পোস্টগুলি

মার্চ, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

সম্পাদকীয়

ছবি
  বাতিঘর অনলাইন হৈমন্তিক সংখ্যা কোনো কোনো জানালার নাম একাকীত্ব। কোনো কোনো নদীর নাম বিষণ্নতা। সেইসব জানালায়, নদীতে যখন হেমন্তের রোদ এসে পড়ে, মায়া জাগে। হলুদ পালকের স্পর্শ গায়ে মেখে জেগে ওঠে শব্দেরা। বান ডাকে। হাতে হাত ধরে হেঁটে চলে গুরু ও লঘু ভাবাবেগ। আমাদের দেখা হয়ে যায় ডিজিটাল পেজে, বইয়ের আড্ডায়। আলাপের শুরু আছে, শেষ নেই। স্মৃতির দোঁয়াশে কে যেন বুনে যায় ধানবীজ। কবিতার ঘরবাড়ি গড়ে ওঠে। দেয়াল জুড়ে গদ্যের মুক্ত ভাস্কর্য। অনুবাদ কবিতা ঠোঁটে নিয়ে উড়ে আসছে অ্যালবাট্রস। ওর লিপ্তপদ ছুঁয়ে যায় কবেকার জলজন্ম। নীল ভ্রমণের স্বরলিপি লিখে রেখে যায় রাতের শিশির। বাতিঘরে জাহাজ ভেড়ে। শূন্যের দিকে উড়ে যায় অটাম সিনড্রোম। আচমকাই ধেয়ে আসে শীতের বাতাস, ঝরে পড়ে কামনাফুল। আমরা এসে দাঁড়াই বাতিঘরের ভার্চুয়াল বারান্দায়। খাতাভর্তি মনখারাপ নিমেষে অনাবৃত, ভিজে যায় মরশুমি উচ্ছ্বাসে। হেমন্ত চলে গেছে কবে অথবা গিয়েও যায়নি। আজও কোনো কোনো আড্ডার নাম ওয়েবিনার। কোনো কোনো ঝর্ণার নাম অপ্রকাশিত কবিতা … একসাথে জেগে ওঠো, জাগাও একসাথে নিভে যাও, নেভাও একসাথে একা একা কবিতামন্থন।  

অজিতেশ নাগ

ছবি
    আগুনপথে একমাত্র আগুন যা পারে পুড়িয়ে দিতে সব আত্মসম্মান, একমাত্র আগুন যে এনে দিতে পারে সেই নির্মম চাহিদা, যে চাহিদা এখন শবের অস্তিত্ব নিয়ে স্বপ্নপূরনে ব্যর্থ কোন অলীক দ্বীপে বাস করে সেই স্বপ্নের প্রেমিকা, একমাত্র আগুন পারে মধ্যের সব জলটুকু শুষে নিতে। আমাকে সেই আগুন নিতে দাও, দগ্ধ হতে দেখি সীমাহীন যতিচিহ্নটুকু, বিরামহীন প্রদোষ যেন একটি একটি আগুনের বিন্দু। এক অনন্তযাত্রীবাহী নৌকা ভিড়েছে ঘাটে, আমি উঠে যাব রাত শেষ হবার আগেই, ঊষাকাল শ্মশান হয়ে আছে এখনো ধিকিধিকি, নিঃশব্দ পথটা হারাতে দিলো না আমায়, তাই আগুন দাও প্রিয়া, আমি মাঝের সামান্য পথটুকু পেরোতে চাই।  

