পোস্টগুলি

অক্টোবর, ২০২৩ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

সম্পাদকীয়

ছবি
    বাতিঘর অনলাইন মেঘ পিওন সংখ্যা   "মেঘ পিওনের ব্যাগের ভেতর মনখারাপের দিস্তা, মন খারাপ হলে কুয়াশা হয় ব্যাকুল হলে তিস্তা।" বাতিঘর অনলাইন ব্লগজিনের প্রতি সংখ্যার আলাদা আলাদা নাম থাকে।এবার " মেঘ পিওন সংখ্যা "। নামটা বেছে নিতেই পৌঁছে গেছিলাম প্রিয় পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের বিখ্যাত ছবি ' তিতলি'র শুটিং স্পটে।আঁকাবাঁকা সাপলুডু পাহাড়ি পথ।চুলের কাঁটা বাঁক। একপাশে ঋজু দীর্ঘদেহী ব্যক্তিত্ববান সব গাছ,সবুজে সবুজ।অন্যপাশে গভীর মৃত্যুগন্ধী খাদ,খরস্রোতা উচ্ছলযৌবনা তিস্তা।আর অনিবার্যভাবে মেঘেদের আনাগোনা। পাইন গাছের চিরুনি - চিকন পাতায় পাতায় ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। তিরতির কাঁপন।ভেজা মাটির সোঁদা গন্ধ।মেঘ পাহাড়ের মিঠে খুনসুটি।  ঠিক এমনটাই চাইছিলাম। মেঘ- বৃষ্টি আবহে মুক্তি পাবে বাতিঘরের আপনজনেদের প্রিয় লেখা। হল না।ঘনঘোর মেঘমেদুর বরষায় শ্রাবণ বরিষণ দিনে পারলাম না প্রকাশ করতে। তার জন্য শর্তহীন ক্ষমাপ্রার্থী।এ দায় আমার। বিনম্র স্বরে বলি,' আমার আর হবে না দেরি..'। আমাদের নিয়মিত প্রায় সব বিভাগই থাকছে এ সংখ্যায়।লেখা নির্বাচনে আমরা যতদূর সম্ভব লেখাই বিবেচনা করেছি, লেখক নয়। অনাগতদিনে আরও ক...

বৈজয়ন্ত রাহা

ছবি
   তেমন কিছু নয়    ১ মৃত্যুর মতো ঘুম, অথবা ঘুমের মতো মৃত্যু                                               আসে বারবার  চুম্বনের চারিপাশ জুড়ে নেমে আসে গাছেদের                                             অপার মহিমা,  সূর্যালোক, নদীদের গহীন শিৎকার, পরজন্মে                                    ধুলোদের ক্লান্ত আবহ এইজন্মে বুকে এসে বাজে;                তোমার চোখের মতো আলো তোমার বুকের মতো ঘর,  শালুকের নীল গান                                মূর্তি হয়ে ওঠে অন্তহীন... ২  জানলা খোলাই থাকে, আচম্বিতে ঢুকে পড়ে মেঘ,  ভাঙা...

আরণ‍্যক বসু

ছবি
  আমি বৃষ্টি বৃষ্টি মেয়ে    (বুঝি এলি যার অভিসারে মনে মনে দেখা হলো তারে, আড়ালে আড়ালে দেয়া-নেয়া-- গীতবিতান, ৪৩)   আমার মেঘলা ভোরের আষাঢ়  তোকে কোথায় লুকিয়ে রাখি ?  নদী মহানন্দার তীরে  যেন সাতরঙা এক পাখি!   নরম ডানার একটি পালক  যখন বিলিয়ে দিলি মেঘ  তুই ভিজিয়ে দে না আমার  সব ভয়ার্ত উদ্বেগ !   জানিস ,তুই যে হারিয়ে গেছিস ?  যেতে শিলিগুড়ি রোড ধরে ?  এলি আমার বুকে হঠাৎ  এমন ফিসফিসফিস ভোরে !   ওরে গোপন ,আমার গোপন ,  ছিলাম তোরই প্রতীক্ষাতে !  হলাম বেলাগাম ইচ্ছেতে মেয়ে,  সামান‍্য পাগলাটে !   তুই এমন ভিজিয়ে দিলি  এলো বেহুঁশ বেঘোর জ্বর...  ও মেঘ ,এখন কী যে করি,  ঠোঁটের সবটুকু থরথর !  আমার ভিজলো চোখের পাতা  ভিজে সপসপ লজ্জাতে  তবু ভরা আষাঢ়ের নেশায়  অবিশ্রান্ত বাদল ছাতে !   যখন ঝুলবারান্দা জীবন  যখন ঘরের মধ‍্যে ঘরে  তুই ডাকাত হয়ে এলি  আমার অবাধ‍্য অন্তরে !    আয় খোলা পিঠের ঢেউয়ে  আয় অমার্জিত তীর ...

