নিলয় নন্দী
নিলয় নন্দীর কবিতা ~
গ্যালাক্সি লোকাল ~
ওভারব্রিজ থেকে যে সিঁড়ি নেমে গেল ২ নং প্লাটফর্ম
আমি সেখানেই অপেক্ষায় থাকি সূর্যাস্তের
অবিন্যস্ত গল্পের আদলে মেয়েটি নেমে যায়
গ্যালাক্সি লোকাল ধরে...
আমি মনে করতে চেষ্টা করি খামের রঙ
কে ছোঁবে প্রথম দরজার হাতল
বুকে কদম ফোটে বৃষ্টি ডাকে আয় মেঘ
আমার নাম মেঘ নয়
তাই হতভম্ব আমি চায়ের কাপে ধান বুনি অযথা
অজুহাত শিখি, বাকলে জমিয়ে রাখি হুইসল
পরের ট্রেনের ঘোষণা হলে গুটিগুটি নিরুদ্দেশ হই
এখন আমার কোন অভিযোগ নেই আর
বর্ষাকালের মানে ~
এবার সিঁড়ি উঠে যাচ্ছে চিলেকোঠা ছাদে
দু একটি শামুক, পুরনো গীটার ও ঘন্টা ফেংশুই
শীতঘুম আঁকছে আর বাঁজা নূপুরের ধ্বনি
বেজেই যাচ্ছে এক নিখাদ স্বপ্নদোষে...
স্বপ্নদোষ না স্বপ্নাদেশ এ বিড়ম্বনায় পড়ার আগে
হৈহৈ করে উঠে আসে কাদামাখা চটি
স্থান কাল কল্পনা ভুলে গিয়ে কবি তলপেটে
হাত দেয় অসময়ে ফুটে ওঠে হলুদ গোলাপ
গুপ্তধন ঝোড়ো হাওয়া প্রলয়নাচন
চোখ বুজে থেকো সই পাতালপ্রবেশ আর
চিলেকোঠা চাবি বা অসমাপ্ত আলিঙ্গন
ক্রমেই বদলে যাচ্ছে বর্ষাকালের মানে...
আকাশ মেঘের লিবিডো ~
অসুখ এবং উপশমের মধ্যবর্তী ল্যান্ডিং
সিঁড়ির নীচেই মেঘনার ধ্বংসস্তূপ
তখনো বিকেলের রোদে চূড়ামুখ চকচক
আমি বালি সরাচ্ছি, খুঁজে নিচ্ছি জন্মদাগ
শরীরে স্পর্ধা নেই তবু হাল চষি শ্রাবণ জুড়ে
ভালবাসা শব্দটি ক্লিশে বরং লিবিডো
মেঘ ডাকে। সিঁড়িতে বজ্রপাত হয়।
প্রস্রবণ জুড়ে তখনো জ্যোৎস্নার মালিকানা
'আয়, নীল...'
'এই তো, ফিরছি।'
কাটাকুটি ~
জোনাকিরা পায়ে পায়ে উঠে গেল সিঁড়ি
অন্ধকার ছাদ। তখনো কাপড় মেলা।
জল ঝরে গেলেও মেয়েলী গন্ধ ঝরে যায়নি।
জোনাকি গন্ধ চাটে। উড়ে যায়। ফিরে আসে।
পাখিরাও উড়ে গেছে মহেঞ্জোদারো
বিকিকিনি ছাদে ভাস্কর্য হয়ে আছে প্রতিবেশী যুবা
স্তব্ধ হার্টবিট, অলিন্দে স্ট্র, যেন সেও শুষে খায়
অ্যালার্ম ঘড়ি, নীলরঙা বর্ষাকাল, চটিবই...
যতবার যাই
সিঁড়ির দোলগতি মেপে নিই সন্তর্পণে
গর্ভমুন্ডে এসে বসে মধুলেহী বোলতার ঝাঁক
শ্রাবণের চিলেকোঠা চুপিসারে কাটাকুটি খেলে
কুটোকাটা নেড়ে দেখে আত্মীয়স্বজন
সিঁড়ি ~
যত দ্রুত নামি তত দ্রুত উঠতে পারিনা...
'আয় নীল'...ডাকের পর কখন যে মহেঞ্জোদারো পেরিয়ে প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়াই টের পাইনা। অভিযোগ নেই বলেই ভেসে যাওয়া সহজ করেন কবি।আমিও যত দ্রুত এই কবিতায় ডুবে যাই তত দ্রুত সোমে ফিরতে পারিনা। মাথার ভেতর কাটাকুটি চলতে থাকে শব্দ, চিত্রকল্প আর...খুবই ভালো লাগল।
উত্তরমুছুনপরম প্রাপ্তি
উত্তরমুছুনখামের রং, আমার নাম মেঘ নয়, পাখিরা...মহেঞ্জোদাড়ো
উত্তরমুছুনখুব ভালো লাগলো। প্রতিটি লেখাই।
- রাজদীপ ভট্টাচার্য
প্রাপ্তি রাজদীপ
মুছুনকবিতাগুলি স্বতন্ত্র, আবার কোথাও যেন একসুতোয় গাঁথা। প্রেম আমার খুব প্রিয় অনুভব। তাই অবশ্যই ভালো লাগল এই ধরা-অধরার নিপুণ চিত্রময়তা, শব্দের ব্যবহার ..."জোনাকিরা পায়ে পায়ে উঠে গেল সিঁড়ি" ইত্যাদি মুগ্ধ করলো।
উত্তরমুছুন-পৃথা চট্টোপাধ্যায়
অভিভূত পৃথা
মুছুনশব্দের ব্যবহার বরাবরই মুগ্ধ করে। এবারেও ভালো লাগলো।
উত্তরমুছুনরঞ্জনা বসু
খুশি হলাম
মুছুনদুর্দান্ত! যেভাবে প্রতিটা দৃশ্যপট বদলে গেছে, শব্দের ব্যবহারে, দুর্দান্ত এককথায়!
উত্তরমুছুনঅভিভূত সম্পিতা
মুছুনস্বাতন্ত্র্যে উজ্জ্বল
উত্তরমুছুন