সপ্তর্ষি চ্যাটার্জি

 


 জন্মদিনের পার্টি


অসিতবাবু টোটো করে স্টেশন থেকে বাড়ি ফিরছেন। টোটোওয়ালা ছেলেটা চেনা, ওর নাম গুড্ডু। এমনিতে বেশ কথা-টথা বলে, আজ একটু চুপচাপ। কানে হেডফোন গুঁজে মোবাইলে এক মনে কী একটা দেখছে আর শুনছে। টোটো চালাতে চালাতেই বারবার ঘাড় ঘুরিয়ে মোবাইলের দিকে তাকাচ্ছিল গুড্ডু। শেষে রাস্তায় একটা বড় গর্তে পড়ে টোটোটা লাফিয়ে উঠতে বিরক্ত অসিতবাবু বললেন, “কীরে গুড্ডু দেখে চালাতে পারিস না? মন কোথায় আজকে তোর? ওই মোবাইলে?” গুড্ডু একটু অপ্রস্তুত হয়ে লজ্জা পেল, “সরি দাদা। আর হবে না। আসলে ক’দিন আগে যা হল, তাই মনটা একটু… থাক সে কথা…” এবার ভুরুটা আরেকটু কোঁচকায় অসিতের। “কী হয়েছে বল তো?” 

  • “আপনাকে আর কী বলি দাদা, মানে এমন একটা ব্যাপার…”

  • “মন খুলে বল, ইতস্তত করিস না। দাদা বলে ডাকিস যখন, বলতে বাধা নেই।”

  •  “তাহলে বলি। এটা গত সপ্তাহের ঘটনা। দুপুরের দিকে খালি টোটো নিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম, জানেন? দুটো ভাত খেয়ে একটু বিশ্রাম নিয়ে আবার বেরব রোজকার মতো। কালীতলার মোড়ে আসতেই দুজন শাড়ি পরা মহিলা, বয়স বছর তিরিশের আশেপাশেই হবে, মানে আমার চেয়ে কিছুটা বড়ই হবে, হাত তুলে টোটো থামাল। তারপর দক্ষিণপাড়ার দিকে একটা জায়গায় যেতে বলল। এমনিতে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল না ওদিকটায় ওই ভরদুপুরে, তাই ইচ্ছে করে ডবল ভাড়া চাইলাম। ও মা! দেখি মিষ্টি হেসে রাজি হয়ে গেল। অগত্যা টোটোয় চাপালাম মেয়েছেলে দুটোকে। দুজনেই কিন্তু দেখতে বেশ সুন্দরী, মানে বেশ চটকদার যাকে বলে, মানতেই হবে। টোটোর সামনের আয়নাটা দিয়ে আমার চোখ মাঝেমাঝেই ওদের দিকে চলে যাচ্ছিল। ওরা নিজেদের মধ্যে গুজগুজ করে কী সব কথা বলছিল আর থেকে থেকেই খিলখিল করে হেসে উঠছিল।

  দক্ষিণপাড়া এলাকাটা তো জানেনই একটু শুনশান। নদীর ধারে, এদিক ওদিক ক’টা ইটভাটা, ফাঁকা ফাঁকা জমি, অল্প কিছু ছোট-খাটো বাড়িঘর। তেমনই একটার সামনে দাঁড়াতে বলল ওরা। নেমে আমাকে পয়সা দিতে গিয়ে একটা মেয়ের শাড়ির আঁচল টুপ করে খসে পড়ল। আমি সেদিক চোখ সরাতে গিয়ে মেয়েটার সঙ্গে চোখাচুখি হয়ে গেল। কেলেঙ্কারি! অমনি আবার সেই হাসি। আমি তো ঘেমে যাচ্ছি ভিতরে ভিতরে। টোটোটা জলদি ঘোরাতে যাচ্ছিলাম, তখনই অন্য মেয়েটা আমার একটা হাত চেপে ধরে বলল – ‘এই শোনো না, একটা কথা বলব?’ আমি আস্তে করে মাথাটা একদিকে কাত করতে পারলাম শুধু। তখন সে বলে, ‘তোমাকে না আমাদের খুব ভাল লেগেছে। জানো, আজ আমার বোনের, মানে এর জন্মদিন। ছোট্ট করে একটা পার্টির আয়োজন করছি একটু। তা তুমি যদি আমাদের এই বাড়িতে আজ সন্ধেবেলায় আসো, তবে সবাই মিলে জমিয়ে মজা করা যাবে। কেমন?’ অন্য মেয়েটাও তখনই চোখে এমন একটা ইশারা করল যে আমিও, আমিও… ”

  • “তার মানে তুই পা পিছলেছিলিস?”