দেবজ্যোতি রায়

ছবি
    পথ  পিঠে বড়শি নিয়ে ঝুলে পড়লাম যেন  গাজন-সন্ন্যাসী  নীচে আগুন ও হাততালি  সমবেত জনতার দু-চোখে সমীহ  চাহিদা ও জোগানের দাঁড়িপাল্লা নিরালম্ব হতে হতে ডুবে যায় শূন্যের গভীরে  ফকিরের ঝোলা নিয়ে পথে নেমেছেন  উদাসীন মহেশ্বর।  ঝোলার ভেতর জ্যোৎস্নার থৈ থৈ  আকন্দ ফুলের গন্ধ, প্রাক্-ইতিহাস  পাখিদের গানে কাঁপে পথের হৃদয়।  জনপদ পার হয়ে পথও চলেছে  পদ্মপাপড়ির দিকে।  অন্ধ সময়ের চোখে একটি একটি জ্বলে উঠছে মাটির প্রদীপ।

শমিত মণ্ডল

ছবি
   আষাঢ়ের ইতস্তত মেঘ  আষাঢ়ের ইতস্তত মেঘ আকাশে আকাশে তাই নদীটি শান্ত--- প্রায় স্থির জল  না, নদীটি আপাত শান্ত। জলেডোবা পাথরে শব্দ হবে প্রথমে, ছোট ছোট নুড়ি, বড় নুড়ি --- শুরু হবে এদের চঞ্চলতা কেননা পাহাড়ের জল নেমে আসবে সমতলে তাতে মিশে থাকবে পাতালতার ঘ্রাণ  উঠবে পড়বে ঢেউ,জলঘূর্ণি ঘুরবে  এই জল শুনেছে দূর সমুদ্রের গান। আত্যন্তিক মোহনার টান... এখন নদীর জলে পাকুড়ের ছায়া।

তৈমুর খান

ছবি
    একটা নীল মেঘ পতাকা উড়িয়ে দিয়েছে   এসো, গড়িয়ে যাই  ভোর হয়ে গেছে কবে  আমাদের আলোগুলি জলে জলে ছড়িয়ে দিয়েছি  মনোরম জল আজ  ভাঙা ও ধূসর মনের হ্রদগুলি জুড়ে বয়ে যাক  প্রশান্তির হাঁসগুলি ঝাঁক ঝাঁক নেমে এসেছে  আজ কোথাও ক্লান্তি নেই  সব গাছ ক্লান্তি রঙের ফুল ঝরিয়ে দিয়েছে  এক একটি হাত বৃহৎ হাত হয়ে ডেকে নিচ্ছে আমাদের  পাহাড়ি কন্যাদের ঘুঙুর বেজে উঠছে ঘন ঘন  চলো, গড়িয়ে যাই  নবজাগরণের দেশে একটা নীল মেঘ  পতাকা উড়িয়ে দিয়েছে

