মেঘনা রায়

                            

 #পলাশের পদাবলী#

                                                -মেঘনা রায়


বদলি বাতাসে আকণ্ঠ তৃষ্ণা, একঘেয়ে ক্যানভাসে কচি সবুজের ব্যতিক্রম,,,প্রতীক্ষা রিনরিন,,, শিমুলে,পলাশে সোহাগে ঝিম হয়ে থাকা সময়ে মহুয়া মিলন। 

    

    ফাগুনে হাওয়ায় এবারের সফরে অন্য আমেজের পরশ।চলন্ত ফেবু্রুয়ারি মাসে যাওয়ার তারিখ টা চলে এলো গুনগুনিয়ে। নয় জন ফোটোগ্রাফারের সাথে আমি দশম  হয়ে  চললাম লাল পাহাড়ির দেশে। এই গ্রুপের সবাই ছবি তোলেন আমিই কেবল মনকে ফাঁকফোকর  দিয়ে গলিয়ে দিয়ে শব্দ জড়ো করি। তাই  জীবনে প্রথম ফোটোগ্রাফি ট্যুরে চিন্তা  ছিল শব্দ জড়ো করে মালা গাঁথার প্রয়াস কতটা সফল হবে?আজ বলতে দ্বিধা নেই সেই মালা আমি পরিয়ে আসতে পেরেছি।


    রাতের দুলুনি ট্রেন ভালই নিয়ে এলো 'বরাভূম' স্টেশনে। প্রথম পা রাখলাম রাঙা মাটির দেশে। প্রথামাফিক লাল হলেও, নানান শেড ক্যানভাস ফুঁড়ে আকাশের ছাদ খোঁজে। স্টেশন চত্বরের লাগোয়া এক চায়ের দোকানে সকালের চা খাওয়া হল। নতুন জায়গার সাথে চায়ের একটা অপত্য সম্পর্ক আছে,খেলেই কেমন ভালোবাসার অনুভূতি হয়।চা হাতে তাকিয়ে দেখি এলোঝেলো  নিঃসঙ্গ স্টেশনখানা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জঙ্গল গায়ে জড়িয়ে আছে।চা শেষ করে দুটি গাড়িতে ভাগাভাগি করে চড়ে বসা হল — গন্তব্য বাঘমুন্ডি। গাড়ি ছাড়ার পর মন আর বশে থাকলো না। দুই চোখ আতিপাতি করে তাকে খুঁজতে লাগলো।আমার আগেকার কর্পোরেট ভ্রমণে,ট্রেকিং এর  মাঝে , বিভিন্ন ছবিতে,গানে আগুণ রঙা সে উঁকিঝুঁকি দিয়েছে। গভীর আশ্লেষে জড়িয়ে ধরতে চেয়েছে, তারপর হাতছানি  দিতে দিতে অভিমানে এক সময় ফেড আউট করে গেছে।  আমি তাকে আবহেলাই করেছি। আজ তৃষিত নয়নে দেখতে চাই ,,, ফিসফিস করছি "ফিরে এসো প্লিজ, আমার মস্তিষ্কে চেতনায়  আজ শুধু তুমি;তোমায় চাই ভীষণ ভাবে চাই। অভিমান নয় আর।" কালো মসৃণ পিচের রাস্তা বাঁক ঘুরতেই হাল্কা রোদেলা সকালে বহুদূরে আবছা লালচে মরচে আভা।তারপর ওয়াইড  লেন্থে মাইলের পর মাইল জুড়ে  প্রগাঢ় লালের আহ্বান। আমি হিতাহিত জ্ঞানশূন্য অবস্থায়  পাশে বসা মুধুজার কাঁধ খামচে চিৎকার করে বললাম " দেখেছিস পলাশ, পলাশ। " মেন্টর তখন মুচকি হেসে বলল "তোমাকে তো আগেই বলেছি পুরো লালে লাল দেখাব।" চোখের সানগ্লাস ঠিক করে বললাম "সরি ,আমি একটু বাড়াবাড়ি করে ফেললাম।" বাকিরা আমার কান্ড দেখে বিস্ময়ে ততক্ষণে ভেবে ফেলেছে বিনা ক্যামেরা হাতে এ  কোন পাগল এলো রে সাথে! 