মীরা মুখোপাধ্যায়

ছবি
    হেমন্তের লেখারা এসেছে " Season of mists and mellow fruitfulness....."                               John Keats রাতের শিশির পড়ে পিছল হয়েছে পথটুকু টাঁড়ে কোন ফসল ফলে না, শুধু রুক্ষ শীত খানিকটা আগে থেকে বাড়িয়ে দিয়েছে তার জোব্বা শুদ্ধু রোগা হাতখানা....... এবছরও তাহলে থেকে গেলাম ! এবারও নামাতে হবে কীটদষ্ট কালো শাল অবসলিট হয়ে যাওয়া হাতে বোনা ছেঁড়া সোয়েটার। কীটস জীবনকে ভালোবাসতেন, ওটুকু বয়সে ভালোবাসা ছাড়া কীই বা থাকে.... তাই ওই " mellow fruitfulness...." আমি হাঁটছি মৃত্যু উপত্যকার দিকে,আর সেখানেই অসম্ভব মরবিড হেমন্তের লেখারা এসেছে  

সব্যসাচী মজুমদার

ছবি
   মজার ব্যাপার মজার ব্যাপার - শব্দ করেই আসছিল সে দেখছিলামও কিন্তু, আমার সরার কোনও বিকল্প নেই মাথার ওপর দুলছে পরজীবীর ছায়া বাতাস বহে চতুর্কোণেই বাতাস ভরা অল্প নদী         নদীর পারে ধর্মপিতা মাছ ধরেছে     দুর্গাপাখি ডাকছিল কী! শব্দ করেই আসছিল সে দেখছিলামও … কিন্তু, আমার সরার কোনও বিকল্প নেই…     এটাই স্বতঃসিদ্ধ না তো!  

নিলয় নন্দী

ছবি
    একটি হেমন্তের কবিতা  একটিমাত্র হেমন্তের কবিতা লিখেছি এযাবৎ টক কমলালেবুর খোসা ছাড়াতে ছাড়াতে শিশিরে ডুবিয়েছি নির্বিষ ফণা, তারপর প্রত্যাশার চেয়েও অনেক দ্রুত দৌড়ে গিয়েছি হলুদ শাড়ির দিকে, মগ্নপাঠ বিকেলের দিকেও ঘরের সমস্ত দরজা খোলা রেখে আমি হেমন্তের মাঠে উপুড় হয়ে শুই, পিঠে পদ্মপাতা অথৈ জল নখের দাগে কামসূত্র, এলে তুমি? অপেক্ষা অনন্ত হোক বা ক্ষণজন্মা, শীত আসে অঘ্রাণ তলিয়ে যায় হিমাঙ্কে.. সেই একটিই হেমন্তের কবিতা লিখেছি এযাবৎ বাকি সবই তো বর্ষা, বসন্ত বা তোমার কবিতা।  

দেবাশিস ঘোষ

ছবি
    রিষড়ার এক রাত মেলা ফেরত জ্যোৎস্নার ঢেলায় সাবধানী পা ফেলে আমরা হাঁটছিলাম। অপেক্ষায় মা চতুর্পাশ উন্মুক্ত, সাদা, আবছাটে ঘরবাড়ি, গাছপালা আমাদের কথা ছিল আগামীর দিনগুলি আমাদের সঙ্গে হেঁটে চলছিল নীরব চাঁদ আর তার যাবতীয় ছলাকলা দু'পায়ে বিছিয়ে থাকা ঢেলার রুক্ষতা পেরিয়ে মাটির এক পথ গাছের বিশ্রাম এসে ছুঁয়ে দেয় আমাদের দু'জোড়া পা কিশোরী রাত্রি সবে যুবতীর দিকে তখনও দূরের থেকে ভেসে আসা কবিগান উদোম জমিতে শীত আঁকড়ে আছে ফসলের স্মৃতি আমাদের কথাগুলো ভবিষ্যতমুখী আমাদের হেঁটে চলা দিগন্তের দিকে সেসব জ্যোৎস্নাগুলো গুটিয়ে নিয়েছে চাঁদ সেসব কথারা কবে শুকিয়ে গিয়েছে তবু দূর থেকে কবিগান বয়ে আনে হাওয়া  