  • “বয়সের দোষ, দাদা। কী করি বলুন? কিন্তু তারপর কী হল শুনুন প্লিজ।”

  • “বল।”

  • “ওরা তো আমায় বলল সন্ধেবেলায় ঠিক ওখানেই আসতে। আমিও কেমন যেন ঘোরের মধ্যে ছিলাম একটা। সন্ধে হতেই একটা ভাল জামা পরে একটু সেন্ট মেখে টোটোটা নিয়ে দক্ষিণপাড়ার দিকে চললাম। পথে কত প্যাসেঞ্জার উঠতে চাইল, তুলিনি কাউকেই। দুটো সুন্দরী মেয়ে আমাকে নেমন্তন্ন করেছে! এরকম সুযোগ আসে নাকি বারবার? 

বাড়িটার সামনে মাঠের একপাশে টোটো সাইড করে সদর দরজার দিকে এগিয়ে গেলাম। তেমন আলো-টালো জ্বলতে দেখলাম না। জন্মদিনের অনুষ্ঠান, অথচ লোকজনের কথাবার্তাও বিশেষ শুনতে পাচ্ছিলাম না। দরজায় দু’বার কড়া নাড়তে বড় বোনটা বেরিয়ে এল। একগাল হাসি মুখে। আর এমন একটা টাইট কালো ড্রেস পরে, যেটা অনেকটাই খোলামেলা। স্লিভলেস টপ আর মিনিস্কার্ট জাতীয়। হাঁ করে ওকে দেখছিলাম, তখন মেয়েটা বলল, ‘আরে এসো এসো ভিতরে এসো। বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকবে নাকি?’ আমি আমতা আমতা করে একবার বলার চেষ্টা করলাম -- তা জন্মদিনের অনুষ্ঠান, অথচ আর সব লোকজন কই? শুনে হা হা করে খুব একচোট হাসল মেয়েটা। যেন খুব মজার একটা প্রশ্ন করে ফেলেছি। ততক্ষণে ওর হাসির আওয়াজ শুনে বার্থডে গার্ল, মানে ছোটবোনও চলে এসেছে দরজার কাছে। তার পোশাক আরও ডেঞ্জারাস দাদা। লাল রঙের লেস দেওয়া ছোট্ট কাপড়ের টুকরোটা যে কোনও ইনারের চেয়ে সামান্যই বড়। ভরাট বুকের ঠিক উপর থেকে শুরু করে কোমরের একটু নিচেই সেটা শেষ হয়ে গেছে। 

‘আর আবার কে আসবে? আচ্ছা বোকা ছেলে তো! আমি, আমার বোন আর তুমি। ব্যাস। তোমাকে ভাল লেগেছে বলেই তো এই বিশেষ সন্ধেটায় তোমাকে আমাদের কাছে চাইলাম!’ বলতে বলতে আমার হাত ধরে একপ্রকার টেনেই ভিতরে নিয়ে গেল ওরা দুজন। আমার অবস্থা যেন জালে ধরা পড়া মাছের মতো। বুঝতে পারছি সবকিছু ঠিকঠাক লাগছে না, আবার জাল কেটে বেরনোরও উপায় নেই। চিনি না, জানি না, একবারের ডাকেই সাড়া দিয়ে চলে এলাম। এদিকে মনের মধ্যে টগবগ করে ফুটছে তীব্র কামনার স্রোত। সেই স্রোতে হাবুডুবু খেতে খেতে ওদের সঙ্গে ভিতরের ঘরে গিয়ে একটা সোফায় বসলাম। 

ঘরে হালকা নীল আলো জ্বলছে। সঙ্গে কোনও একটা মিউজিক বক্সে অদ্ভুত একটা গান বাজছে, ভাষাটা বুঝতে পারলাম না, তবে কেমন একটা একঘেয়ে সুর, ঝিমধরানো। কোল্ড ড্রিঙ্কের বোতল ছিল সামনে একটা, সেখান থেকে একটা প্লাস্টিকের গ্লাসে আমায় কিছুটা ঢেলে দিল বড় বোনটা, তারপর ছোট বোনকে দিয়ে নিজেও একটা গ্লাস নিল। এক চুমুক দেওয়ার পরেই বড়টা আমাকে বলল, ‘কেক এনেছি। চলো এবার তবে কেক কেটে সেলিব্রেট করা যাক বোনের জন্মদিনটা। তারপর আমরা তিনজন মিলে একসঙ্গে মজা করব, কেমন?’ বলেই দুষ্টু একটা হাসি দিয়ে এক চোখ মারল আমায়। আমি প্রায় ঘামতে ঘামতে মাথা নেড়ে হ্যাঁ বললাম। নির্জন পাড়ায় ফাঁকা একটা বাড়ি, সেখানে দুটো সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে আমি একা! ‘মজা’র পরিমাণটা আন্দাজ করেই আমার হাল খারাপ হয়ে গেল। 