উপাসনা সরকার

ছবি
   প্রেম বেঁচে থাক বৃষ্টি হয়ে  শহর শুধুই বর্ষাবিলাস?অঝোর তুমি ভিজবে কবে? পথ হারিয়ে ঘাস মাটিতে কোলাজ বুঝি এমনি হবে?  উদযাপনে মনটি তোমার কেনই রাখো শূন্য করে একই ক্যাফে,ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট, এতেই তোমার মনটি ভরে?  না না ওসব আজ তবে থাক,দু হাত পেতে বৃষ্টি ধরি এই বর্ষায় প্রেম হবে না,মানবে না তো বৃষ্টি পরী  আলপথ আর বৃষ্টি টাপুর,নূপুর আমার তরঙ্গ জল আসমানী রং শাড়ি দিয়েই মিটবে সেসব,তাইনা রে বল  দুই চ্ছত্র মনের কথা বর্ষা এলেই নৌকো গায়ে শুভমিতা খুব গেয়ে যান বৃষ্টি কেমন পায়ে পায়ে  সিটটি ট্রেনের,জানলা গোপন,খাতার পাতায় মুক্তো ঝরে প্রেম বেঁচে থাক বৃষ্টি হয়ে,,বিলাসব্যথায় না হয় ভরে

সোনালী মিত্র

ছবি
    রাজধানীনামা  অবশেষে এ রুখাশুখা পরদেশে; বর্ষা এসেই গ্যালো।ফিনফিনে ছাতার নীচে একজোড়া কপোত-কপোতির অবাঙালী ঠোঁট ছুঁয়ে মুঘল বাগিচায় স্লিমফিগার নিয়ে বর্ষা এল। এই রুক্ষ দেশে তো সেভাবে কোকিল ডাকে না! তীব্র এক এড়ে জাঠের ছাদে জল মাখামাখি হয়ে হাওয়ার তোড়ে একা ব্রেসিয়ারটি তোলপাড় হতে থাকে। ঠিক যেন মুহূর্তের উড্ডীন পাখি,ডানায় কোটরে তার গোটা বছরের ধূল-মিট্টি । যেইসমস্ত খিড়কি সর্বদা বন্ধ থাকে অন্ধকারের দিকে, মেট্রোপলিটন অযথা ধোঁয়া বা ধোঁকা থেকে বাঁচতে, জলসোহাগে সেসব ঘরের স্ট্রিপলেস অত্যাধুনিকারা কলকল করে এখন ভেসে বেড়াচ্ছেন মেঘ ডিঙি চড়ে।  #  আশ্চর্যজনক ভাবেই এ খরা ভূভাগে গালিবের  শের মুর্ছনা এবং শিখ দরগার পাঠ একে অপরের ঘামের গন্ধ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে। মাঝখানে এক এক টুকরো  শিল্পিত ঝমঝম মন্দির,টেরাকোটা ঝলমল।ছলছল জলরেণু ধর্মহড়কানো পোষ্টার , অসহিষ্ণু বিজ্ঞাপিত হরফের খুশবু ভুলে হড়হড় করে ঢুকে যাচ্ছে দেওয়ালে গেঁথে রাখা মানচিত্রে। দুষ্টজলের দাগ প্রেমিকার সাদা স্কার্ফে লেপ্টে গেলে উড়ে আসছে টেলিভিশনের ঘরোয়া বিজ্ঞাপনে," দাগ আচ্ছে হ্যায়"।  #  পরকীয়ার...

কৌশিক চক্রবর্ত্তী

ছবি
    অহল্যা ও শ্যাওলা কুড়োবার কথা সেই অন্তরঙ্গ মুহূর্তে আমি ঘাসফড়িঙের নির্মমতা বিবেচনা করিনি আমি ভেবেও দেখিনি যে কিভাবে তোমার শরীরে মিশে আছে মৌমাছির ছায়াশরীর এথেন্সে মেঘ জমলে কলকাতার বুকে চন্দ্রবিন্দুর সংযম  তুমি ফিরে গেলে ট্রাফালগার স্কোয়ারে বৃষ্টি নামবে তখনই মার্ক টোয়েনের বিপর্যস্ত হাতে অন্ধকার কবিতা। অনড় মুদ্রাভঙ্গী।  এই তো একসাথে শ্যাওলা কুড়োবার কথা ছিল- কুড়িয়েছি কিছু- অজানা গন্তব্যের কাছে সবুজ করে তুলেছি পা।  এসো অহল্যা- এই 'এসো' মানে তোমাকে ফিরে যাবার কথা বলছি না। বরং না মাড়ানো রাস্তায় ফেলে রাখছি ভিজে চাঁদের অপর্যাপ্ত মাটি।