চিরন্তন সরকার

ছবি
   অধিবেশন নদী। সংক্রান্ত স্রোতের নীচে কামানগর্জনের গম্ভীর শব্দ হয়। ভাষা। সংক্রান্ত অক্ষরে প্রাক-লেখ‍্য সময় স্মৃতি হয়ে ফোটে। ঘুড়ি। সংক্রান্ত ধর্মদন্ডে শকুন মুহূর্তকাল পাখা মুড়ে বসে। জুতো। সংক্রান্ত গর্তে মাকড়েরা মুখে মুখে গোপন বার্তা বোনে। ক্ষেত। সংক্রান্ত আলের ধারে চাষা আনমনে বিড়ি ধরায়। ট্রাক। সংক্রান্ত খাকি বুট হেমন্তে পিষে দেয় লাল চিনারপাতার স্তূপ। ছাদ। সংক্রান্ত কোণে অপঘাতে মৃত বধূ ফের এসে দাঁড়িয়েছে। ব্রেক। সংক্রান্ত চাকা সিকিমের খাদে গড়াতে গড়াতে নামে। দাঁত। সংক্রান্ত কামড়ে ফল চিরে গিয়ে নিমেষে দু-খন্ড হয়। চার্চ। সংক্রান্ত কবর-জঙ্গলে হাওয়া তোলে ম্যাক্লাক্সিগঞ্জ। বোমা। সংক্রান্ত হাত উড়ে এসে ন্যায়বিচারের কক্ষে পড়ে। মেঝে। সংক্রান্ত আলোর টুকরো খলসে মাছের মতো নড়ে। হাট। সংক্রান্ত চালসায় ওরা কুকরি দিয়ে পশুর হাড় কাটে। ঝরনা। সংক্রান্ত পাথরে শীতের হাওয়া তীক্ষ্ণ আঁচড় বসায়। গলি। সংক্রান্ত বাড়িরা নিভৃত বিকেলে একে অন্যের দিকে ঝোঁকে। নেতা। সংক্রান্ত কপ্টার দুর্গতদের জন্য শুভেচ্ছা পাঠায়। হাতি। সংক্রান্ত মাহুত বীরসা ভগবান সেজে এই জঙ্গলকে জাগায়। টিলা। সংক্রান্ত ধ...

মেঘনা চট্টোপাধ্যায়

ছবি
   ফেরা আমারই ভদ্রাসন; তবু তার ছায়াবৃত্ত থেকে পালিয়ে বেড়াই। আচমকা অন্যমনে সামনে এসে দাঁড়াই যদিও; নতমুখে সরে যাই অপরাধে ক্ষয়ে। আমারই ভদ্রাসন, তবু তার পরিত্যক্ত সিঁড়ি, বাদামী পাতার স্তুপ, ঝাঁট দিয়ে নিকিয়ে রেখেছে কেউ। ভাঙা দেউলের বুকে সন্ধ্যাপ্রদীপ, শুকনো তুলসীর মূলে জল, পাখিদের দানাপানি - এখনো জোগায় কারা! অতৃপ্ত ঘুমের মধ্যে সেসব অপার্থিব হাত ছুঁয়ে যায় ঋণগ্রস্ত কাঁধ। ঘাম, রক্ত, অশ্রু আর হৃদয়ের মধুতে ডোবানো অক্ষরমালা দিয়ে সব ঋণ শোধ করে দেবো একদিন। বেড়ার এপাশে এসে দাঁড়িয়েছি সামান্য কলম আর দেবোত্তর শব্দ 'কটা নিয়ে।  

