সুতনু হালদার

 


আদিগন্ত জিজ্ঞাসা 


    (১) 


তন্তুগুলোর কুশলজ্ঞাপন

বেমক্কা ক্রোধে পুষি

হে হটকারি–

হাট-বাজারি 

থামতে এবার শেখো

বাজার গরম

গরম বাজার

বাদল-হাহুতাশে

ওই মেয়েটা বর্ষা হত

বন্যা চোখের জলে

তখন ওদের প্রেমিক-প্রবর বসন্ত উৎসবে

তুলছে ছবি

তুলবে ছবি

কাঁধের ওপর মেঘ

নিপাট মনে ধুনচি আকাশ

মেঘ ধুনেছি আরো

ওই মেয়েটা, আমায় এখন তোমার  ভাবতে পারো 


মেঘের মতো অমন করে শাঁখ বাজাতে পারো?



(২)


আমাদের স্বর্গ-মর্তে আঁকো বাউল খাঁচা

শতাব্দীর ঊরু জুড়ে দ্রৌপদীর চুল

অন্ধকার আস্তাবলে ঠোঁটের রোপন

ইশারা ক্লান্ত তবু দ্বিধাহীন স্তন  


এটারও কারণ খোঁজে ভাঙা রেকর্ডার

ডোরাকাটা কল্পনায় নিজস্ব জোঁক

রক্তও জারজ হয় স্বভাব দোষে

দিগন্তে নিরালোক বাস্তুভিটা 


এমন স্থিরতা মাখে উলুখাগড়া 

দ্যাখাশোনা বাকি সব সন্ধ্যাবেলা

পিঁয়াজও প্রক্সি দ্যায় খোসা ছাড়ালে

নিয়তিকে চিঠি লেখে ইতিহাস বই



(৩) 


ফিরেছি ছাতিমতলায় উদবৃত্ত

জিপসির ষড়রিপু মেঘের আঁচল

তুমি তো যোদ্ধা ছিলে অক্সিমোরন

হরধনুর পল্টনে ওষ্ঠহনন 


কাহ্ন-ভুসুক থেকে মুকুন্দরাম

জেব্রাক্রসিংয়ে প্রুফ দেখে উন্মুখ 


                 

গণিকার গননায় ফুটিফাটা মেঘ 

নিশানায় জিতে যায় একলব্য

বিমর্ষ ব্রেসিয়ারে গুঁজে শীতকাল

নিদয়ারা সাধ খায় নারীদিবসের 


সময়ের ধারাপাতে মেঘগর্জন

অগোছালো যোনিপথে উঁকি দ্যায় ড্রোন



(৪) 


অন্ধ জলের চায় গাঢ় অন্তর্বাস

উন্নাসিক শস্য আর খেদের ভাষা

নোনাচরে ভিজে মাটি ঋতুমতী চোখ 

কুয়াশার টুথপিকে অক্ষরচাষ



ফোঁটাফোঁটা সম্ভ্রম করে হার্টফেল

অনূঢ়া সম্মোহনে মেতেছে শ্বাপদ 


হাইব্রিড খিদে তবু ব্রজবাসী হয়

ঘাম-জ্বরে দেহ নাচে বেহাগ নূপুর

ফুলদানির জরায়ুতে অর্ধনারীশ্বর 

স্মৃতির জ্যোৎস্না খোলে রিসাইকলবিন 


শর্তহীন ওম্ মন্ত্রে মেঘলা আরোহী 

স্বস্তিকায় চুমু দ্যায় আগুনের ক্ষণ

ঊরুর রেসিপি আর দিবাস্বপ্ন

এখানেই মিশে গ্যাছে শাক্ত-বৈষ্ণব



অন্তর্গত রক্তবীজ 


এই পর্যন্ত লিখে একটা বিরতির দরকার

কাগজ আর কলম বারবার ঘর্ষণে ক্রমঘনিষ্ঠ  


লেখার পাতাটির ঠোঁট-বুক-জঙ্ঘা

ঊরু থেকে যোনি– প্রতিটা অঙ্গ আস্তে আস্তে 

জীবন্ত হয়ে আমাকে আকর্ষণ করছে 


আর নিরপেক্ষ থাকা যাচ্ছে না

একটু একটু করে উত্তেজনা গ্রাস করছে আমায় 


সমুদ্রের সমস্ত নুন বলশেভিক শীৎকারে 

ঘন হয়ে ছোবল মারে প্রতিবর্তে 


আর অপেক্ষা নয়–-- নিজেই কলম হয়ে উঠলে

সাদা পাতায় চলকে পড়া মেঘ লিখে রাখে 

ভূমধ্য সাগরের ধু ধু আশাবরি থেকে স্বায়ত্তশাসনের যৌন ইতিহাস



উত্তরণ 


ব্রেক ফেল করা মেঘপুঞ্জ

আকাশকে উত্তর আধুনিকতায় 

আপডেট করতে গিয়ে

শিরশিরিয়ে বৃষ্টি ঝরায় 


অথচ ভূপৃষ্ঠ চিরকালই তৃষ্ণার্ত প্রেমিক

একথাও তার অজানা নয় 


সাংসারিক সংশ্লেষের দ্বারপ্রান্তে 

উদ্দাম নেচে ওঠে রাধা– উদ্বাহু কানাই 


ভূপৃষ্ঠের আলিঙ্গনে বৃষ্টিরা নি:শেষ হতেই

চিরকাল ধরা দেয়



চ্যাটজিপিটি 


স্তন যখন থেকে মাই হয়ে ওঠে

ঠিক তখনই বাদল বাতাস– 

রাইসুন্দরী থেকে রাধা হয়ে যায় 


ছিন্নভিন্ন মেঘ হৃদয়ের গোপন কথা

লুকিয়ে উড়ে যায় – ভেসে যায় 


প্রতিটা হৃৎপিণ্ডই আসলে

অবিকল চ্যাটজিপিটি


  গ্যাঁড়াকল 


আমার ঘরটা যদি আর একটু বড় হ'লে

সেখানে মেঘ বাসা বানাতে পারত 


অথচ মেঘকে দ্বিখণ্ডিত করার 

নিয়মটাও আমার অজানা 


নিয়ম যতটা পরজীবী বেনিয়ম ঠিক ততটা নয়



জাদুমন্ত্রে দেখা 


গতরাতের শেষ প্রহরে যে বিষন্ন স্বপ্ন ঘুম ভাঙিয়েছিল, তার তোলপাড় নিশ্বাসের আত্মমগ্ন স্মৃতিতে কোনো মন্ত্রধ্বনি ছিল না; তার ভগ্নচৈতন্য জুড়ে ছিল এক রামধনু রঙের ঠোঁট। সেই ঠোঁটের দুইপ্রান্তে ছিল অসীম অনন্ত শূন্যতা ঘেরা এক ভোরবেলা! মৌনজলে ভেজা ভোর থেকে জন্ম নিয়েছিল নতুন এক মন্তাজ। অবিলম্বে আমরাও ধনপতি সদাগর হয়ে দেবী কমলে কামিনীকে কালীদহে দেখি ও স্থির বিশ্বাসে প্রভুভক্তির নজির গড়ি। মঞ্চে তখন তাসের ঘরে মেঘ রোপণ–--কুশীলব বৃষ্টির যবনিকাপাতে ক্রমশ তরল রোদ অন্ত্যাক্ষরি গায়


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোমা দত্ত

সব্যসাচী মজুমদার

সৌম্যজিৎ আচার্য