     সকালের অলস রোদ্দুরে গাড়ি পর পর দুটো হেয়ার পিন বাঁক নিতেই উন্মুক্ত পাখি পাহাড়, পিরামিডসদৃশ,তেকোনা। নীচে তখন তুমুল  লালের আলোড়ন।গাড়ির ড্রাইভার নিপেন মাহাতো আমাদের মতো শহুরে ছাপ্পাওয়ালা মানুষ নিয়ে এগিয়ে চলেছে নির্বিকার মুখে। পলাস ততক্ষণে রাস্তার একেবারে কাছে এসে ঘিরে ধরেছে ফ্রেম। "যেখানে সারাদিন কুয়াশা ওড়ে, নীলাভ রঙের পাহাড় থেকে আলগা হয়ে বেরিয়ে আসে বৃক্ষ, পল্লব,ফুল পাখি,সেখানে যক্ষী পাহারা দেয়। আমি জঙ্গলের ক্ষার মাটি ঝরণা থেকে কেটে বার করে এনেছি আমার পুরুলিয়া কে। দেখবে তুমি? কতদিন, মাস, বছরের অপেক্ষার শেষে তুমি এলে ।" বিশেষ এক ভিউ পয়েন্টে গাড়ি থামতেই আমি  মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে নেমে গিয়ে পলাশের গা জড়িয়ে  ধরতেই পলাশ টুপটাপ করে আমার মুখ শরীরে ঝরে পড়লো। বুঝলাম আমি অলরেডি পলাশে হিপনোটাইজড। 


   মাথার ওপর লাল পলাশের চন্দ্রাতপ,পায়ের নীচে-সবুজ পাতার গালিচা মাড়িয়ে পোঁছে গেলাম 

 বাঘমুন্ডি পঞ্চায়েত অফিসের ঠিক উল্টোদিকে সুজিত বাবুর দ্বিতল আবাসনে।এটাই আমাদের দিন তিনেকের স্থায়ী ঠিকানা । হোটেলের চারপাশের খোলামেলা ধান কাটা রিক্ত প্রান্তরে মন হুহু করা ফাল্গুনী  হাওয়া। সাধারণ মানের আবাসনের প্রতিটি ঘর পুরুলিয়ার পরবের নামে রাখা। ভাদু,টুসু করম, জিতুয়া,বাঁদনা ও রোহিনী।


    সকলেই ফ্রেস হয়ে ব্রেকফাস্ট শেষ করে চললাম তিন কিমি দূরে চড়িদা গ্রাম দেখতে।পুরুলিয়ার আদি নৃত্যশৈলী "ছৌ" নাচে ব্যবহৃত  মুখোশের জন্মস্থান হল এই চড়িদা গ্রাম। গ্রামে ঢুকেই যে যার মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছবি তোলায় ব্যস্ত হয়ে গেল। আমি সবার পেছনে দাঁড়িয়ে উঁকি দিয়ে দেখি প্রায় অন্ধকার এক খুপরি ঘরে  বৃদ্ধ সওদাগর শিল্পী কে।প্রথমেই ধাক্কা খেলাম তার পরনের ফুটিফাটা গেঞ্জি খানা দেখে।ক্ষয়াটে চেহারার নুব্জ্য বৃদ্ধ শিল্পী একমনে নিপুণ হাতে মুখোশের জাল বুনে চলেছেন।  রিক্ত জেলার তৈরি এই মুখোশ নিজেকে বেচতে না পারলে থেকে যাবে করুণ  ডাঙায়— তাই চৈতালি দ্বিপ্রহরে গনগনে সুর্যের তাপে আমি নির্বাক এই হত দরিদ্র মানুষের কষ্টক্লিত জীবন দেখে।মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে দূরে সরতে চাইল,কিন্তু চারপাশে  তখন মাটিতে শুয়ে উপুড় হয়ে প্রচুর কসরৎ করে বন্ধুরা ছবি তুলছে। বন্ধুদের দামি লেন্সের সাটারের নিরবিচ্ছিন্ন খিচ খিচ শব্দ আমার মনকে ক্রমাগত বিঁধে চলল।এই নীরব শিল্পকর্মের দৃশ্য তারা লেন্স বন্দী করে,এরই মধ্যে খুঁজে পায় ক্লাসিক্যাল বিউটি।এই দুর্দান্ত ছবি তাদের পুরস্কারের বাহক হয়,,আর আমি দেখি দরিদ্র মানুষ গুলোকে বুর্জুয়া সমাজ ক্রমাগত শোষণ করে ঘিরে রাখে গাঢ় ধোঁয়াটে অন্ধকারে। 