কেক এল। ক্রিম দেওয়া বড়সড় চকোলেট কেক। হ্যাপি বার্থডে গান করে সেটা কাটা হতেই দুই বোন মিলে খুনসুটি করে ওই ক্রিম নিয়ে গালে-টালে মাখামাখি শুরু করল। আমাকেও ছাড়ল না। তারপর ওই ক্রিম মাখাতে মাখাতেই বড় এক টুকরো কেক প্রায় জোর করেই আমার মুখে ঢুকিয়ে দিল ওরা। দুজন এমন করে আমার গায়ের উপর চেপে এল যে ওদের শরীরের ছোঁয়া পেয়ে আমি কেঁপে উঠলাম রীতিমতো। আর তাই দেখে সে কী হাসি ওদের। 

কেকটা চিবিয়ে কোনওমতে গিলেছি কি গিলিনি, পকেটে রাখা সেলফোনটা বেজে উঠল। দেখি আমাদের পাড়ার দত্তবাবু ফোন করছেন। রাত-বিরেতে কোনও দরকার পড়লেই আমায় ফোন করেন উনি, টোটো লাগবে। আজ তো পারব না, তাও দেখি ফোনটা ধরে। ‘একটু বাইরে থেকে আসছি কথা বলে, এখানে মিউজিকের শব্দ তো…’ – এটা বলে যেই না  সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়েছি, মাথাটা কেমন যেন টলমল করে উঠল। কেন এমন হল? যাক গে। অত না ভেবে দরজা খুলে বাইরে এসে কলটা ধরলাম। কিন্তু দুটো কথা বলতেই মাথার চক্করটা আরও বেড়ে যাচ্ছে বুঝলাম। চোখের দৃষ্টিটাও কেমন যেন ঝাপসা হয়ে আসছে। আর সবচেয়ে ভয় পেলাম যখন, ‘দত্তদা আজ বিশেষ জরুরি কাজে ফেঁসে যাওয়ায় আর যেতে পারছি না’ কথাটা বলতে গিয়ে আমার জিভ জড়িয়ে গেল! তাহলে কি কেকের মধ্যে কিছু…? আর কিছু ভাবতে পারলাম না। চেতনা হারানোর আগে অবধি যেটুকু সময় পেলাম, আঁকাবাঁকা পা ফেলে পড়ি কি মরি করে দৌড় দিলাম। টোটোটা ওখানেই লক করে রাখা ছিল, কিন্তু ওটা নিলাম না যেহেতু বেহুঁশ হয়ে পড়লে একটা এক্সিডেন্ট ঘটিয়ে ফেলতে পারি আমি! বুঝতে পারছি পিছনে দুই মহিলা বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে আছে, আমাকে চিৎকার করে ডাকছেও, কিন্তু পিছু ধাওয়া করছে না। তারপর কীভাবে কতক্ষণ হেঁটে বা দৌড়ে আমি দোলতলার রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের সামনে এসেছি, সিঁড়ি দিয়ে উঠে মন্দিরের চাতালে ধপাস করে পড়েছি আর একেবারে বেহুঁশ হয়ে গেছি, সেসব আর কিছুই মনে নেই। 

ঘুম ভাঙল পরদিন সকালে মন্দিরের নিত্যপুজো করেন যে ঠাকুরমশাই, তাঁর ডাকাডাকি, ঠেলাঠেলিতে। আমাকে ভালই চেনেন তিনি। আমার চোখের পাতা ভারি, মাথায় যন্ত্রণা করছে। তার মধ্যেই ঠাকুরমশাই ভুরু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘কী ব্যাপার হে গুড্ডু, কাল কী হয়েছিল তোমার? রাতের বেলায় ওভাবে নেশা-টেশা করে এখানে এসে হুমড়ি খেয়ে পড়লে? আগে তো তোমার এই অভ্যেস আছে বলে জানতাম না! তা ছাড়া এটা কি এমন আচরণের জায়গা?’ আমি তখন আর বানিয়ে বানিয়ে এটা-সেটা বলতে পারলাম না, সত্যিটাই স্বীকার করে নিলাম। সব শুনে-টুনে মুখটা গম্ভীর হয়ে গেল পুরুতমশাইয়ের। বললেন, ‘আজই ওখানে গিয়ে দেখতে হবে। কী সব্বোনেশে কাণ্ড!’ 

