অসিত মণ্ডল
১. যখন বৃষ্টি থামল
বৃষ্টি থামার পর আকাশে থাকে
নির্লিপ্তির ঘেরাটোপ।
মেঘেরা উধাও,
খুঁজে নেয় অন্য কোন আধার।
জমে থাকা জলে পাখিরা স্নান সারে,
মুখরোচক পরচর্চা ছড়িয়ে দেয়
এ গাছ থেকে সে গাছে।
ভিজে বাতাস একবার বলে
এ তুমুল বৃষ্টিপাতের জন্য আকাশই দায়ী,
পরক্ষণেই বলে, মেঘই আমাকে
বাধ্য করেছে উড়িয়ে আনতে।
বাঁশগাছের চিকন পাতা থেকে
তখনও টুপ টুপ করে ঝরে পড়ে
দু' এক ফোঁটা অশ্রুকণা,
আকাশ ও মেঘের অকলঙ্ক ভালোবাসা।
২. জলরং
আকাশপটে সজনেপাতার নকশা কাটা
হাওয়ায় ভেসে মেঘ এল যেই সদলবলে
বৃষ্টি এল বৃষ্টি এল ঝিরঝিরিয়ে
দুপুরমণির চিকন পাতায় তিরতিরিয়ে
বৃষ্টি এল উঠোন জুড়ে ঝমঝমিয়ে
খই ফুটছে খই ফুটছে চিড়বিড়িয়ে
আদুল গায়ে দামাল ছেলে ঝাপসা পথে
বৃষ্টি নেশায় মেঘের পাড়া উথাল-পাথাল
তারই মাঝে ভিজে একসা কাপড় মাথায়
রুগ্ন মা যে ব্যস্ত ভীষণ ঘরকন্নায়
ওমনি তখন কন্ঠ ছেড়ে সমস্বরে
'নেবুর পাতায় করমচা ও বিষ্টি থেমে যা
নেবুর পাতায় করমচা ও বিষ্টি থেমে যা...
৩. অচিকিৎস শ্রাবণ - ক্ষত
ধূসর অতীতে ফিরি আজ বৃষ্টিবেলায়
আকাশে ভীষণ মেঘ অঝোর
শ্রাবণধারা
জল থৈ থৈ পথ পাশাপাশি তুমি আমি
পড়া পড়া অছিলায় বৃষ্টিনেশায়
পেরিয়ে যাচ্ছি মাঠের পরে মাঠ
মুহূর্তে উধাও ক্যাম্পাস কুর্চি ফুলঝুরি
আমাদের আড়াল করেছিল
বৃষ্টির ফিনফিনে পর্দা
আধডোবা ঘাস জমিতে
তুমি তোমার ভিজে শরীর
বিছিয়ে দিলে অনায়াসে
তোমার বকফুলের মত আঙুলে
জড়িয়ে নিলে আমার সমস্ত বিষাদ
ভেজা ঠোঁটে শুষে নিলে সব মন খারাপ
আমি তোমার উন্মুক্ত পায়ের পাতা দেখে
সাঁতারু হাসের এক জোড়া
কমলা পা আঁকলাম বৃষ্টি রংয়ে
বৃষ্টি থামার পরে
আমি ঘরে ফিরলাম
এক শ্রাবণ - ক্ষত বুকে নিয়ে
যার কোন নিরাময় নেই
এক শ্রাবণ ক্ষত..... যার কোনও নিরাময় নেই।..... আহা! এমন শব্দের অনায়াস ব্যবহার কবির যেন স্ব-ভাব।👍বেশি বেশি ভালো।
উত্তরমুছুন"পড়া পড়া অছিলায় বৃষ্টিনেশায়
উত্তরমুছুনপেরিয়ে যাচ্ছি মাঠের পরে মাঠ "
"সাঁতারু হাসের এক জোড়া
কমলা পা আঁকলাম বৃষ্টি রংয়ে "
ভালো লাগলো অসিত দা।
-- রাজদীপ ভট্টাচার্য