      বিকেল তিনটে নাগাদ বেরিয়ে পড়লাম কিছুটা দূরে বামনকাটা পাহাড়ের গায়ে তুর্গা ফলস দেখতে। মেন্টর নেমেই শেখাতে শুরু করল শেষ প্রহরের সূর্যের আলোকে কিভাবে কাজে লাগিয়ে কতটা নিখুঁত ল্যাম্ডস্কেপ তুলে আনা সম্ভব।আর আমি বিনা ক্যামেরায় মোবাইল হাতে অদ্ভুত ভাবে নিঃসঙ্গ হয়ে গেলাম। কী খেয়াল হতে তরতর করে নেমে যাচ্ছি  কিশোরী বেলায়,তুর্গা প্রবল হাতছানি দিচ্ছে, কুসুম গাছ চেনাচ্ছে।আমি পাথর বেয়ে  নির্দ্বিধায় চলে এলাম বেশ উঁচুতে ঝর্ণার একদম কোলের কাছে। পলাশের উৎসবে আমি তো একাই। একার মাঝে কী অকপট এই অরণ্যবোধ। অবর্ণনীয় গাঢ় সবুজ ছায়াপথ পরম মমতায় ঢেকে রাখছে আমায়। পা ছুঁয়ে বসলাম ঝর্ণার ধার ঘেঁষে। মনের গভীর তলদেশ স্পর্শ করা দাহ জুড়ানো কুলকুল ধ্বনি। ফলসের চারপাশে দর্শক শুধুই পলাশ — পলাশের সোহাগ, তার উচ্ছ্বাস,তাকে পাওয়ার পূর্ণতা আমাকে আদরে লাল করে দিচ্ছে। ক্রমশ পথ ধুয়ে গেল চাঁদের আলোয় ফিরছি অন্ধকারে জ্যোৎস্না মেখে। মাঝে মধ্যে দু একজন পথচারী। অন্ধকার চরাচরে পলাশ 

আত্মগোপন করে ঠিক নজরে রাখছে আমায়,, কাল ভোরে আবার দেখা হবে পলাশ ।


   পরদিন  সকালে শুনি আজ সারাদিন রিমঝিম  দারুণ সব ইভেন্ট। চিঁড়ের পোলাও দিয়ে প্রাতঃরাশ সেরে টপাটপ গাড়িতে উঠে ১৪ কিমি দূরে দলমা পাহাড়ের অংশে ২০০০ ফিট উচ্চতায় অযোধ্যা পাহাড়ে  অবস্থিত রাঙাগ্রামের   উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। নামটা ভারি মিষ্টি তো!গাড়ির স্পিডোমিটারের কাঁটা তথৈবচ কারণ পুরুলিয়া তো সমতল নয়,,,অনেকটা মানুষের  মনের মতো,,, উঁচুনিচু।

জনপদ আসে, রাস্তায় গাড়ি-ঘোড়া, রিকশার প্যাঁকপ্যাঁক,বাজারে মানুষের ঢল,বাসের হর্ন নগরকেন্দ্রিক ব্যস্ততা,,সব ঠেলে সরিয়ে এগোতেই আবার নীলচে পাহাড়। এই পাহাড়ের নাম অযোধ্যা। ডিনামাইটের বিস্ফোরণে অযোধ্যার পাথুরে বুকে রক্ত ঝরিয়ে রাস্তার প্রতিটি বাঁক মসৃণ করে এক তুমুল জলপ্রকল্প তৈরি হয়েছে।তাই আজ বাস্তবিক -ই খোলা পাতার মতো অবিরল পড়ে নেওয়া যায় পাহাড় পাঠের শিলালিপি।