প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায়

ছবি
   হাহাস্বর বেলা পড়ে এলে কাঞ্চন শিমুলেও লাগে ঝরার আকুতি কোথাও বাজে বুঝি বেলাশেষের গান সূর্যাস্তের ছায়া মেখে মাঠ ফেরে ঘরে : তোমার চোখেও নেভে দুরন্ত দুপুর ভাঙা হাটের পসরা নিয়ে তোমার চলাচল রঙের আবির যেন কবে মুছে গেছে দু চোখের উঠোনে আর জাগে না রাতচরা পাখি কথা নেই ঢেউ আর বিজন বালুচর- আমারও পথে আজ নিঝুম স্টেশন নিরালা মেখে আছে ভ্রমণের পথ বৃক্ষের শাখায় শাখায় রঙ ঝরে গেছে দূরেও আঁকে না ছবি রাতুল চরণ: বাঁশিহারা দিনগুলো ভুলে গেছে সেই হাহাকার কোথাও কিছু পাবার ছিল বুঝি কোথাও যাবার-  

দেবার্ঘ সেন

ছবি
   খাদ পথ ধরে উঠতে উঠতে পথ বেঁকে যায়, ফলত পথের সমান্তরালে জন্মে ওঠে খাদ। এখানে পাইন বন দাঁড়িয়ে থেকে আরোগ্য দেয় মরু-হৃদয়ের একঘেয়েমি অসুখ, এখানে তুমি আমাকে পাবে পথের ধারে মিলিচ। মেঘ ভেঙে হাঁটতে হাঁটতে ভুলেই যাবে বাড়তি রঙের চমক। বড় একা লাগার মাঝে যখন ফোনে হঠাৎ ধরবে নেটওয়ার্ক, আর বেজে উঠবে ফোন, তখন তোমার খেয়াল চুরি করে হাত ধরবো আমি, পাশ দিয়ে দুটো নেপালি মেয়ে যাবে, ওরা তোমায় ভুল বোঝাবে রডোডেনড্রন বলে...  

সোনালী ঘোষ

ছবি
   একটি কবিতা কিছু বাঁশি বাজে বুকে                        খাঁখাঁর ভিতর, কার যেন বুনে গেছে পরবাস। ঋতু আসে মায়া নিয়ে;                        তাতে কী? তছরুপ লিখেছি যে, হলদে পাতার মত... ইছামতি বাড়ি ছিল যার বলেছিল, আলতো ডাকব খুব তখন কামরাঙা নদী আর চৈচৈ হাঁস..  

অভিজিৎ দাস কর্মকার

ছবি
   প্রতারক এবার গান্ধার রাজাকে জিজ্ঞেস করি, কখনো মহাক্ষণে সম্মুখীন হয়েছ? কখনো শাশ্বতের অর্বাচীন! পার্থিব আলোকে মায়ার প্রপাত? গান্ধার রাজা ক্যাবলার মতো তাকিয়েছে আমার দিকে। আমি বোদ্ধা? আমি জ্ঞানী? আমি ত্রিভঙ্গ? কী আমি? আমি তো মাথুর বিরহে কবিতা লিখি, জলছাঁকা ভাত, ডাল আর ছাতু মেখে খাই।   হাস্যমুখে আমার শহরে আসোনি কখনো?  ঘুমিয়ে আছে ইউক্যালিপ্টাস। দণ্ডকারণ্যের মতো ছড়িয়ে বিভ্রম দেখে যাও অনন্ত শেকড়, কতো অনাহুত পুড়ে যায় রোজ। মাঠ, শস্য, বকবকে রাজনীতি, যতুগৃহ,                                                                  পুড়ছে আর পুড়ছে। এই চিতায় সবাই আত্মজন তীব্র লেলিহান সরিয়ে দেখেছি; সবাই ঈশ্বর। হে শকুনি মাতুল, ত্রিফলা ভিজিয়েছি, যদিও সবই পৌরবাতির মতো ঠাঁই একা শোনো, ভোরবেলা কাক ডাকে, আমার শহরে কোকিল আসে না, এ শহর প্রতারক অ্যালাও করে না... ...