শ্রাবণী গুপ্ত

ছবি
   উত্তরীয় কেন যে শ্রাবণ আসে— কেন হৃদে বেজে ওঠে বর্ষার রাগ! ফুল থেকে ঝরে পড়ে সমস্ত পরাগ, ঝরে যায় ফুল বৃষ্টি তুমুল! ভাবি— কীভাবে ফুলের থেকে ভেসে আসে রেণু  আর— রেণুর বিভাব লেগে রঙে রঙে সমস্ত শ্রাবণ... ভিজে যায় ঘাস, ভেজে মাটি দেখি  তোমাকে ভাসাতে এসে  আমাকেই ডুবিয়েছে স্মৃতির জামাটি।

মঞ্জরী গোস্বামী

ছবি
   শ্রাবণনামা মেঘ নেমেছে বুকপকেটে  ভিজছে সাদা খাম শ্রাবণ কোনও কাজল চোখের বাপের দেশের নাম ব্যস্ত হাতের শাঁখা পলায় কাঁচের চুড়ির দিন চুড়িওয়ালা চলে গেছে রঙিন ফিতের ঋণ ফিতার মত পথ গিয়েছে বাবলা তলা দিয়ে কালো জুতোর দল এসেছে ঝড়ের খবর নিয়ে ঝড় ওড়াবে পালক পানা এক্কা দোক্কা মন মনকে বেঁধে রাখতে কত ধনুক ভাঙা পণ বাড়ির পাশের নদীর ছিল বাঁকা ধনুক টান শ্রাবন নামায় চোখের কোলে নিষিদ্ধ  আনচান বাদলা দিনে কে গো মেয়ে খোপায় অভিমানী তোমার বুকের কদম ফুলের পরাগ হতে জানি তোরঙ্গ আজ খুলেই দিলাম যা ভাসিয়ে যা বাবা মায়ের মেঘলা খুকুর কাগুজে নৌকা

রবীন বসু

ছবি
    আষাঢ়ের কথা  তোমাকে বলেছি কি সেই আষাঢ়ের কথা?  সেই মেঘভাঙা বৃষ্টির কথা? মনোহর দাস তড়াগ থেকে যে কুমারী হাওয়া বৃষ্টিভেজা হয়ে এইমাত্র উঠে এল শহরের  কংক্রিটে, তাকে কেউ স্পর্শ করেছে?  জঙ্গল অতিক্রম করে যে শালপাতার সবুজ আমি তাকে বৃথাই বর্ষার গান শোনাতে চাই সে তো কবেই ভিজে জবুথবু।  আঁধার আবছায়া ঘাটে যে মাঝি নৌকো নিয়ে ভিজে যাচ্ছে বহুক্ষণ যাত্রীর প্রতীক্ষায় আমি তার অপেক্ষার কাছে নতজানু।  তোমাকে বলেছি কি সেই আষাঢ়ের কথা?  এই আচমকা জলেডোবা কলেজস্ট্রিট চত্বরের  কথা? কফিহাউসের ধোঁয়া, কবি কবি গন্ধ আর গাঁজাভরা সিগারেট চেয়ে খাওয়া বান্ধবীর কাছে…  তোমাকে বলিনি সেই শর্তের কথা, কানে শোনা: 'তিনটে কদমফুল যদি এখনই এনে দিতে পারো,  তোমার প্রপোজ আমি ভেবে দেখতে পারি।' হাওয়া খবর দিল, মধ্য নয় দক্ষিণ কলকাতায় যাও গড়িয়াহাটের কাছে গোলপার্ক, লেকের ধার… থোকা থোকা কদমফুল ফুটে আছে তোমাকে বলতে ভুলে গেছি, শুধু তোমাকেই– সেই আষাঢ় মাস, জলমগ্ন কলকাতা,তিনটে কদমফুল এখন কাকভেজা ছেলেটির স্মৃতি থেকে উধাও…

সুরজিৎ বেরা

ছবি
    নদীর পাড় তরু ক্ষয় দিনে                 কূলে আঁকা ট্যারা ব্যাঁকা ঢেউ ছুঁলে  মনে হয়— প্রত্যহ এমন ছুঁয়ে দেখি, কে কেমন                          রেখেছে তার স্নেহধন্য — নদীর পাড়। কোথাও পাথর-নুড়ি, কোথাও কাদামাটি                          শীতলপাটি                                         দাগ                                             মৃৎ-চোরা বেহাগ!  তরু ক্ষয় দিনে                 কূলে দুহাত সমর্পণে — অশ্রু ঋণী ঠুঁটো জগন্নাথ...