  পাহারের মাথায় রাঙাগ্রাম কে দেখে মনে হল এ যেন পুরুলিয়ার শেষের কবিতা। অল্প সময়ের মধ্যেই মেন্টর আদিবাসী নাচের দল যোগাড় করে ফেলল।বিস্ময়ে দেখি দাক্ষিণাত্যের  ভগ্নাংশে ছিন্ন আগ্নেয় আত্মা বাংলার শাল তরুর লাবণ্যে বিকশিত -উচ্ছ্বসিত- মঞ্জরিত;তারই মাঝে মাদলের দ্রিমদ্রিম, মন পাগল করা বাতাসিয়া সাঁওতালি সুর লাল পেড়ে হলুদ শাড়িতে দুলে দুলে নেচে বেড়াচ্ছে। পলাশের ফোঁটা ফোঁটা লাল  তাদের শাড়ির পাড়কে বেড় দিয়ে রেখেছে; চলকে যেন না পড়ে। কিছু অর্থের বিনিময়ে এই নৃত্য পরিবেশন ও চিত্রগ্রহণ। নাচের শেষে আমাদের সাথে যা চকোলেট, বিস্কিট ,লজেন্স ছিল সব বিলি করা হল।শুধু  করা গেল না -তাদের পেটের ঝুলে পরা কুঞ্চিত চামড়ার ভাঁজ কে নিটোল করা,মহিলাদের ফাটা ব্লাউজের সেলাইকে আব্রু দেওয়া, বদলানো সম্ভব হল না অভাবের তাড়নায় টুরিস্টদের কাছে সরাসরি হাত পাতার অভ্যাসটুকু। বুঝলাম পুরুলিয়া আমার মনে ক্ষরণ ঘটিয়ে চলছে অবিরত। 

    আজ বিকেলের পাঠে রয়েছে আদি নৃত্যশৈলী "ছৌ" নাচ প্রদর্শন। পদ্মশ্রী সম্মানপ্রাপ্ত খ্যাতনামা শিল্পী শ্রীগম্ভীর সিং -এর তত্ত্বাবধানে ও পরিবেশনায় এই অনুষ্ঠান হবে ছাতাটাঁড় নামে এক মাঠে।গাড়ি করে পৌঁছে দেখি চৈত্রের  অস্তমিত সূর্যের আলো মাঠের একলা পলাশ গাছকে আগলিয়ে রেখেছে। ছাতাটাঁড়ের একটা ঐতিহাসিক পটভূমি আছে। প্রাচীনকালে রাজারা নিজের ঐশ্বর্য ও প্রতিপত্তি দেখানোর জন্য এই মাঠে রাজছত্র লাগাতেন এবং প্রজাসাধরণ এসে ঐ ছাতার তলায় প্রণাম করে আনুগত্য প্রকাশ করত। এখনো বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে এই মাঠে বিশাল পরব হয়, ,মেলা বসে।     

   যথা সময় ছৌ নাচের শিল্পীরা এসে ঐ পলাশ গাছের গোড়ায় জড়ো হয়ে  অঙ্গসজ্জা শুরু করলেন। আস্তে আস্তে  প্রচুর স্থানীয় লোকের সমাগম হতে লাগল। গাছের তলায় বসে শিল্পীরা তাদের মেকওভার করলেন। কিছু পুরুষ শিল্পী আব্রু রেখে একটু একটু করে পূর্ণাঙ্গ রমণীতে পরিনত হলেন। অদ্ভুত!খুব কাছ থেকে দেখলাম যারা রমণী হলেন মেকআপ পরবর্তী কালে তাদের চলন বলন একেবারে পাল্টে গিয়ে যেন সত্যি রমণী হয়ে উঠলেন। চিত্রগ্রাহক বন্ধুরা হুমড়ি খেয়ে ছবি তুলছে আমি ভিড় ছাড়িয়ে চোখের দৃষ্টিকে অবারিত করতেই তা চলে গেল অযোধ্যা পাহাড়ের ওভারল্যাপ করা প্রান্ত রেখায়।একটু গুছিয়ে বসতেই শুরু হল নাচ,আমিও চূড়ান্ত একাগ্রতায় নাচের কাহিনি মালায় প্রবেশ করলাম।মেঠো এই মঞ্চ সজ্জায় ক্রমশ ধুলোর ঝড় উঠলো। মল্ল রাজাদের ভূমি যার ব্যাকড্রপে আগুনে পলাশ আর দৃশ্যত কিছু সৈনিক যারা শারিরীক নিপুণতায় দর্শকের চোখের বলয়ে উড়িয়ে আনলো আস্ত এক যুদ্ধেক্ষেত্র।সেই ভয়ংকর ছৌ নাচের যুদ্ধের শেষে স্বয়ং শিব এসে বলে গেলেন পুরুলিয়ার আদি ইতিহাস। আমাদের কপালে পরিয়ে দিলেন রাঙামাটির টিপ। সেই টিপ পড়ে আমরা বন-পলাশী হলাম।

