অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায়




সাদিয়াবাদের গল্পকথা
✤✤✤✤✤✤✤✤✤

'সাঁঝের আঁধারে,কভু প্রাগুসায়,
শাহ শ্রীমনের যে মকবরায়..
কালপেঁচা এক, চূড়ায় বসে।
আর বলে,অন-বান-শান..
গেলো সে কোথায়? গেলো সে কোথায়'?
-ধন-যৌবন হলো ক্ষণস্থায়ী ! গর্বের স্থায়িত্বও তো ক্ষণস্থায়ী ! 

চাঁদনী রাতে জাহাজ মহল
মান্ডু হলো একটা অভিজ্ঞতা। এখানে প্রকৃতির উদ্বাত্ত সৌন্দর্য আর মাধুর্য মিশে গিয়েছে ইতিহাসের স্মৃতির সাথে। একসময়ের সদাব্যস্ত ঘটনাবহুল নগরীর পরিত্যক্ত ও মৃত নগরীতে পরিণত হয়ে যাওয়া আর বাজবাহাদুর-রূপমতীর রোমান্সের করুন পরিণতি ...মান্ডুর ইতিহাসের অনবদ্যতা অনুভব করতে হয়। উপভোগ করতে হয় নিজের মনন দিয়ে। ভোরের আলোয় আপনি যখন রূপমতী মহলে এসে বসবেন, পুবের আকাশ তখন সবে লাল হচ্ছে, শুনতে পাবেন তানপুরা আর সারেঙ্গির সাথে ভৈরবীর আলাপ... 
-সেকি, রূপমতীর কণ্ঠ ! ১৫৫৪ সালে মালোয়ার সুলতান সুজাত খানের মৃত্যুর পর ১৫৫৫ সালে সুলতান হলেন বায়াজীদ খান। নাম হলো বাজবাহাদুর। শিকারে গিয়ে রূপমতীর গান শুনে সুলতান পড়লেন তাঁর প্রেমে। কিন্তু রূপমতী শর্ত দিলেন, সুলতানের সাথে প্রাসাদে যাবেন বটে কিন্তু যেখানে যাবেন সেখানে তাঁর নর্মদা নদীকে চাই। রাতারাতি সুলতান গড়ে তুললেন রেবা কুন্ড, নর্মদা নদীর জল এসে মিশলো সেই কুন্ডে। গড়ে তুললেন 'রূপমতী মহল', আগে যা নাকি ছিল সেনানিবাস। প্রতিদিন, সূর্য ওঠার আগে, ভোরের গায়ের মৃদু সুগন্ধে মহলের সামনে নিমারের উপত্যকা যখন ভারী হয়ে থাকতো, পাখিদের ডাক আর ভোরের গন্ধ মাখামাখি হয়ে এক স্বপ্নিল দৃশ্য তৈরী করতো... রূপমতী যেতেন সখী পরিবৃত হয়ে রেবা কুন্ডে। ছিপছিপে শরীর আর বাঁধ না মানা চুল, কর্পূর-জাফরান-আতরের খুসবু মাতাল করে তুলতো আফগান নবাব বাজবাহাদুরের খুদাতালার তখত। রাজকার্যের থেকে সুলতান বাজবাহাদুর পছন্দ
ভৈরবী রাগের ঝনহকারে হিন্দোলা মহল
করতেন সংগীত। সুলতান নাচেরও সমঝদার ছিলেন। গান-নাচ আর আমোদ-প্রমোদে ভেসে গেলেন বাজবাহাদুর আর রূপমতী
'প্রেমের ও জোয়ারে'
তাকিয়ায় হেলান দিয়ে, আলবোলার সুবানি তামাকের গন্ধ আর লাজুক রূপমতীর লাজুক দৃষ্টি ও তার সাথে মেঘমল্লারের আলাপ, মান্ডুর জাহাজমহল যেন তখন মেঘযান...আকাশে উড়ে চলেছে। কিন্তু সকলের অজ্ঞাতসারে মালোয়ার সুলতানিতে ঘনিয়ে এলো অন্ধকার। ১৫৬১ সালে আধম খাঁ ও পীর মোহম্মদের সেনাপতিত্বে মুঘল শাহেনশা আকবর আক্রমণ করলেন মান্ডু। বাজবাহাদুর চললেন যুদ্ধক্ষেত্রে। যে হাতে তানপুরা ওঠে, সেই হাতে কি তরবারি ধরা যায়? সারংপুরের কাছে ওই যুদ্ধে পরাজিত হলেন বাজবাহাদুর। ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলো সুলতান বাজবাহাদুরের সেনাবাহিনী। বাজবাহাদুর যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে গেলেন। অরক্ষিত মান্ডুতে পড়ে রইলো তাঁর রাজ্যপাট, ধনরত্ন, হারেম আর তাঁর 'দ্য লেডি অফ লোটাস'...পদ্মবালা রূপমতীসুলতানের যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার খবর আসার সাথে সাথে মান্ডুর রাজপ্রাসাদে ঘটে গেলো এক নৃশংস ঘটনা। যুদ্ধে যাবার আগে বাজবাহাদুরের নির্দেশ অনুযায়ী নির্দয় হত্যালীলা শুরু হয়ে যায় মান্ডুতে। সুলতানের হারেমে চলে সেই হত্যাকান্ড। বাজবাহাদুরের সম্মানের কাছে কয়েকশো স্ত্রীলোকের জীবনের মূল্য আর কতটুকুই বা হতে পারে ! সুলতানের 'ইজ্জত'এর দাম দিতে হবে না ! রেহাই পান নি রূপমতী, প্রাণে মরলেন না কিন্তু আহত হয়ে মান্ডু ছেড়ে তিনি তাঁর ভাইদের কাছে পালিয়ে গেলেন। মান্ডুর প্রাসাদে পৌঁছে বিজয়ী আধম খাঁ খুঁজে পেলেন না রূপমতীকে। জানতে পারলেন রূপমতী চলে গেছেন ধরমপুরীতে তাঁর ভাইদের কাছে। রূপমতীর খোঁজে ছুটে চললেন তিনি ধরমপুরীর দিকে। বাধা দিলেন রূপমতীর ভাইয়েরা, আধম খাঁর হাতে তাঁদের মৃত্যু হলো। আধম খাঁর আদেশে রূপমতীকে আবার নিয়ে আসা হলো মান্ডুর রাজপ্রাসাদে। ধীরে ধীরে রূপমতী সুস্থ হয়ে উঠলেন। আধম খাঁ রূপমতীর কাছে প্রেম প্রার্থনা করলেন। 
আধম খাঁর হাতে পরাজিত হয়েছেন তাঁর প্রেমিক বাজবাহাদুর, যে ছিল তাঁর চোখের মনি। এই আধম খাঁর হাতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর ভাইদের, কি করে তিনি আধম খাঁর প্রেম প্রস্তাবকে মেনে নিতে পারেন। আধম খাঁকে বললেন, 
আমাকে পাওয়ার আশা কোনও দিন পুরবে না আপনার। বললেন বটে, কিন্তু বুঝতে পারছিলেন পালাবার আর কোনো পথ খোলা নেই তাঁর কাছে। আধম খাঁর অঙ্কশায়িনী হওয়াকে রোধ করার আর কোনো উপায় তাঁর কাছে নেই। দিন যায়,
্রানী রূপমতীর নূপুরের ধ্বনি
উতলা হয়ে ওঠেন আধম খাঁ। রূপমতীর জন্য পাগলই হয়ে গেলেন তিনি, আজ একটা হেস্তনেস্ত করবেন... আদেশ দিলেন রূপমতীকে সাজাতে। হুকুম করলেন মহল সাজাতে... আলোয়, ফুলে, গন্ধ ওড়াতে, আতর ছড়াতে। আজ হবে তাঁদের মিলনের রাত। বসলো মেহেফিল... বীন আর আফগানী রাবাবের বেদনার মূর্ছনা সেদিন ছড়িয়ে পড়েছিল মালোয়ার পাহাড়ে পাহাড়ে। আর! রূপমতী দাসীকে আদেশ দিলেন, তাঁকে সাজাতে। ঠিক সেই রকম করে, যেরকম করে উনি যেতেন তাঁর প্রেমিক বাজবাহাদুরের কাছে! বাজবাহাদুরের সাথে বিয়ের রাতে যেরকম ভাবে সেজেছিলেন, সেই রকম ভাবে তাঁকে সাজাতে বললেন তিনি। হাতে তুলে নিলেন তানপুরা...গেয়ে চললেন শেষের গান। মালোয়ার পাহাড়ে পাহাড়ে অনুরণিত হতে থাকলো সেই বিদায়ের গান। হিরেচুর বিষ খেয়ে নিলেন তিনি...এক বিধুর হাসি ছড়িয়ে পড়লো তাঁর মুখে। উন্মত্ত মুঘল সেনাপতি আধম খাঁ এসে দাঁড়ালেন রূপমতীর মহলে। দেখলেন,কালো চুল আর সব রূপ নিয়ে রূপমতী শুয়ে আছেন তাঁর বিছানায়।
 