রাখী সরদার

ছবি
    কোয়েল নদীর কাছে সমস্ত পাথর সরিয়ে আমাদের কোয়েল নদীর কাছে                      যাওয়ার কথা ছিল কথা ছিল নীল মৎসপ্রদেশে ভাসাব আমাদের                                আনন্দসঙ্গম সবুজ পঙক্তির ভেতর কিংবা বুনোচাঁদের আলোয় লিখে রাখব            আমাদের যাবতীয় স্নানদৃশ‍্য শুধু ভেবে ভেবে দিনরাত্রির ঢের গল্প শেষ এখন যা-কিছু সমাপ্তি আয়োজনে ফুঁপিয়ে উঠছে আমাদের                         অলৌকিক দূরত্ব।    

অনিরুদ্ধ সুব্রত

ছবি
    সু-সম্পাদকীয় পূর্ববর্তী সংখ্যা গুলির ছাপা-কালির তারল্য পুরনো ছাপ-মেশিনের ক্ষয় ধরা হাইড্রোলিক সর্বত্র একটু একটু নববিধি--- করেছি স্মরণ। যেমন, প্রুফ-রীডার বৃদ্ধ-বিমল চশমায় সুতো তেমনই, ধুয়ে ধুয়ে, মুছে মুছে ধাতবের হরফ আর যা সব সঞ্চিত ভেঙে--- ম্যাপলিত-মহল। সু-কথা লিখেছে সুধন্য জগতের জ্যোতির্বলয় অধুনা ব্যকরণ, অতি দূরূহের দর্প, দগ্ধ, দর্শন। ছেপে ভাঁজ করে, ফরমায়েশি-ফর্ম, দুটি ফর্মায় রেখে, সুবর্ণ-মলাটের ল্যামিনেট অছিলা সমুদ্র বড়োই নতুন সংখ্যা,সিকি আধুলি ছেড়ে মুদ্রায়। ঘৃত, চন্দন, মদ্য, বাতাসা ও চকলেট পাতা ভরা এ সংস্করণ সুতীক্ষ্ণ, শুধু নীলাভ অক্ষরে ছাপা।  

সৃশর্মিষ্ঠা

ছবি
   আমন সন্ধে   গঞ্জে গঞ্জে নবান্ন কাল আবোলতাবোল সন্তান গেছে চুরি পড়ে আছে হলুদ বৃদ্ধবৃদ্ধা পৃথিবীর রঙিন বলতে আমার লেফটিস্ট হৃদয় আর কয়েক দানা শিশির এর ওর গায়ে তাদের বুকে জেগে আছে ছিপছিপে আকাশ ক্যান্দনবালার মনে জৈন রাত সান্ধ্যমুনি মৌন তার নাভির উপরে সন্দেহের পাহারায় নানক চাঁদ  

সমর সুর

ছবি
  সেমি রবীন্দ্রনাথ শীতকাল না এলে সুপর্ণা আসবে না? অতএব শীতকাল মেনে নিয়েছি কাঁশির সিরাপে ফুসফুস রেখে। এবার সেলিকলের বিজ্ঞাপনটা দয়া করে তুলে নিন পরমহংসের মাথার উপর থেকে। পন্ডসের বিজ্ঞাপনে তোমাকে না দেখলে আমার অসুখ বেড়ে যায় সব কি খুলে বলা সম্ভম ? রাতের পোশাক এভাবে মেলে দিও না ব্যালকনিতে এখন আর রাত জাগতে পারি না ভোরে উঠে দাড়ি কামানো ভীষণ কষ্টদায়ক বলে সেমি রবীন্দ্রনাথ হয়ে উঠেছি চোরা পথে কাশির সিরাপ চলে যায় সীমানার ওপারে।  

প্রদীপ গঙ্গোপাধ্যায়

ছবি
   শিশির ঋতুর আঙুল এবার তুমি তোমার করে নাও গাছ হয়ে যাও জড়িয়ে ধরে তুমি পাতা যেমন পোশাক টেনে বাঁচে ফেনায় ফেনায় শিশির হয়ে একা... খুঁড়িয়ে বেঁকে দুমড়ে মুচড়ে ভেঙে বিদায়ী কোনও জ্যোতির্বলয় যেন কূলের জলে পায়ের দাগ আঁকা চোখের পাতায় স্তব্ধ বুড়ো আঙুল... সকল বিষাদ টের পেয়েছে দুয়ার ঋতু গলে যায় প্রোটোজোয়ার মতো আবহ যখন পা ধুয়ে দেয় শুধু স্বল্প আয়ুর গাছ হয়ে যেও তুমি...  