   সূয্যি গেছে পাটে, সন্ধ্যার নিমন্ত্রণ ছাড়াই রুপোলি চাঁদ মুখ বাড়িয়েছে আকাশের আয়নায়। রাতের নীহারিকায় আমরা কতিপয় মানুষ ঝিরিঝিরি দক্ষিণা বাতাসের পরশে পরিতৃপ্ত হয়ে হোটেল মুখো ।পথে কয়েরাবেড়া ড্যামের জঙ্গল ঘেঁষে গাড়ি দাঁড়ালো। গাড়ি থেকে নামতেই আমার মন পাখি উড়ে চলে গেল পলাশের কাছে রাঢ়ের ব্রাত্যবুলি শুনতে। বনজোৎস্না না চাঁদের মিতালিকা?কোন নামে ডাকব পলাশ? প্রাক দোল পূর্ণিমার চাঁদকে সঙ্গী করেই আজ রাতের মতো লালমাটির গল্পগাছা শেষ হল।

   আজ ফিরে যাব মন শরীর দুই বিষন্ন। সকালে গিয়েছিলাম শাড়ির পাড়ের মতো  বান্দুদি গ্রাম দেখতে। এই গ্রাম বাস্তবিকই রঙিন চিত্রপট, শুধু চিত্রনাট্যের অপেক্ষা।গ্রামের আদিবাসীরা ছবি তোলার ব্যাপারে খুব রক্ষণশীল। রঙিন শাড়ির পাড়ের মতো  এই রমণীয় গ্রাম দেখে মনে হল এদের জীবনধারা জীবনমুখী গান না গীতবিতান! শেষবেলায় আমার ফোটোগ্রাফার বন্ধুরা যাদের কে ছবি তোলার বিষয় হিসেবে আঁকড়ে  আছে,তাদের অনেক কিছুই বিশ্বের দরবারে উন্মোচিত। বুকের গভীরে বাজছে  করুণ সুর বেআব্রু হচ্ছে না তো এদের সংস্কৃতি? যথাযথ ভাবে রক্ষিত হচ্ছে তো সব কিছু!  ফেরার  তাগিদে পেছন ফিরে দেখি দিনানুদিনের কাজ সেরে মুচকি হেসে  নীল পাহাড়ে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ক্যানভাস গ্রাম বান্দুদি।

   কী হবে এখানে এসে?কি পাবো?  পাওয়ার পাল্লা যে অনেক ভারি হয়ে গেল।সময় বিধি মেনে পুরুলিয়া স্টেশনে " রূপসি বাংলা" ট্রেন আমাদের অপেক্ষায় কলকাতাগামী হবে বলে। শীততাপ- নিয়ন্ত্রিত কামরা থেকে আমার চোখের শেষ পরশ- যদি তুমি ডাকো অথবা নাই ডাকো, আবার আসব আমি বনপলাশী হতে।একমুঠো পলাশের আবীর তোমায় মাখিয়ে দিলাম এবারের মতো।



     

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোমা দত্ত

সব্যসাচী মজুমদার

সৌম্যজিৎ আচার্য