মৌসুমী রায়
বিষাদ পরিক্রমা
✤✤✤✤✤✤✤✤✤✤✤✤✤✤✤
।। ১ ।।
আপনি চলে যাবার পর, বৃন্দাবনচাঁপার দুএকটি কলি ,
আপনি চলে যাবার পর, প্রভাতী টোলে দৃপ্ত উচ্চারন
ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত মধুক্ষরা কৃষ্ণনাম ,
বিষন্ন শচীমাতা গবাক্ষে আঁখি পাতেন ।
আপনি চলে যাবার পর ,ভূর্জপত্র পূঁথি
দর্পন জোড়া স্মৃতি আর স্মৃতি ,
দেখবার নাই অধিকার ।
পাদুকা সন্নিধান বিবশ আশ্রয় ,
ভিজিয়েছি মধ্যযাম নিষ্পলক উপেক্ষায়।
শেষ পুষ্পমালা ,শেষ অলকাচন্দন
সন্ধ্যাসমীপে শেষ দীপদান,
অতঃপর...
অন্তিম শুভদৃষ্টি , অনন্ত আঁধার
নির্বাসিতের অলঙ্ঘ্য দূরত্বে
আমি বিষ্ণুপ্রিয়া ...
।। ২ ।।
বৈশাখী পূর্ণিমা ,কপিলাবস্তু উদ্বেলিত আনন্দজোছনায় যৌথ সুসংবাদে।
জন্মের সেই শুভক্ষণেই, অলখ
বিধিডোরে রচিত
আমাদের মিলনসম্ভবগাঁথা ।
নিষ্ঠ প্রেমের অমোঘ পূর্ণতায় ,
প্রসবশয্যায় রাহুলজননী আমি ।
বেদনাকাতর প্রিয়ামুখ
ম্লান তোমা তরে প্রিয়তম ।
দূরতর নক্ষত্রের দীপ্তিমান টানে,
রাজগৃহ ত্যাগী তুমি পথের ধুলায়
মহাভিনিষ্ক্রমণে।
অসহনীয় যাপনযন্ত্রণা সয়ে যাই ,
সদ্যোজাত সন্তানের চাঁদমুখে চেয়ে।
দারাপুত্র তুচ্ছ ,তুমি বোধিজ্ঞান লভ
বোধিবৃক্ষ তলে ।করুণাধন্য
তব পায়েসান্ন হাতে সুজাতাও,
আমি শুধু বঞ্চিতের দলে।
পুরবাসী উদ্বেলিত যবে,
শ্রমণভিক্ষু এসে দাঁড়াও রাজগৃহ দ্বারে ,
প্রিয়দর্শণ ক্ষমাসুন্দর অবয়বে
যাই নাই আমি ত্বরায় সেথায় ।
যদি করে থাকি কৃচ্ছের সাধনা
রাজবস্ত্র ত্যাগি কাষায়বসনে
রাজরাণী তবু গৃহী ভিক্ষুণীসম ,
আসিবে স্বয়ং তুমি ।
দর্শণসুধা লভি রচি নরসীহগাঁথা
বিমুগ্ধ কলমে ।
সহেছি সন্তানবিচ্ছেদ দাহ
উত্তরাধিকার প্রার্থী পুত্রে
যবে সংঘে নিলে তুমি শ্রমণের বেশে ।
বোধিসত্ব তুমি, নির্বাপিত হয়
জরা শোক জ্বালা তোমার বচনে।
বিরহানল তবু নিভে নাই
মম তাপিত হৃদয়সমীপে ।
রচেছি জীবনব্যাপি আপন যাপন
নিজস্ব ছন্দে নিজ স্বতন্ত্রতায় ।
আমি যশোধরা ...
সন্ন্যাস। জীবনের সব প্রিয় ছেড়ে। বৈভব ছেড়ে। বিষয় নির্বাচন খুব ভালো। শুভেচ্ছা
উত্তরমুছুন