আমীর খসরু যথার্থই বলেছিলেন, আমি যখন থাকবো না পৃথিবীতে, তখন এই পৃথিবীর মাটিতে আমার কবরটি কোথায় আছে খুঁজতে যেও না তোমরা, দোহাই তোমাদের ! কারণ প্রতিটি বিশ্বস্ত হৃদয়ই আমার স্মৃতিফলক”
মান্ডুর কয়েক শতাব্দীর ইতিহাসে একাধিক সুলতান, সেনাপতি ও বেগম এসেছেন আবার চলেও গেছেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে সামান্য সময়ের জন্য এসেছিলেন বাজবাহাদুর ও রূপমতী। আজ মান্ডুর রূপমতী মহল হলো তাঁদের স্মৃতিফলক। মান্ডুর খাঁ খাঁ শহরে, প্রাচীন রিক্ত সৌধে কিংবা মান্ডুর বিশাল তালাওয়ের জল যখন হাওয়ায় ঢেউ তোলে অথবা অজানা কবরের ওপরে শুকনো ঝরা পাতা যখন হাওয়ায় উড়ে যায়...অনুরণিত হতে থাকে রূপমতী ও বাজবাহাদুরের নাম। এ এক দারুণ অনুভূতি, ছমছম করে ওঠে শরীর। মান্ডুর চারিদিকে ছড়িয়ে রয়েছে ইতিহাসের ছিঁড়ে যাওয়া পাতা। 
মান্ডু শহরের সাগরতালাও ছাড়িয়ে সামান্য এগোলে পড়ে জালিমহল। জালিমহল ছাড়িয়ে বাঁদিক দিয়ে উঠে গেছে রাস্তা পাহাড়ের গা দিয়ে। আজ আর রাস্তা নেই, জঙ্গলে ঢেকে গেছে। সেখানেই অবস্থিত জাহাঙ্গীর দরজা। সম্রাট জাহাঙ্গীর যখন মান্ডু আসেন, তাঁর অভ্যর্থনার জন্য গড়ে তোলা হয় এই দরজা। বাজবাহাদুর প্রাসাদের সামনেই অবস্থিত রেবা কুন্ড। স্থানীয়দের বিশ্বাস নর্মদা নদী এই তালাওতে এসে মিশেছে। রূপমতী নাকি রোজ সকালে এখানেই আসতেন। যদিও মান্ডু থেকে নর্মদা নদীর দূরত্ব চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ কিলোমিটার, তাই নর্মদা নদীর সাথে এই তালাওয়ের কোনো সম্পর্ক ছিল কিনা, তা নিয়ে ভাবা যেতেই পারে। মান্ডুর বাজবাহাদুর প্রাসাদ পিতা ঘিয়াতুদ্দিনকে হত্যা করে ১৫০৮-১৫০৯ সালে তৈরী করেছিলেন সুলতান নাসিরুদ্দিন শাহ। তবে বাজবাহাদুর প্রাসাদে সুলতানি ঐশ্বর্য্যের যতটা না ঝলকানি তার থেকে বেশী করে মনে হয় যেন কোনো শিল্পীর আবাসস্থলে এলাম। কানে ভেসে আসে কোনো শিল্পীর বাঁশির আওয়াজ। হয়তো এই প্রাসাদের কোনো কুঠুরিতে বসে সুলতান বাজবাহাদুর শুনতেন তাঁর প্রেমিকা রূপমতীর গান। পড়ন্ত বিকালে বাজবাহাদুর প্রাসাদে বসে থাকলে, আপনি রোমান্টিক হয়ে উঠবেনই, পৌঁছে যাবেন ইতিহাসের সেই পাতায়। আর আপনার কানে ভেসে আসবে ..
'হয়তো বা সব আলো মুছে যাবে,
হয়তো বা থাকবে না সাথে কেউ ...'
মান্ডুর বাজবাহাদুর প্রাসাদ যেন এক ক্ষুধিতপাষাণপুরী!
বাজবাহাদুর প্রাসাদকে বাঁদিকে রেখে পাহাড়ের পাকদন্ডী বেয়ে এগোলেই এসে পড়া যায় রূপমতী মহলে। মধ্যযুগের স্মৃতি ও অনুভূতি নিয়ে আজ বিরাজ করছে এককালের আনন্দনগরী...মান্ডু, এই পরিবেশে আপনি উদাস হয়ে পড়তে পারেন। গাড়ি আপনাকে রূপমতী মহলের একটু আগেই নামিয়ে দেবে, সেখান থেকে আপনাকে হেঁটে উঠতে হবে।
রূপমতীর মহল
মহলের ছাদের ওপরে রয়েছে দুটি মণ্ডপ। তবে স্থাপত্যের দিক থেকে রূপমতী মহল ভীষণই সাদামাটা। শহরের কোলাহল থেকে দূরে এই মহলে ঘুরে বেড়ালে
, আর নিমারের উপত্যকায় অবস্থিত বাজবাহাদুর প্রাসাদের দিকে তাকিয়ে থাকলে শুনতে পাবেন আপনার কানে ভেসে আসছে আফগানী রাবাব আর মেঘমল্লারের তান। রূপমতী মহলে ঘুরে বেড়ালে, পাথরে পাথরে, চাতালে চাতালে শুনতে পাবেন নৃত্যরত সুন্দরীদের পায়ের ঘুঙুরের শব্দ।
 