শাশ্বতী চ্যাটার্জী

ছবি
    পাড়া জুড়োলো একটি অপ্রচলিত দুঃখের সঙ্গে আঁতাত করতে গিয়ে কল্পতরু হয়ে গেছি। অথবা রাবার গাছ। ডালভাঙা আঠা দিয়ে মনোহারী খেলনানগরী। পরিবেশবান্ধব। নাহলে সর্বভূক অতিকায় জেলিফিশ। পেট চিরলে মাথার মণি, পাশে ডুবুরীর ছেঁড়া অন্তর্বাস, চিবোনো মাস্তুল। বহুদিনের বিশ্বস্ত ফলকাটা ছুরির মতো নেতিয়ে নিচ্ছি চরিত্রের জের, জাঁহাপনা! ব্রহ্মাণ্ড গলাধঃ করে চোরামুখে বসে আছি সন্তানের গবাদিশালায়। জাবনার সুস্বাদ সয়ে নিচ্ছে পতঙ্গাদি দোষ। সাঁজালের কেরামতি মুড়োতে পারছে না দৈবাদি রহস্য আবাদ। পণ্ডিতের আস্তিনে ঘুমোয় দক্ষিণার আধুলি মোহর। মধ্যদিন পার হয়। স্নানহীন রুগ্ন সন্তাপ। ছেঁড়া কাঁথায় ফুঁড়ে তুলছি হৃদয়কমল। পাংশু ধুলো ধুয়ে মুছে চুল্লীতে চাপাচ্ছি অকষ্ট ব্যঞ্জন। যদি এসে গা এলায়, মুখে দেয় ক্ষ্যামাঘেন্না ক'রে! দেহাদি পাপের বলে কল্পবৃক্ষ হয়ে গেছি সঙ্কটে সম্পদে। করজোড়ে দু'তরফে হেঁটে চলে শিশুরা আমার। প্রবাসের ঋতু এসে সাজঘর পর করে দিলো। খোলা ভূমে ত্যানা কেচে মেলে দেওয়া অনার্দ্র লোভের দুপুর। পরনের নীচে যত সততার অপরাধ পুঁটুলি, খুঁজে পেতে উপুড় হচ্ছে কুলো পিঠ চড়া রোদ্দুরে। পল্লবহীন দৃষ্টির মতো ভৌত...