তারপর আমি তো ওখানে গেলাম, বুঝলেন দাদা? সঙ্গে আরও গোটা চারেক বন্ধুকেও নিলাম। ওদের আর বেশি ভেঙে বলিনি সবটা। কিন্তু গিয়ে কী দেখলাম জানেন? আমার টোটোটা যেমন কে তেমন পড়ে আছে, একটা আঁচড়ও লাগেনি, আর ওই বাড়িটার দরজায় একটা ইয়াব্বড় তালা ঝুলছে বাইরে থেকে! জানলা-টানলাও বন্ধ। আমরা ক’জন অগত্যা আশেপাশের একটু দূরে যে ক’টা বাড়ি ছিল, প্রায় সবক’টায় গিয়ে জানার চেষ্টা করলাম ওটার মালিক কে? তা শুনি মালিক নাকি এখানে আসেই না বলতে গেলে। বাইরে কোথাও কাজ করে। কী করে সেটাও কেউ জানে না। তবে হ্যাঁ, গত দু’দিন ধরে ওখানে সন্ধেবেলা টিমটিমে আলো জ্বলতে দেখেছে কেউ কেউ। আর পাত্তাই পাওয়া গেল না ওদের।”

  • “বলিস কী রে? এ তো সাঙ্ঘাতিক কাণ্ড! পুলিশে জানাসনি?”

  • “কী আর বলব দাদা? মেয়েগুলোর না জানি নাম না জানি ধাম, তার উপর আমার তো টাকা-পয়সা কিছু খোয়াও যায়নি, টোটোটাও আস্ত আছে, আবার ওরাও পালিয়ে গেছে। আর আমাকে তো জোর করে ধরে নিয়ে যায়নি ওরা, স্বেচ্ছাতেই গেছিলাম। তাই পুলিশে জানাজানি হলে আমিও তো কেস খেতে পারি!” 

  • “বুঝলাম। কিন্তু এখনও বললি না তুই মোবাইলে এত মনোযোগ দিয়ে কী দেখছিলি? যে কারণে তোকে বকলাম তখন!”

  • “দেখবেন? আচ্ছা নিজেই দেখুন তবে।”

গুড্ডু কান থেকে হেডফোন খুলে ফোনটা লাউডস্পিকারে দেয়, অসিতবাবু দেখেন মোবাইলে একটা হিন্দি নিউজ চ্যানেলে খবর দেখাচ্ছে উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর থেকে এক তান্ত্রিক সহ দুজন কমবয়েসি মহিলা গ্রেপ্তার হয়েছে, তারা সম্ভবত তান্ত্রিকের সাধনসঙ্গিনী এবং তার দুষ্কৃতকর্মের শরিক। তিনজনেই বাঙালি। বাংলা-বিহার-ঝাড়খণ্ড লাগোয়া বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কিছু কমবয়সি যুবক নাকি সম্প্রতি নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছিল ক’দিন ধরে। ধৃতদের জেরা করে জানা গেছে তাদের ভুলিয়ে ভালিয়ে কিছু মাদকজাতীয় জিনিস খাইয়ে বেহুঁশ করত ওই দুই মহিলা। তারপর ঠিক সময়ে তাদের গুরু ওই তান্ত্রিক এসে ছেলেগুলোকে মেরে ফেলে বিশেষ শব সাধনা করত। কোনও একটা সিদ্ধিলাভের জন্য নাকি তারা এসব নৃশংস কাজ করছিল। তবে শুধু অনৈতিক তান্ত্রিক সাধনা নয়, অঙ্গ পাচার চক্রের সঙ্গেও তাদের যোগ থাকতে পারে বলে পুলিশের অনুমান। তদন্ত চলছে। আশা করা যায় আরও বড় কোনও চক্রের হদিশ মিলে যাবে শিগগির। 

খবরটা শেষ হতেই অসিতবাবু স্তম্ভিত মুখে গুড্ডুর দিকে তাকিয়ে থাকেন। গুড্ডু ম্লান মুখে একটু হাসবার চেষ্টা করে। বাড়ি এসে গেছিল, অসিতবাবু নেমে ভাড়া দিতে দিতে শুধু বললেন, “খুব জোর বাঁচা বেঁচে গেছিস রে। পারলে দোলতলার ওই মন্দিরে গিয়ে ঠাকুরমশাইকে বলে একটা পুজো দিয়ে আয়। আর, এরপর থেকে সুন্দরী মেয়ে দেখলেই হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে যাস না, কেমন?”

  • “কী যে বলেন দাদা! নেড়া বেলতলায় ক’বার যায়?” জিভ কেটে টোটোটা ঘুরিয়ে উল্টোদিকে চলে যায় গুড্ডু।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোমা দত্ত

সব্যসাচী মজুমদার

সৌম্যজিৎ আচার্য