মান্ডু শহরে প্রবেশের মুখেই রয়েছে কতগুলো দরজার (স্থানীয় ভাষায় লবজে) ভগ্নস্তুপ, যা পেরিয়ে শহরে প্রবেশ করতে হয়। প্রথমে পরে আলমগিরি দরজা তারপর ভাঙি দরজা একে একে কামানি দরজা, গাড়ি দরজা আর শেষে দিল্লী দরজা। মান্ডুর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য দরজা হলো লোহানী দরজা (সূর্যাস্ত দেখবার সেরা স্থান), তারাপুর দরজা (এটিও সূর্যাস্ত দেখবার জন্য বেশ জনপ্রিয়), জাহাঙ্গীরপুর দরজা (পর্যটকদের কাছে বেশ দুর্গম), ভাগানিয়া দরজা (পাহাড়ে উঠতে হয়) ও সোনাগড় দরজা। ঐতিহাসিক ভাবে মান্ডুর সোনাগড় দরজা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ১৫৩৪ সালে মুঘলরা মান্ডু আক্রমণ করলে, তৎকালীন মান্ডুর শাসক, গুজরাতের সুলতান বাহাদুর শাহ এই পথ ধরেই পালিয়ে গিয়েছিলেন। সোনাগড় দরজা থেকে মান্ডুর দিকে তাকালে বোঝা যায়, প্রাকৃতিক ভাবে মান্ডু কতটা সুরক্ষিত ছিল। দুদিকে নিমারের গভীর খাদ ও অরণ্যে ঢাকা মান্ডুকে দেখলে বেশ রহস্যময় লাগে। সুলতান হোসাঙ্গ শাহ ঘোরীর আমলে, যখন মালোয়ার রাজধানী মান্ডুতে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছিল তখন এই এলাকা সুরক্ষা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা হয়েছিল। যদিও কালের নিয়মে তা আজ ধ্বংস হয়ে গেছে। কিছু কিছু জায়গায় সেই প্রাচীরের অস্তিত্ব আজও দেখতে পাওয়া যায়। মান্ডু শহরে আরও একটি দরজা হলো হাতি গেট বা হাতি পোল, খুব সম্ভবত বাদশা নিজে রাজপ্রাসাদ আসার জন্য এই দরজা ব্যবহার করতেন। আজকাল আর কেউ ব্যবহার করেন না। শহরের এক প্রান্তে, কালো পাথরের তৈরী এই দরজা রোমন্থন করে চলে তার অতীত গৌরবের কথা। 
মান্ডুর দিলওয়ার খান ঘোরীর মসজিদ হলো প্রথম সৌধ যা ইন্দো-সোরাসনিক স্থাপত্য হলেও মালোয়ার শৈলীতে তৈরী হয়েছিল। মান্ডুতে ১৪০১ সালে পাকাপাকি ভাবে সুলতানি শাসন কায়েম হয় দিলওয়ার খান ঘোরীর হাত ধরেই। পর্যটকদের কাছে অনুরোধ রাখলাম কিছুটা সময় মান্ডুর নাহার ঝরোখাতে কাটিয়ে যাবেন। মান্ডুতে আসা পর্যটকেরা কেন জানিনা উদাসীন থাকেন এই স্থানটি থেকে। গাইডকে বলুন অবশ্যই আপনাকে নিয়ে যেতে, নাহার ঝরোখার উঠোনে এসে দাঁড়ালে আপনাকে গ্রাস করে নেবে ইতিহাসের প্রতিটি শব্দ। জাহাঙ্গীর যখন মান্ডুতে এসেছিলেন তখন প্রতিদিন প্রজাদের দর্শন দিতেন এখান থেকেই তাই হয়তো এইরকম নাম।
নাহার ঝরোখার পাশেই রয়েছে হিন্দোলা মহল। কে তৈরী করেছিলেন তাই নিয়ে বিতর্ক আছে। কারুর মতে সুলতান হোসাঙ্গ শাহ আবার অন্য মতে সুলতান ঘিয়াতউদ্দিন খিলজি এটি তৈরী করেছিলেন। মহলটিকে বাইরে থেকে দেখলে 'টি' অক্ষরের মতো লাগে।মনে হয় যেন হাওয়ায় দুলছে।তাই বোধহয় নাম হয়েছিল হিন্দোলা মহল। যদিও মহলটির নির্মাণ শৈলীর মধ্যে কাঠিন্যের ছাপ স্পষ্ট। হিন্দোলা মহল ছাড়িয়ে একটু পশ্চিমের দিকে এগোলে আপনি এসে দাঁড়াবেন মুঞ্জ তালাওয়ের কাছে। উত্তর দিক জুড়ে রয়েছে মান্ডুর রাজপ্রাসাদ। আজ মান্ডুর রাজপ্রাসাদের অবস্থা বড়ই করুণ, কিছু দেওয়াল দাঁড়িয়ে আছে শুধু।
মুঞ্জতালাও আসার পথে দেখে নিন, রেলিঙে ঘেরা কুয়ো চম্পা বাউরি। অতীতে প্রাসাদের সুন্দরীরা চম্পা বাউরিতে স্নান করতেন, চাঁপা ফুলের সঙ্গে তুলনা করে নাম রাখা হয়েছিল চম্পা বাউরি। চম্পা বাউরি ছাড়িয়ে একটু এগোলে দেখতে পাবেন একটি চতুষ্কোন জলাধার, এখন অবশ্য শুকনো। চারিদিক দিয়ে অনেকগুলো আলাদা সিঁড়ি নেমেছে নিচে, কিছু ঘর ও অলিন্দ আছে নিচের দিকে। কক্ষগুলো হলো মান্ডুর রাজপ্রাসাদের তেহখানা। গ্রীষ্মের প্রখর তাপে, এই জলাধারের জল ঠান্ডা বাতাস বইয়ে দিতো এই অলিন্দ আর কক্ষে। জানা যায় সম্রাট জাহাঙ্গীর ও নুরজাহান যখন মান্ডু এসেছিলেন তখন এরকমই কোনো একটি কক্ষকে নিজেদের থাকার জন্য বেছে নিয়েছিলেন। 
