড়া আজ পর্যন্ত আমি কিছুই রপ্ত করতে পারিনি
কাদির, অমিতাভদা, সুধীরকাকু, সুমিতবাবু
সবাই আমাকে ভালোবাসত— ভালোবাসে এখনও আমার কাছে আসে
কানে কানে বলেন— ‘ঠিকই বলেছ, একদম ঠিক আছে, সব ঠিক ঠাক’
আমিও তুমি হতে পারিনি
ক্ষিদের উনুন
ক্ষিদের উনুন পেতে বসেছে এলোকেশী
উনুনের চারপাশে শুকোনো হাত পা
জলভরা আষাঢ়ের মেঘ, আচারের বয়ামের আড়ালে
লুকোচুরি খেলে রোদ
জন্মের প্রলম্বিত ছায়াপথ জুড়ে
করোটির ঘুঁটে পোড়ে, নাভিপদ্ম হাসে
উনুনের ভেজাকাঠ, পালে লাগে অশ্রুসেঁচা শোক
ক্ষিদের উনুন পেতে বসেছে কালভদ্র— রচেছ অমৃতলোক
চমৎকার লেখা দুটি 🙏🏻🙏🏻
উত্তরমুছুনভালোলেখা
উত্তরমুছুনকরোটির ঘুঁটে..... দারুণ
উত্তরমুছুন