তিতাস বন্দ্যোপাধ্যায়

ছবি
    জঙ  আরেকবার, ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করতেই মনে হল- আদি জন্তুর চিৎকারে কেঁপে উঠবে বনভূমি। শাসকের গভীর মনোযোগ গিয়ে পড়বে বহু পুরনো বিলে। বিলের পাশে একটি সারস চকচকে ঠোঁটে মাছের আঁশ ছাড়িয়ে নিচ্ছে বিলকুল।  হাঁটু জন্তুর চিৎকারে,  সারসের ঠোঁটের আঘাতে  জড়সড়।  মৃত মাছে, আঁশে - ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করতেই জানলাম  'ফেরা' শব্দে জঙ ধরে গেছে। 

মৌসুমী রায়

ছবি
   একটি অ-পূর্বরাগমূলক কবিতা আর কত সুধা দেবে, বুক পেতে পৃথিবী?  এবার বুক চিরে আগুন উগড়ে দিক।  গলিত তরল লাভা।   পুরুষ, তোমার উত্থিত দন্ড নামিয়ে রাখো।  নতজানু হও ।  চরাচর ব্যাপী ঝড় উঠছে।  টের পাওনা?  সামলে নাও মাস্তুল দড়ি পাল। অনায়াস নোঙর করবে বলে এতকাল যে নরম পলি চষেছো প্রবল আশ্লেষে,  পাথুরে বিপ্লবে সে আজ অগ্নি শীলা।  ভেঙেচুরে গুঁড়িয়ে যাবার আগেই মেনে নাও, তুমিও ভুল করো।  শুধু ভুল?  নগ্নতা মিছিলে পুরুষ, তোমার মা বোন স্ত্রী কন্যা থাকেনা?   কতদিন মাকে মনে পড়ে না তোমার?  কতদিন ভুলেছো, বোনের দেয়ালা? স্ত্রীর প্রিয়নাম সম্ভাষন, কন্যার মাতৃ মুখচ্ছবি?  কবে ভুলেছ মেয়েরা তোমার ঈশ্বরী?  পরমা প্রকৃতি!   যোনি জঙ্ঘা বক্ষদেশ রক্ত মাংসসার তুলতুলে ধর্ষণপুতুলেরা ধীরে ধীরে জাগছে। হাতে তাদের শাণিত ত্রিশূল।  চোখে অগ্নিবাণ।  থমকে দাঁড়াও পুরুষ ইতিহাস তোমাকে ডাকছে...

পৃথা চট্টোপাধ্যায়

ছবি
    ডাক নাম  ১ তুমিও কৃপণ হবে এতো শ্রাবণের মেঘ ? আজকে আকাশ দ্যাখো কেমন পান্ডুর হয়ে আছে । উঠোনে  দাওয়ায় আল্পনা এঁকে, আহা লিখেছে মনের কথা কেউ। নীরবে তাকিয়ে ভাবে আরো দূরে কবেকার ফেলে আসা সীতেহার গ্রাম, দু'চোখে গোপন করে কাজল দীঘির ঢেউ,  সেই ডাক নাম  ২ কতদিন আসো নি এ পথে, উড়িয়ে শণের মত চুল রুখুশুখু মুখে তোমাকে খুঁজেছে কত সেও। ঘোর অন্ধকারে একটি বাতির আলো টিমটিম জ্বলে, কী গভীর জ্বর সেই দেশে। চাপা কান্নারা ওড়ে সে বাড়ির গুমোট বাতাসে । এমন চাষের দিন কখন ফুরোয় , ধান ওঠে , ভরা বর্ষায় বাড়ে জল। গভীর নাভির কাছে কে রেখেছে ঠোঁট, ছুঁয়ে গেছে ডাগর ডালিম , তাকে দেখিবার কত ছল ৩ ধৈর্য্য নেই তার অরণ্যের অধিকার  তুমিও তো জানো এটুকু যদি  না বোঝো  কী জানলে এতদিনে?  প্রতিদিন কত ফুল ফোটে সবার কি নাম জানে কেউ  খবর কে রাখে  নিজের বাগানে রোজ জল দাও দেখে রাখো কোন গাছে কতগুলো কুঁড়ি  ৪ এত ভালোবাসা  সব কিছু মিথ্যে? বলো তুমি?  কেন এত টান অবিরাম  তাহলে ডাকো নি কেন তোমার সভায় আমিও দেখতে চাই কাছে থেকে  কীভাবে বলছ কথা,  চোখ দুটি কেমন ক...