মান্ডুতে পার্সিয়ান হুইল দিয়ে চম্পা বাউরি ও জলাধারের জলকে প্রাসাদে তোলা হতো। মালোয়ার সুলতানেরা প্রাসাদের কক্ষকে ঠান্ডা রাখার জন্য, মধ্যযুগের ঐ শীততাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। চম্পা বাউরির বাঁ-দিকে চোখে পড়বে হামাম। এখানে জল আসতো দুটি চ্যানেল দিয়ে... গরম জল ও ঠান্ডা জল। অন্ধকার হামাম ঘরে ছাদের প্রকোষ্ঠ দিয়ে চাঁদ ও তারার আলো এসে পড়তো স্নানরতা রমনীদের গায়ে। সুলতান ঘিয়াতউদ্দিন খিলজির আমলে পনেরো হাজার রমণী ছড়িয়ে থাকতেন এই প্রাসাদ জুড়ে। ভরে থাকতো প্রাসাদ তাঁদের কলকলানিতে। তাঁদের হাসি ও কান্নার শব্দ আজ ও অনুরণিত হতে থাকে প্রাসাদের দেওয়ালে দেওয়ালে, পাথরে পাথরে। 
হামাম ছাড়িয়ে এসে দাঁড়াবেন মুক্তমঞ্চে। পাঁচিল দেওয়া একটি মাঠ, আজ হয়তো তাতে গজিয়ে আছে কিছু ঘাস কিন্তু এখানে এসে দাঁড়ালে কানে ভেসে আসবে, কোনো সুন্দরী নর্তকীর ঘুঙুরের শব্দ ও সুরেলা আওয়াজ। যা মাতিয়ে রাখতো তৎকালীন মান্ডুর রাজপ্রাসাদ।আক্ষরিক অর্থেই তৎকালীন মান্ডু ছিল 'সাদিয়াবাদ'- আনন্দনগরী। 
এরপর আপনি চলে আসুন, মুঞ্জতালাওয়ের মাঝখানে জলমহল প্রাসাদে। প্রাসাদের থাম প্রায় সবই ভেঙে গেছে, ছাদও আর অবশিষ্ট নেই। জলের একেবারে ওপরে জাহাজমহলের দিকে মুখ করে এখনো একটি তোরণ দাঁড়িয়ে আছে। ষোলোশো শতাব্দীতে মান্ডু যখন গুজরাটের অধীনে, সুলতান বাহাদুর শাহ জলমহল প্রাসাদটি তৈরী করেছিলেন। এই মহলের ছাদ এক আশ্চর্য জায়গা। মান্ডু ঘুরতে আসা পর্যটকদের তালিকায় বাদই থাকে  জলমহল প্রাসাদ। এই প্রাসাদে স্থাপত্যের ঘনঘটা হয়তো নেই, কিন্তু আছে একাকিত্ব। নীরবতা। এখান থেকে উপলব্ধি করা যায় জাহাজ মহলের বিশালতা।উপভোগ করা যায় শাহী মহলের রোমান্স। প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্য আর ইতিহাসের ফিসফিসানি,আজ একাকার হয়ে মিশে আছে জলমহল প্রাসাদে।
'কি দেবো তোমার নয়নেতে অশ্রুধার
শোকে হিয়া জর জর হে,
দিয়ে যাবো হে,তোমারি পদতলে..
আকুল এ হৃদয়ের ভার'
১৯৭৭ সালে কবি গুলজারের পরিচালনায় হিন্দি ছায়াছবি 'কিনারা'র শুটিং এই জলমহল প্রাসাদেই হয়েছিল। অভিনেত্রী হেমামালিনী ও অভিনেতা জিতেন্দ্র ও ধর্মেন্দ্রর মুখে 'নাম গুম জায়েগা...' গান শুনেতো হয়তো-বা আপনি প্রেমে পড়েছিলেন পাশের বাড়ির দাদা বা সুন্দরীর ...। 
মুঞ্জতালাওয়ের গা দিয়ে উঠে গেছে জাহাজ মহলের দেওয়াল। জাহাজমহলটিকে কে তৈরী করেন তা নিয়ে মতভেদ আছে, কারুর মতে সুলতান মাহমুদ শাহ আবার অন্য মতে সুলতান ঘিয়াতউদ্দীন খিলজি। মান্ডুর ইতিহাসে ঘিয়াতউদ্দীন খিলজির নাম এক অন্য মাত্রা যোগ করেছে।  আক্ষরিক অর্থেই তিনি ছিলেন এই আনন্দনগরীর সুলতান। সুরা পান করতেন না কিন্তু নারী আসক্তিতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। পনেরো হাজার রমণী হারেমে নিযুক্ত হয়েছিলেন শুধু সুলতানের মনোরঞ্জনের জন্য। তাঁর নিত্যনৈমিত্তিক কাজ বা দেহরক্ষী, সবই ছিল নারী। জীবনে কোনোদিন যুদ্ধ করেননি কিন্তু আনন্দনগরীতে যেভাবে জীবন কাটানো উচিত, উনি সেভাবেই জীবন কাটাতেন। জাহাজমহল, সংলগ্ন রাজপ্রাসাদ, হিন্দোলা মহল জুড়েই ছিল সুলতানের আমোদ-প্রমোদের বিস্তৃতি।
একদিকে মুঞ্জতালাও আর একদিকে কাপুরতালাও, মাঝখানে জাহাজমহল। যেন জাহাজের মতো দুলছে। এ যেন কল্পনার এক জীবন্ত দলিল। এই মহলের স্থাপত্যের মধ্যে রয়েছে রোমান্টিকতার চূড়ান্ত রূপ। জাহাজমহল যেন আনন্দময় জীবনের এক চরম বহিঃপ্রকাশ। কোনো পূর্ণিমার রাতে যখন এই মহলের প্রতিচ্ছবি কাপুরতালাও ও মুঞ্জতালাওয়ের জলে প্রতিফলিত হয়, হাওয়ায় যখন ঢেউ তোলে জলে, জাহাজমহলের প্রতিছব্বি যখন তিরতির করে কাপঁতে থাকে ...ইতিহাস তখন ফিসফিস করে বলে, 