নিমাই জানা

ছবি
   একটি অমরাবতী ও কিছু ধ্বংসাত্মক দানবদের জেব্রা ক্রসিং একটা অমরাবতী , টেন এমএল কর্টিকোস্টেরোয়েড স্রোতবাহী গঙ্গোত্রীর বরফ গলা নদীর মতো জমাট শিরাতন্ত্র রক্তের উৎক্ষিপ্ত দলা , আগ্নেয়পিণ্ড ছিটকে বেরিয়ে আসে আইসিইউ কেবিনের দরজা ভেঙে বেরিয়ে যাচ্ছে মহাশূন্যের যৌন ও জড়জগতের লাল নিশাচর সুড়ঙ্গ ভেদ করে , পৃথিবীর সব অপার্থিব বাবাদের হত্যা করবো আমি লাল নগ্ন নর্তকদের বেশে কুলকুণ্ডলীদের মতো আদিম পাতাল , উঠে আসে পিপাসার্ত ধ্বনির থেকেও আরো আরো সুক্ষ্মতম মা , যারা প্রতিটি যৌগের বীভৎস মুদ্রাযোগ জানে , শাঁখ বাজিয়ে মৃত দানবদের জন্য শেষ রাতের সানাই বাজাবে কেউ , ভেজা কাপড় মিলবে রাতের মতো সংক্রামিত লোমশ কোন নারকেল দড়িতে  , কাছাকাছি কাঁচা কাঠের উচ্ছিষ্ট পড়ে থাকবে ,  ছড়িয়ে থাকবে শুকনো খড়ের সরু আঙ্গুল , আর্তনাদ , কান্নার অবশেষ , ছাইয়ের লাল কৌটো,  আগুনের স্কেলিটন ভাঙচুর , শিশু কন্যা চুমু খাবে মৃত পিতার কপালে , জিরাফটি জেব্রা ক্রসিং ওভার পেরিয়ে যাবে না কোনদিন সাদা জবার হাঁ মুখে আমি তরল ছাই গুলো দিয়ে একা একাই নিজের সংকল্পিত ট্রাইসাইক্লিক মাথার ভেতরে মস্তিষ্কের আগ্নেয়গিরি জ্ব...

বিশ্বজিৎ বাউনা

ছবি
  হেমন্তের বার্তা বস্তুত এই বাতাসের নীচে জেগে হিমেল স্বর, এখনও পাতার শরীরে বিকেলেরা আঁকে বাড়ি। প্রাপ্তির মতো ঠাঁই, তোমাকেই ভালবেসে উর্বর। ভাটিয়ালি সখ্যে মন জুড়ে আকাশ আজ পাহাড়ী। লালিত ধান-শূন্য মাঠে সেই প্রাক্তন ইঁদুরেরা... আজ দানার গভীরে খিদে রেখে উগরায় ভয়। তোমাকে বলিনি হৃদয়ের ক্ষত নিজে কত চেরা-- বিনা ঔষধি ধ্যানে খোঁজে নিরাময়, ভুল প্রত্যয়। এখানে লাঙলের অভিমান ক্ষয়ে ক্ষয়ে নীরব, কৃষকের স্বপ্নের নীচে পাখি নেতিয়ে হাহাকার। ঝরাপাতায় ভেসে ওঠে আলুলায়িত হিম স্তব, পানকৌড়ি-ভেজা জলে লঘু হয় সে রোদের ক্ষার। ক্ষয়জনিত পৃথিবীতে কারা লুকায় কেলেঙ্কারি? সেই বার্তা দিতে হেমন্তের পোস্টম্যান হতে পারি!  

পৌলমী ভট্টাচার্য

ছবি
 মোহনার কোল মায়ের একরত্তি নিমকাঠ বাহবা দেব ব'লে নদীর কাছে গিয়েও শুকনো হোলাম। মায়ের ডালের বাটি যেন উধাও হওয়া নদী। স্রোত ভাঙছে, আছড়ে বলছে- ফোঁড়ন গুণতে পারবি পুরোনো আঙুল মেপে ? বুঝতে বুঝতে সম্পৃক্ত পাপশালার আঁধার হয়েছে অজুহাত ... ; তবু ডালের বাটিকে বহমান স্রোত ভাবতে গিয়ে সাঁড়াশি আর আই.সি.ইউ -এর  টারমিনোলজির মধ্যে যোগাযোগহীন করল মগজ। হয়তো একদিন মোহনার কোল হবে মায়ের একরত্তি নিমকাঠ... হয়তো নিটোল দুর্ঘটনা ব'লে চুলকাটা পথ হারাবে এলোমেলো খোঁপা ছেড়ে... ঠিক যেন সাবেকিয়ানা ঘূর্ণী । জানি , আলুথালু ভূগোল পেরোনো হৃদবায়ু প্যাপিরাস ভুলেছে নিক্তি ভাঙতে ভাঙতে অথচ ভৌগোলিক সমারোহে কেউ সৎকার করবে না আমার প্রচ্ছন্ন আলতা যাপন ।    

মোহনা মজুমদার

ছবি
   হে সংক্রমণ   উৎসারণ চাইনি আমি । আরও একা হবো বলে দাঁড়িয়ে আছি । তোমার ঘৃণার ভেতর চুপ করে বসে আছি , জ্বরের মত আচ্ছন্ন । এত অন্ধকার , কিছুতেই উড়তে পারছিনা, পেরোতে পারছি না এই সংক্রমণ । গন্ধ লেগে আছে নির্জলা । আমায় ভুলে যেতে যেতে যে পথ তোমায় আবার আমার কাছে ফিরিয়ে আনে , তাকে তুমি আলিঙ্গন করো । খাঁচাটির কলিজায় যে আলো তুমি বন্দী করে রেখেছো এতকাল ,তাকে বুঝিয়ে দাও , এই আত্মহত্যা আসলে নিজেকে ভুলিয়ে রাখার ছুতো মাত্র । যা পেরোনো হয়নি, ভুল হয়ে রয়ে গেছে সেতুর মত । শান্ত , অবরুদ্ধ । চুপ থাকার মতো শীতল সংশ্রবে মাথা ভারী হয়ে আসে । ঘুম জড়ায় ভ্রমে। স্বপ্নে যাকে তুমি দেবী ভাবো, সে আসলে কামিনী। একটা একটা করে নৈবেদ্য খুলে , এবার ব্যাথা ভরবে সে । আর তুমি ? খাদের ভেতর আলো জ্বালাতে জ্বালাতে এগিয়ে যাবে অশ্রু গ্রন্থির দিকে । আঃ কী চমৎকার অসহায় সে দৃশ্য !  

লিটন শব্দকর

ছবি
    হেমন্তের আঁচড়ে   চোখের নীচে সীমারেখা জিইয়ে রেখে তৃষ্ণার্তের জিভে এলাচের স্বাদ নির্বিকার শ্যামাপোকা স্বপ্নের নখদাগ কেটে যায়                                    উদভ্রান্তের বুকে     এইমাত্র লতার শরীর বেয়ে     চৌকাঠ পেরিয়েছে নদী শব্দের অপেক্ষার পুরনো অভ্যাস পাঁপড়ি খুলে ভোর আঁকে হেমন্তের ডানায়  

বাবলু সরকার

ছবি
   প্রেম-২ আমি কোন গাছ রমণীর কাছে আমার প্রেম ভিক্ষা রাখিনি আমি এক আত্মনিগ্রহকারী পুরুষ নিজের বুক চিরে খুবলে নিই একতাল মাংস ঢেলে নিই কয়েকশো ফোঁটা রক্ত তারপর নির্মাণ করি কোন গাছকে আমার প্রেম আমার ঈশ্বর মানবীকে তাকে নিবেদন করি রতিজ প্রেম ক্লেদজ ভাষা  

বন্যা ব্যানার্জি

ছবি
    অবোধ জমতে জমতে একসময় কুয়াশা দীর্ঘ হয়।আবছা হয়ে আসে আকাশের অথৈ! থই হারিয়ে নিজেকে ভাসিয়ে দি।আর তখনই মনে পড়ে ছায়া থেকে  অনেকদিন বিচ্ছিন্ন আমি। অক্ষর হয়ে ওঠা দিনগুলোয় শীত জমে আছে।দু হাতে সরাতে যাই ভাগ হয়ে যাওয়া অস্তিত্ব, ক্ষয়াটে পাঁজরের হাড়।ছায়া কাঁদে,আমিও।আমাদের দেখা হওয়ায় টুপ  টাপ হিম ঝরে পড়ে। কবিতার ভাষা,চুম্বন কিম্বা সঙ্গম কিছুই বোঝেনা সে।