রূপক চট্টোপাধ্যায়

ছবি
    জলচর গ্রামীণ দেবতার বশ্যতা অস্বীকার করে শিল্পের ঘোড়া গুলি টেরাকোটা খুলে  জলে নেমে যায়। মরা জোৎস্নায়!  নদীর জল জ্যামিতিক নকশায়  বোবা তৃষ্ণাকে জাগিয়ে রাখে  বুকের উথালে পাথালে!  ঘোড়াগুলি  অভিশাপগ্রস্ত হয়,  দেবতার তীক্ষ্ণ রোষানলে পড়ে।  পরজন্মে তারাই বিনিদ্র মাঝি,  রূপোলী মাছের সন্ধানে মানব জীবন  জলচর করে নেয়!

দেবশ্রী দে

ছবি
    বৃষ্টির মতো মেয়েটি   বৃষ্টির মতো মেয়েটি হেঁটে গেলে জল হয়ে যায় চোখের উঠোন  তুমি তো কয়েক পা চুমুক দিয়েছ পেয়ালা ভরেনি বলে নিজের ভিতরে জ্বেলেছ আগুন  ঘুম ছুঁয়ে বলো আর কত দূরে গেলে মেঘ হতে পারো

ঝুমা গঙ্গোপাধ্যায়

ছবি
  পরিত্রাণ নেই  আমি মুন্ডমালিনী, না, বলতে শিখিনি বলে প্রেমিকেরা আজ গলায় ঝোলে  হাওয়ায় বসন উড়িয়ে আমি শ্যামাঙ্গী,  শিবেদের ছদ্মবেশ দেখি, খিস্তি খেউড় দেখি,  অভিমান ভুলে, স্তনামৃত পান করাই,   সঞ্চয় শেষ করে সবাই চলে যায়, কোজাগরী পূর্ণিমা আমায় অসহায়  আত্মপ্ররোচনায় লিপ্ত করে, অথচ পুনর্জীবন চাইছি বলে সব অপরাধ তুচ্ছ করি,  ছটফট্ করি তোমাদেরি দ্রাক্ষাবনে,  আমার সন্তানেরা ইস্কুলের খাতা জুড়ে পাখিতে রং মাখায়, খাতায় কেমন আকাশ পাতা, আমার জারিজুড়ি সব মিথ্যে হয়ে যায়, পরিত্রাণ নেই   আমার ইড়া পিঙ্গলা জুড়ে ছেঁড়া ছেঁড়া কামসূত্রের স্ত্রোত্র,  পুনর্জন্মের ইচ্ছে বুকে নিয়ে আমি এক পলাতক কবি, অস্ত্র নেই, অর্থ নেই, আত্মহত্যা নেই, শত রূপে, শত নামে আমি বেশ্যা হয়ে উঠি বিশ্বায়নের মহামন্দ্র তানে।                           

সুস্মিতা গোস্বামী সরকার

ছবি
    বিষাদ বর্ষা গভীর নীল মেঘ আসুক, ধারাপাতে বর্ষার নামতা সিঁড়ি ভাঙা বিদ্যুৎ লাফ দেবে মাঠের বুকেই  অগুনতি রেফ জানলার কাঁচ বেয়ে ঘন আষাঢ় চেনা চেনা বেল ফুলে কামিনীর থোকায় থোকায় ভরা যৌবন জল  হাসনুহানার নীচে শঙ্খ লেগে মিলে যায় সর্পিল জীবন..।  এ সব জল ছবি ছায়া ঘেরা সোঁদা মন কেমনের  উন্মনা বালিকা বেলা খুঁজে ফেরে চোখের প্রশ্রয়  কাজল বুলিয়ে যায় গাঢ় ঘন আষাঢ় শ্রাবণ..  ঝরে যায় না পাওয়ার টপটপ জল ! এসেছিল সে, তবু ..কথায় কথায় কেটে গেছে মেঘদূত কাল.. ভুল বোঝা অলকায় ক্ষয়ে গেছে জীবনের সমস্ত ঋতু! দুই পারে নির্বাণ সেতু.. মোক্ষের বোধি বৃক্ষ...  পৃথক বলয়ে নির্মোক

পবিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়

ছবি
    শ্রাবণবর্ষণসঙ্গীত মাথার মধ্যে বৃষ্টি নামলে আকাশে কতটা মেঘ জমছে তা আর দেখিনা । প্রাক্তন প্রেমিকরা সব ভিজতে ভিজতে এসে জড়ো হয় । কারো বর্ষাতি নেই , ছাতা আনতেও ভুলে যায় কেউ কেউ। আমার মতোই তো সব ক্ষ্যাপা কিন্তু পাগল নয় । সবাই মিলেই দেখি শ্লেট রঙে ডুবে যাচ্ছে চরাচর আর আমরা ভিজে যাচ্ছি তো যাচ্ছিই। মাঝখানে অবধারিত এসে পড়লেন রবীন্দ্রনাথ,  শ্রাবণবর্ষণসঙ্গীত । মাথার মধ্যে বৃষ্টি নামলে আকাশ দেখতে লাগে না। সে তখন সামনের পাহাড়ে নিজে থেকেই নেমে আসে, জঙ্গলে পথ হারিয়ে যাওয়া আমরা তখন সেই অজানা পাহাড়ের দিকেই হেঁটে যেতে থাকি  । শ্রাবণবর্ষণসঙ্গীত বেজে যাওয়া ওই পথে তখন সব অতীতই ধীরে ধীরে বর্তমান হতে থাকে ।

সাহানুর হক

ছবি
   বান্ধবীর ফোন এলে   আধো ঘুমে পিয়ানো বাজাই ভাবনার সে কতটা আগুন, সে কতটা পানি! অবাক স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকে রেলগাড়ি জীবন গভীর শৃঙ্খলা চুঁইয়ে পড়ে একা করে চলে যাওয়ার ভয় জ্যোৎস্নাবিহীন অন্ধকারে মোমবাতির আলোয় মুগ্ধতা খননে অজস্র বুকের হাড়ের চুরমার শব্দ হাওয়ায় শুনতে পাই  চাষী নই তবু যেন চাষ করছি এমন বিষাদ মনের জমিন খুঁড়ে খুঁড়ে বের করছি আলেখ্য পৃথিবীর বিভিন্ন ঈশ্বরকে আমাকে আহতকারী সমস্ত দ্রবীভূত ভাবনাদের অপেক্ষার বিপরীত দিক থেকে জ্বালাতে দেখি দূরূহ বিরহের অগ্নিশিখা বান্ধবীর ফোন এলে ধ্বংসাত্মক মনে হয় এই সবকিছুই!

বিশ্বজিৎ বাউনা

ছবি
   মেঘপিওনের কাছে শ্রাবণ-ভাঙা জল নিয়ে আজ লাফিয়ে উঠে মাছে স্মৃতির রোশনাই ভিজে যায় সব মজ্জার মাঠে। মৌল প্রেমের অক্ষর রাখা মেঘপিওনের কাছে, মাঝে মাঝে রোদের চকমকি জ্বলে এই তল্লাটে।  সবুজ পাতা থেকে পিছলে যায় পরিযায়ী ঘুম, ক্রান্তীয় বাতাসের ঠোঁটে চলকায় রাধা-রং প্রেম। চাতকের খুলি জুড়ে মগ্ন সেঁতসেঁতে মরশুম... আজ বীজের বৈঠা ঘিরে বুঁদ জৈব জলের ফ্রেম।  মনের মাদলে বেজে ওঠে ঝিরিঝিরি জলঝারি... জলের সোহাগে বক ভিজে রেখে যায় নতি ডানা। শ্যামলা কন্ঠার তিল ঘিরে প্রেমিকও হতে পারি, আজ ভালবাসার গায়ে লেখা খালি দ্রাব্য ঠিকানা।  বাষ্পীয় উড়ান ধ্যান হয়ে জেগে আছে প্রতি গাছে, জলের অক্ষর লিখি..., নিও মেঘপিওনের কাছে।

মীরা মুখোপাধ্যায়

ছবি
    শ্রাবণী পূর্ণিমার কবিতা  বেস ক্যাম্প ধুয়ে যাবে বরফের দুধে এবং বৃষ্টি নামবে, এরকমই ঠিক ছিলো। তা বৃষ্টি নামলো না এবছর, যাত্রীদের শেষ দলটি এসে পৌঁছেছে এইমাত্র  কাঠ জ্বলছে চটির এক একপাশে,  আগুনে কেমন পার্ফিয়্যুমের গন্ধ  সবাই আগুন ঘিরে বসে, চা ফুটছে  বেস ক্যাম্পের বাইরে পূর্ণিমা গলছে, গলে পড়ছে... সম্পূর্ণ অপরিচিত যে দুটি যুগল  বৃষ্টির শব্দের মধ্যে বলতে চেয়েছিল কিছু   বৃষ্টি নামল না বলে বলতে পারল না একসময় সবাই ঘুমিয়ে পড়ল এবছর পূর্ণিমায় আশ্চর্য ! বৃষ্টি হলো না ব্লান্ট ইনস্ট্রুমেন্ট  প্রতিবারই সেই  রাত পোহানোর জন্যে অপেক্ষা আর ঘটা করে সকাল হবার সাথে সাথেই কয়েকটি সমুদ্রসাপ তাদের বিষাক্ত থুতু  ছুঁড়ে দেয় নুলিয়া ও স্নানার্থী মেয়েদের দিকে। মেয়েরা জানে না যে বয়ঃসন্ধির নুলিয়া ছেলেটা স্বপ্নেও সাপ দেখে, মেয়েছেলে কাস্টমার মানেই জলের ভিতরে সেই গা ছমছমে ভয়..... চিৎ উপুড় যেভাবেই ভাসাও তাদের জলের গভীরে গেলে সেই সাপ আর ভোঁতা অস্ত্রের কথা মনে হয়

কুশল মৈত্র

ছবি
    বাবা - ৬  আজকাল রাতে আর ঘুম আসে না জেগে থাকি পেঁচার তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে  বাবার জ্বলন্ত চিতাকাঠ বুকবারান্দাতে  ফুরিয়েও কিছুই ফুরায় না।  হারানোর বেদনা কুরে কুরে খায়  স্মৃতির অন্তরায় নিরবচ্ছিন্ন কুয়াশা  ছায়া শরীর বাবা হাওয়ার দুলুনিতে  সবই ভারী অন্ধকারে ছয়লাপ।  জল আসে মস্তিষ্কের গরল থেকে  বালিশ ভিজে যায় অনিশ্বর  বাবা গঙ্গায় ভাসানো নাভিমূলে ঈশ্বর  স্মৃতি আয়নায় জন্মপঞ্জিকায় বৈরাগ্য সংগোপন...  বাবা - ৭  চোখের আড়াল হলে  মনে পড়ে শুধু তোমাকে  শতসহস্রবার ডেকে চলি  ধুলোয় হাওয়ায় অদৃশ্যান্তে পূর্বাপর  বিভঙ্গ আয়নায় ছায়াশরীরে  তোমার কথা ভেসে আসে সশব্দে  ঘরখানি গমগম করে এখনও  তোমার গায়ের গন্ধে বাবা...