-'আমি ছিলাম, আমি আছি, আমি থাকবো..।'
সূর্যোদয় ও পাথরের স্বপ্ন
জাহাজমহল সংলগ্ন মহলের নাম তাবেলি মহল। জওহরলাল নেহেরু, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন এই মহলেই এক রাত কাটিয়ে গিয়েছিলেন। মান্ডুর পুরাতাত্ত্বিক দপ্তরের অধীনে এই মহলে রাত্রিবাস করবার সুব্যবস্থা আছে। পূর্ণিমার রাতে এই মহল থেকে জাহাজমহলের দৃশ্য, মনে হয় যেন 'স্বপ্ন -যান। এই জন্যই হয়তো সম্রাট জাহাঙ্গীর মান্ডুতে থাকালীন জ্যোৎস্না রাতে বেছে নিয়েছিলেন জাহাজমহলকে। দিওয়ালির রাতে সম্রাটের আদেশে আলোয় সেজে উঠেছিল এই মহল। অন্ধকার আকাশে, আলোকিত মহল আর বাঁশির সুরের মূর্ছনায়, সম্রাট জাহাঙ্গীর ও নুরজাহান হয়তো মেতে গিয়েছিলেন চরম রোমান্টিকতায়...।
আপনার তালিকায় মান্ডু শহরে দেখবার জন্য এবারে রয়েছে জামি মসজিদ, হোসাঙ্গ শাহের সমাধি, আশরফি মহল ও মাহমুদ খিলজির সমাধি।এই চারটি সৌধ মান্ডু শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। দোকানপাট, হোটেল-রেস্তোরাঁ, বাস স্ট্যান্ড সবই এই জায়গায়।বিশাল সুন্দর বাগানের মাঝে শ্বেত পাথরের তৈরী হোসাঙ্গ শাহের সমাধি, সমগ্র ভারতবর্ষে মার্বেল পাথরের তৈরী সৌধের মধ্যে প্রাচীনতম।হোসাঙ্গ শাহের সমাধির ঠিক পেছনেই রয়েছে জামি মসজিদ।ঘোরী বংশীয় সুলতান হোসাঙ্গ শাহ এই মসজিদের পরিকল্পনা করলেও এটির নির্মাণ শেষ হয় খিলজি বংশীয় সুলতান মাহমুদ খিলজির সময়ে।জামি মসজিদের বিপরীতেই রয়েছে আশরফি মহল।আশরফি কথার অর্থ সোনার মোহর।সুলতান মাহমুদ শাহ খিলজি এটি তৈরী করেছিলেন।আশরফি মহলের সিঁড়িতে আশরফি রাখা থাকতো আর নুরজাহান তা কুড়িয়ে নিয়ে ওপরে উঠতেন।তাই নাকি নাম হয় আশরফি মহল। মান্ডুতে থাকাকালীন সম্রাট জাহাঙ্গীর ও নূরজাহানের প্রিয় জায়গা ছিল আশরফি মহল। ইতিহাস তো এক কল্পনা। রেশ আর আবেশ রেখে যায় মাত্র।
সুলতান মাহমুদ শাহ খিলজির আমলে মান্ডুর সমৃদ্ধি শীর্ষে উঠেছিল।আফ্রিকার সাথে গড়ে ওঠে বাণিজ্য। মান্ডুর পথেঘাটে দেখা যায় বাওবাব গাছ (স্থানীয়রা বলেন খোসরানি ইমলি) যার চারা সুলতান সুদূর আফ্রিকা থেকে নিয়ে এসে মান্ডুতে লাগিয়েছিলেন। ভারতবর্ষে আর কোথাও দেখতে পাওয়া যায় কি না, আমার জানা নেই। আশরফি মহল সংলগ্ন বিজয় স্তম্ভ আজ প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে।যা সুলতানের চিতোর আক্রমণের স্মৃতি। আশরফি মহলেই রয়েছে মান্ডুর ইতিহাসে সর্ববিখ্যাত সুলতান মাহমুদ খিলজির সমাধি যা কালের নিয়মে প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। দেওয়াল ছাড়া আর কিছুই নেই। কিন্তু যা রয়েছে,তা হলো আপনার কল্পনা শক্তি। দুদণ্ড বসুন। তাকিয়ে দেখুন আপনার চোখের সামনে রয়েছে মান্ডুর উপত্যকা, ইতিহাসের হাওয়া বইছে ...আর শিহরণ বয়ে যাচ্ছে আপনার শরীর ও মনে। 
হিন্দোলা মহল
এবারে চলে আসুন উজালা বাউড়ি ও আন্ধেরি বাউড়ি ও গদা শাহের প্রাসাদ ও দোকান দেখতে। মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট ও রাজস্থানে সোপানযুক্ত কুয়ো দেখতে পাওয়া যায়। স্থানীয়রা বলেন বাউড়ি, নিচে নামার জন্য সিঁড়ি থাকে।উজালা শব্দের অর্থ আলোকিত ও আন্ধেরি শব্দের অর্থ অন্ধকার।গদা শাহ ছিলেন সুলতানি আমলে প্রভাবশালী এক ব্যবসাদার। সুলতানের শাসনকার্যে তাঁর ছিল মস্ত হাত। গদা শাহের ইমারত আজ প্রায় ধ্বংস, ছাদও ভেঙে পড়ে গেছে। সিঁড়ি দিয়ে সাবধানে ওপরে উঠলে, চোখের সামনে ভেসে ওঠে দূরের জাহাজমহল। হলফ করে বলতে পারি, জাহাজ মহলের ওই দৃশ্য মান্ডুর আর কোনো জায়গা থেকে দেখতে পাবেন না। কোনো এক পড়ন্ত বিকালে, দুদণ্ড বসুন এখানে। আপনার চোখের মনিকোঠায় চির-স্মরণীয় হয়ে থাকবে এই দৃশ্য।
