কৌশিক সেন
হে মধুসূদন!
স্তব্ধ নকুর ছন্দপতন জানে
বিষ্ঠায় ভরা নব্য আঁতুড়ঘর
মেঘ ভেসে যায় ধীবরীর সন্ধানে
রাতুলচরণ এখনও কি তৎপর!
কালাজ্বর ভাঙে সধবার অঞ্চলে
সোহাগসিঁদুরে পাষাণীদেশের নাম
মধুডিঙা শুধু হাওয়াতে এগিয়ে চলে
সামুহিক ক্ষেদে মাথা তোলে বদনাম।
শতনাম জানে বুড়ি হরিমতিদাসী
বাঁশপাতা উড়ে ঢেকে যায় শিবালিক
পতনোন্মুখ পৃষ্ঠারা বানভাসি
শেষ সপ্তকে জেগে ওঠে বল্মিক।
প্লুতভাণ জানে কামনালব্ধ ফল
প্রতি ঢেউ পরে বেদনা রূপান্তর
বৃদ্ধা অটবি ছেড়ে রাখে বল্কল
বাঁশরিবাহিত তামাদি তেপান্তর।
রুপোলী দৃশ্যে গৃহদেবতার বাড়ি
বিশ্বাসে মেলে জেলেডিঙিবন্দর,
রোদের ঝলাসে পুড়ে যায় নাভিনাড়ি
পুরাকাল জুড়ে অর্শ ভগন্দর!
ঋতু অঘ্রাণে নাথুলাপাসের ঘটা
টিপয়ের খোলে কবিতার সমকাল
হে মধুসূদন, মুখে ফেলো রোদছটা
চেটে খেয়ে নাও পাতকের কঙ্কাল।
কিরাতের যুগ বেঁধে রাখে কালনেমি
করাতে কুঠারে কামনালব্ধ ভুল
প্রকরণে সব দানবই প্রকৃতিপ্রেমী
অচলায়তন সরে বুঝি একচুল!
সম্বিৎ ফেরে, ফিরে আসে রামধনু
ছেঁড়া হরধনু একা মিথিলার ঘরে
নাগিনীর প্যাঁচে জড়িয়েছে ক্ষীণতনু
জ্যোৎস্নার সাথে যদিও অ্যাসিড ঝরে।
কামনা ফুরায়, ওগো সুবচনী গান
শ্যামল স্পর্শে ক্লান্তি ঝরাও মোহে
কুয়াশার বুকে কিছু নেই সমাধান
নবনিকুঞ্জ দুলে ওঠে অবরোহে।
ধ্বনিত বিবেক আজও যদি জাগরূক
মহাপ্রাণ যদি অবলুপ্তির পথে
মিতবাক শিশু চেপে ধরে কিংশুক
লাফ দিয়ে ওঠে অমোঘ পুষ্পরথে।
নাটমন্দিরে রূপকথা লেখা বুঝি
নিত্যপূজায় আমজনতার ঢল,
অবতার খোঁজে লুকোবার গলিঘুঁজি
ভক্তর চোখে সরোবরও অবতল।
রতিহুঙ্কারে লুপ্ত হয়েছে ডিঙা
মেঘলা দ্বাপরে জিভঝোলা পরাশর
ফুঁক দিয়ে যদি বেজে ওঠে রণশিঙা
ধাত্রী হবে কি বেদনার চরাচর!
বৈদিক ঋষি ঢলে পড়ে দক্ষিণে
গুপ্ত সোহাগ লিখে রাখে তাল গুনে
শ্রীমধুসূদন, হাওয়া কি রেখেছ চিনে
পাতা ঝরবার তামসিক ফাল্গুনে!
উড়ে উড়ে গেছে গীতাপদগুলি যত
কান্না লুকাই আজও রবীন্দ্রগানে
বেওয়ারিশ লাশ! আহা, থাক অক্ষত
বাকি যত ক্ষোভ ধুয়ে যাক ধারাস্নানে।
যদি অবতার, কথা বলো সখা তুমি
ঋণের সুবাদে ক্ষুধা যদি বরণীয়,
সে প্লাবনে যদি ভাসায় জন্মভূমি
আসবেতো তুমি, স্পর্শ করবে প্রিয়!!
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন