সোনালী মিত্র
রাজধানীনামা
অবশেষে এ রুখাশুখা পরদেশে; বর্ষা এসেই গ্যালো।ফিনফিনে ছাতার নীচে একজোড়া কপোত-কপোতির অবাঙালী ঠোঁট ছুঁয়ে মুঘল বাগিচায় স্লিমফিগার নিয়ে বর্ষা এল। এই রুক্ষ দেশে তো সেভাবে কোকিল ডাকে না! তীব্র এক এড়ে জাঠের ছাদে জল মাখামাখি হয়ে হাওয়ার তোড়ে একা ব্রেসিয়ারটি তোলপাড় হতে থাকে। ঠিক যেন মুহূর্তের উড্ডীন পাখি,ডানায় কোটরে তার গোটা বছরের ধূল-মিট্টি । যেইসমস্ত খিড়কি সর্বদা বন্ধ থাকে অন্ধকারের দিকে, মেট্রোপলিটন অযথা ধোঁয়া বা ধোঁকা থেকে বাঁচতে, জলসোহাগে সেসব ঘরের স্ট্রিপলেস অত্যাধুনিকারা কলকল করে এখন ভেসে বেড়াচ্ছেন মেঘ ডিঙি চড়ে।
#
আশ্চর্যজনক ভাবেই এ খরা ভূভাগে গালিবের শের মুর্ছনা এবং শিখ দরগার পাঠ একে অপরের ঘামের গন্ধ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে। মাঝখানে এক এক টুকরো শিল্পিত ঝমঝম মন্দির,টেরাকোটা ঝলমল।ছলছল জলরেণু ধর্মহড়কানো পোষ্টার , অসহিষ্ণু বিজ্ঞাপিত হরফের খুশবু ভুলে হড়হড় করে ঢুকে যাচ্ছে দেওয়ালে গেঁথে রাখা মানচিত্রে। দুষ্টজলের দাগ প্রেমিকার সাদা স্কার্ফে লেপ্টে গেলে উড়ে আসছে টেলিভিশনের ঘরোয়া বিজ্ঞাপনে," দাগ আচ্ছে হ্যায়"।
#
পরকীয়ার ভেজা উপত্যকা,গিরিখাত তীব্র উষ্ণতা প্রত্যাশী হয়ে উঠলেই কাঁপুনি দিয়ে জ্বর এল গোটা একটা দুপুরের। ঘুমের মধ্যে ভিজে বর্ণমালায় জারিত হওয়া পুরুষটিকে দেখি,একখান আস্ত কবিতা হয়ে ফুঁড়ে ঢুকে যাচ্ছে জরায়ু আলোয়। সে আলোয় আতিপাতি করে খুঁজি আমার গ্রামের নাম,স্কুলের রোল নম্বর! নষ্টপ্রেমিক সুব্রতদা বলেছিলো,দ্যাখ দ্যাখ রবির অস্তদিনে পৃথিবীও শ্রাবণ হয়ে কাঁদে। ঘুমের মধ্যে সব জীবন্তছবি!মিতাদের আম বাগান ডাকছে ফরিদাকে,মা যেন আমার কানের কাছে বলছে,'তুই কি উন্মাদ হয়ে গেলি!'উন্মাদ!হ্যাঁ প্রকৃতই উন্মাদ হতে চেয়ে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে হয় পৃথিবীবিদ্যার যাবতীয় বিধুরজল।
খুব প্রাঞ্জল
উত্তরমুছুন