মান্ডু ঘুরতে আসা পর্যটকেরা রূপমতী মহল ও জাহাজমহল দেখেই তাঁদের বেড়ানোতে দাঁড়ি টানেন। কিন্তু আমি বলবো, সারা মান্ডুতে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য সৌধ, তা না দেখলে মান্ডু ঘোরা অসম্পূর্ণই থেকে যাবে।যেমন রয়েছে মালিক মুঘিতের মসজিদ ও তার বিপরীতে ক্যারাভানসরাই, একটু এগিয়ে পথের ধারে, বাওবাব গাছের জঙ্গল পার হয়ে দাই'এর ছোটবোনের মহল ও তারপর বাঁ-হাতে দাই কা মহল। আর একটু এগিয়ে সাগর তালাওয়ের ধারে আঁধার গম্বুজ,তারপর দেখে নিন জালি মহল। মধ্যপ্রদেশ রাজ্য পর্যটনের মালোয়া রিসর্ট সাগর তালাওয়ের ধারেই অবস্থিত। 
মান্ডু একটি ঘুমন্ত শহর। এককালের আনন্দনগরী, মৃতের নগরীতে পরিণত হওয়ার সাক্ষী এই সব সৌধ। এবারে চলুন দেখতে দরিয়া খানের মকবরা।দরিয়া খান ছিলেন তৎকালীন সময়ে এক প্রভাবশালী আমির। দেখতে চলে আসুন লাল সরাই, মূলত এটি একটি সরাইখানা। তারপর আপনি দেখে নিন হাতি পাগা মহল ও রোজা কা মকবরা। রোজা ওরফে খাদিজা বিবি ছিলেন এক সুফী গায়িকা।গানের সুরে মজিয়ে রাখতেন সুলতানের সভা।গাড়ি দরজার পাশ দিয়ে রাস্তা উঠে গেছে চিস্তি খানের সমাধিসৌধের কাছে।চিস্তি খান ছিলেন সুলতান প্রথম মাহমুদ খিলজির বিশ্বস্ত সেনাপতি। সৌধের ওপর থেকে চোখের সামনে ভেসে ওঠে মান্ডুর স্কাইলাইন... দূরে অবস্থিত জামি মসজিদ, হোসাঙ্গ শাহের সমাধির গম্বুজ ও জাহাজমহলের ছাদের মণ্ডপ। মান্ডু শহরের আপনার শেষ গন্তব্য নীলকণ্ঠ প্রাসাদ।এখান থেকে আপনার চোখে পড়বে মান্ডুর অনাবিল পাহাড়ি প্রকৃতি।সম্রাট জাহাঙ্গীরের বড় প্রিয় জায়গা ছিল নীলকণ্ঠ প্রাসাদ চত্বর।একাকী সময় কাটাতেন এখানে।নীলকণ্ঠ প্রাসাদে পাথরের জালির মাখসুরাহ আপনার চোখ টানবেই।
আজ সকাল থেকেই তোড়জোড়, প্যাকিং শুরু। গাড়িতে উঠে ফিরে চলেছেন আপনি। হাতে রয়েছে জীবনানন্দ দাসের শ্রেষ্ঠ কবিতার বইটি। ফরফর করে সেই বইয়ের পাতা উড়ছে, আপনি-তো অন্যমনস্ক ... হটাৎ আপনার চোখ আটকে পরে কয়েকটা লাইনে...
'... আজ নেই, কোনো এক নগরী ছিল একদিন,
কোনো এক প্রাসাদ ছিল;
মূল্যবান আসবাবে ভরা এক প্রাসাদ:
পারস্য গালিচা, কাশ্মীরি শাল, বেরিন তরঙ্গের নিটোল মুক্তা প্রবাল,
আমার বিলুপ্ত হৃদয়, আমার মৃত চোখ, আমার বিলীন স্বপ্ন আকাঙ্খা
আর তুমি নারী-
এই সব ছিল সেই জগতে একদিন'
কোথায় থাকবেন ও কি ভাবে যাবেন:
মান্ডুর নিকটবর্তী রেলস্টেশন ও বিমানবন্দর হলো ইন্দোর,মান্ডু এখান থেকে মাত্র ১০০ কিমি।অনেকে ইন্দোর থেকে মহেশ্বরে একরাত কাটিয়ে, মান্ডু আসেন(মাত্র ৪০ কিমি), সেক্ষেত্রে মহেশ্বর দেখা হয়ে যায়। মধ্যপ্রদেশ পর্যটনের দু-তিনটি থাকার হোটেল আছে মান্ডুতে, কিন্তু আমার মতে থাকার সেরা জায়গা মধ্যপ্রদশ পর্যটনের 'মালোয়া রিসর্ট',একদম সাগরতালাওয়ের ধারে।পূর্ণিমার রাতে সাগর তালাওয়ের বুকে জ্যোতস্নার ছটা আপনি ঘরে বসেই দেখতে পাবেন।
বুকিং এর জন্য যোগাযোগ করতে হবে: 
২৩০ এ,এ.জে .সি. বোস রোড,রুম নো-৭,ষষ্ঠ তল,চিত্রকুট বিল্ডিং 
কলকাতা-৭০০০২০
ফোন নো-(০৩৩)২২৮৭৫৮৫৫
গাইড-মহঃ খুরেশি(০৭৮৬৯৯৯৬২৩৭),  প্রসঙ্গতঃ বলে রাখি মালোয়া রিসর্টের রিসেপশনকে বলে রাখলে ওঁরাও গাইডের ব্যবস্থা করে দেন, গাইড চার্জ দিন প্রতি ১৫০০-১৮০০ টাকা। 
গাড়ি-অনিল চৌধুরী(০৯৮২৭২১৪১৫৪), বর্তমানে গাড়ীর ভাড়া ফোন করে জেনে নেওয়াই ভালো
    
