সম্পাদকীয় 

##################### 
" এইখানে হেমন্তের আসন্ন কুয়াশা রুষ্ট ফণার মতন ..."

হৈমন্তী বিকেল। দিনান্তের নিভু নিভু আলো।হিমেল হাওয়ার সাথে ভেসে আসে অনিবার্য জীবনানন্দীয় বেদনাবোধ।চারিদিকে ধূসর বিষন্নতা। ফসল কাটার পর ক্ষতচিহ্ন বুকে নিয়ে একা জেগে থাকে নাড়া কাটা ধানখেত। অনেক দূরে আকাশে মাটিতে একাকার।ধূসর ক্যানভাসে আঁকা এক সারি গাছ। নিথর নিস্পন্দ কুয়াশা পরত। মৃত্যুবাহী কফিনে ফিনফিনে সাদা কাপড়। আঁধার চুঁইয়ে নামে যুবতী সন্ধ্যায়। তীরবেগে ছুটে যায় হাইওয়ে ট্রাক। রাত্রে চাঁদ ওঠে। ডাইনি জোৎস্নায় ভেসে যায় বন। আলপথে হেঁটে যায় কেউ নিশিডাক শুনে। চকিতে চমকে ওঠে মেঠো ইঁদুরেরা।নীরবতা ছিন্ন করে রাতচরা পাখি। হিম জোৎস্নায় চরাচর কান পেতে শোনে মায়াবী হিমকথা।

পৃথিবী কাঁপছে এখনও ভাইরাস জ্বরে। এখনও আতঙ্ক মানুষের মনে। এই বুঝি ছোবল মারে 'আসন্ন কুয়াশা রুষ্ট ফণার মতন '।এই বুঝি কেড়ে নেয় প্রিয় মানুষের প্রাণ। এই বুঝি থেমে যায় আদিবাসী পাড়ায় নবান্নের গান। 

অতিমারী শাসিত সময়ে এক রাশ শোকগাথা বুকে নিয়ে অতন্দ্র জেগে থাকে একা বাতিঘর। হেমন্তের ধূসরতা পেরিয়ে প্রকাশ পায় "বাতিঘর অনলাইন হিমকথা "সংখ্যা।
আমাদের স্বপ্নের বাতিঘর এখন আলোক উদ্ভাসিত।নতুন নতুন লেখকের লেখনী -প্রয়াসে আমরা সমৃদ্ধ ও আপ্লুত। যাঁরা নিয়মিত লেখা পাঠান, এবং যাঁরা প্রথম পাঠালেন, তাঁদের সবাইকেই 'বাতিঘর পরিবারের "পক্ষ থেকে অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জানাই।অনাগত দিনেও এমনিভাবে পাশে থাকবেন, এই আশায় বুক বাঁধি। আলাদাভাবে একক কাউকেই নয়, নবীন প্রবীণ প্রত্যেকের কাছেই আমরা কৃতজ্ঞ। তবে একটা কথা না বললেই নয়, বাতিঘরের যাঁরা আপনজন, তাঁদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ছাড়া এ কাজ সম্ভব ছিল না।
আমরা বিশ্বাস করি পৃথিবী একদিন সুস্থ হবে। ফিকে হবে দুঃস্বপ্নের দীর্ঘতম রাত। হিম কুয়াশার জাল ছিঁড়ে ছড়িয়ে পড়বে নরম ভোরের প্রথম আলো। লেখক, পাঠক সবার কাছেই "বাতিঘর হিমকথা "সংখ্যায় প্রকাশিত লেখাগুলোর পাঠপ্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় থাকলাম।

কিছু কিছু কালশিটে দাগ থেকে যায় বুকের ভেতর

হেমন্তিকা বিকেলে বিষের বাষ্প মিশে থাকে
সাদা কুয়াশার সাথে

না -দেখা পাহাড় নদী সমুদ্র
অথবা পড়শী গাছের ডালে
উদাসী কোন একলা পাখি

তবু দ্বিধাহীন ভালোবাসা বুঝে যায়
একদিন ঠিক শীত আসবেই

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোমা দত্ত

সব্যসাচী মজুমদার

সৌম্যজিৎ আচার্য