     
                 





মন্তব্যসমূহ

  1. অসাধারণ এই ইতিহাস আলেখ্য

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. এই লেখাটির জন্য যে মানুষটির কাছে আমি কৃতজ্ঞ তিনি হলেন প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত। মান্ডু যাওয়ার আগে আমার সৌভাগ্য হয়েছিল, ওনার সাথে সময় কাটানোর। অনুরোধ রাখলাম, যাঁরা ভবিষ্যতে মান্ডু যাবেন,তাঁরা অবশ্যই ওঁর লেখা,'মান্ডু'(কলকাতা, ২০১৫)পড়ে যাবেন। এই লেখার অনেক তথ্য(শুরুর কবিতা সহ),ওনার বই থেকেই নেওয়া।

      মুছুন
  2. এতো একটা ডকু , ভাই !! এরকম লেখা আমিতো ভাই , বাপের জন্মে পড়িনি !! আমারতো মনে হয় যারা এই লেখাটা পুরো পড়বেন , মানে , ওই স্ক্রল করে নামিয়ে না গিয়ে , তারা প্রতেক্যে এই নিবনন্ধে বর্ণিত সমস্ত জায়গায় যাবেন !!! আমাদের চোখের সামনে একটা , DOCUMENTARY দেখলাম !!! প্রশংসা করে তোমাকে খাটো করবো না !!! ঈশ্বর তোমার এই লেখনীর ব্যঞ্জনা বজায় রাখুন !!! ভালো থাকো সুস্থ থাকো !! সন্দীপ ঘোষাল.

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. এই লেখাটির জন্য যে মানুষটির কাছে আমি কৃতজ্ঞ তিনি হলেন প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত। মান্ডু যাওয়ার আগে আমার সৌভাগ্য হয়েছিল, ওনার সাথে সময় কাটানোর। অনুরোধ রাখলাম, যাঁরা ভবিষ্যতে মান্ডু যাবেন,তাঁরা অবশ্যই ওঁর লেখা,'মান্ডু'(কলকাতা, ২০১৫)পড়ে যাবেন। এই লেখার অনেক তথ্য(শুরুর কবিতা সহ),ওনার বই থেকেই নেওয়া।

      মুছুন
  3. অসাধারণ। এক কথায় এই লেখার কথা শেষ করা যায় না। আপনার প্রতিটি লেখার মতোই ঋদ্ধ ও মুগ্ধ হলাম। কলম কি ভাবে একটি জায়গার প্রতি আকর্ষণ গড়ে তোলে এ তারই প্রমাণ। লেখাটি পড়বার পর থেকেই মনে হচ্ছে কবে যাবো।

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. এই লেখাটির জন্য যে মানুষটির কাছে আমি কৃতজ্ঞ তিনি হলেন প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত। মান্ডু যাওয়ার আগে আমার সৌভাগ্য হয়েছিল, ওনার সাথে সময় কাটানোর। অনুরোধ রাখলাম, যাঁরা ভবিষ্যতে মান্ডু যাবেন,তাঁরা অবশ্যই ওঁর লেখা,'মান্ডু'(কলকাতা, ২০১৫)পড়ে যাবেন। এই লেখার অনেক তথ্য(শুরুর কবিতা সহ),ওনার বই থেকেই নেওয়া।

      মুছুন
  4. অসাধারণ। এক কথায় এই লেখার কথা শেষ করা যায় না। আপনার প্রতিটি লেখার মতোই ঋদ্ধ ও মুগ্ধ হলাম। কলম কি ভাবে একটি জায়গার প্রতি আকর্ষণ গড়ে তোলে এ তারই প্রমাণ। লেখাটি পড়বার পর থেকেই মনে হচ্ছে কবে যাবো।

    উত্তরমুছুন
  5. অসাধারণ। এক কথায় এই লেখার কথা শেষ করা যায় না। আপনার প্রতিটি লেখার মতোই ঋদ্ধ ও মুগ্ধ হলাম। কলম কি ভাবে একটি জায়গার প্রতি আকর্ষণ গড়ে তোলে এ তারই প্রমাণ। লেখাটি পড়বার পর থেকেই মনে হচ্ছে কবে যাবো।

    উত্তরমুছুন
  6. প্রতিবারের মতোই মুগ্ধ এ কলমে।অসাধারণ

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. এই লেখাটির জন্য যে মানুষটির কাছে আমি কৃতজ্ঞ তিনি হলেন প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত। মান্ডু যাওয়ার আগে আমার সৌভাগ্য হয়েছিল, ওনার সাথে সময় কাটানোর। অনুরোধ রাখলাম, যাঁরা ভবিষ্যতে মান্ডু যাবেন,তাঁরা অবশ্যই ওঁর লেখা,'মান্ডু'(কলকাতা, ২০১৫)পড়ে যাবেন। এই লেখার অনেক তথ্য(শুরুর কবিতা সহ),ওনার বই থেকেই নেওয়া।

      মুছুন
  7. এই লেখাটির জন্য যে মানুষটির কাছে আমি কৃতজ্ঞ তিনি হলেন প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত। মান্ডু যাওয়ার আগে আমার সৌভাগ্য হয়েছিল, ওনার সাথে সময় কাটানোর। অনুরোধ রাখলাম, যাঁরা ভবিষ্যতে মান্ডু যাবেন,তাঁরা অবশ্যই ওঁর লেখা,'মান্ডু'(কলকাতা, ২০১৫)পড়ে যাবেন। এই লেখার অনেক তথ্য(শুরুর কবিতা সহ),ওনার বই থেকেই নেওয়া।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোমা দত্ত

সব্যসাচী মজুমদার

সৌম্যজিৎ আচার্য