অসিত মণ্ডল


সহযাত্রী   
**************
এক.
মাস তিনেক চাতক পাখির মতো অপেক্ষায় থাকার পর হঠাৎ বৃষ্টি এলো |আনন্দে আত্মহারা হলো বৃষ্টিলেখা |বহুদিন অন্ধকার জমে থাকা দম বন্ধ করা ঘরের জানালা খুলে ঢুকে পড়লো এক ঝলক তাজা বাতাস |
এস এস সির রেকমেন্ডেশন লেটার হাতে নিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের চোখে চোখ রাখলো বৃষ্টিলেখা সেনগুপ্ত |কালই কুসুমপুর আদর্শ বিদ্যাপীঠের হেডমাস্টারের কাছে রেজিগনেশন লেটার সাবমিট করবে |
রাতে খাবার টেবিলে সুগতকে কথাটা জানালো বৃষ্টিলেখা |
খেতে খেতে মুখ না তুলে সুগত বললো --
তাহলে তুমি এইচ এম পোস্টে জয়েন করছো? এসব পোস্টে দিন দিন কত ঝামেলা বাড়ছে দেখছো তো |অবশ্য তোমার প্রফেশন, তুমি বুঝবে |
বৃষ্টিলেখা কথা বাড়ায় না |অনেক ভেবেচিন্তেই কোনো ডিসিশন নেয় |চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত থেকে সহজে তাকে নড়ানো যায় না | বাড়ির প্রায় সবারই অমতে একরকম নিজের জেদেই সুগতকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল |

দশ বছর সাত মাস আগে এই  কুসুমপুর আদর্শ বিদ্যাপীঠে এসিস্ট্যান্ট টিচার হিসেবে জয়েন করার কথা খুব  মনে পড়ছে আজ | বুকে এক রাশ স্বপ্ন নিয়ে কাজ শুরু করেছিল সে |খুব দ্রুত নতুন দিদিমনি ছাত্র ছাত্রীদের নয়নের মনি হয়ে উঠেছিল |তার প্রফেশনাল ডেডিকেশন, ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে জনপ্রিয়তা  খুব তাড়াতাড়িই কলিগদের কাছে ঈর্ষার কারণ হয় |
বৃষ্টিলেখার রেজিগনেশন লেটার আর রিলিজ অর্ডার প্রেয়ার হাতে নিয়ে একটু নরম সুরেই বললেন হেডমাস্টারমশাই --
তাহলে আপনি চলেই যাবেন?
হ্যাঁ স্যার |
স্কুলটা সম্পর্কে একটু খোঁজ খবর নিয়েছেন?
লোকেশনটা জানি |
দিন সাতেক পর হেড স্যারের ঘরে ডাক পড়লো বৃষ্টিলেখার |একদিনে স্কুল ছাড়ার বিষয়টা জানাজানি হয়ে গেছে |হেডস্যারের ঘরে ঢুকতেই দেখে স্কুলের সেক্রেটারি বসে আছেন | চোখে মুখে সেই চেনা ধূর্ততার ছাপ সুস্পষ্ট |
ম্যাডাম তাহলে চলেই যাবেন? অবশ্য আপনি হেডমিস্ট্রেস হচ্ছেন এটা তো..
বৃষ্টিলেখার  কথা বলতে ইচ্ছা করছিলো না |মাস ছয়েক আগে এই লোকটার জন্য সবার সামনে তাকে অপদস্ত হতে হয়েছে |স্কুলে রবীন্দ্র জয়ন্তী অনুষ্ঠান চলছিল |সেই সুযোগ নিয়ে ক্লাস ইলেভেনের ছাত্র রুদ্র তার প্রিয় ছাত্রী শ্রেয়ার সাথে চরম অসভ্যতা করে |কান্না চিৎকার শুনে সবাই দৌড়ে যায় |হাতেনাতে ধরা পড়ে রুদ্র |শ্রেয়ার ছেঁড়া ইউনিফর্ম, মেঝেয় লুটানো ওড়না, বিদ্ধস্ত চোখের অসহায় চাহনি বৃষ্টিলেখাকে সে রাতে ঘুমোতে দেয় না |পরদিন জরুরী মিটিং হয় |রুদ্র স্কুলের সেক্রেটারির বখে যাওয়া ছেলে |বৃষ্টিলেখা সব কলিগকে একজোট করে আগেই ঠিক করে মিটিংয়ে রুদ্রকে স্কুল থেকে রাস্টিকেট করার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে |কিন্তু রুলিং পার্টির মদতপুষ্ট প্রভাবশালী সেক্রেটারির সামনে তার সমস্ত সহকর্মী ভয়ে কুঁকড়ে কেঁচো হয়ে যায় |হেডস্যার মাথা নীচু করে বসে থাকেন |উল্টে মেয়েটিই দোষী সাব্যস্ত হয় এই পরাজয় বৃষ্টিলেখাকে ধুলোর সাথে মিশিয়ে দেয় |সেদিনই ঠিক করে এই স্কুলে আর নয় |
রিলিজ অর্ডার হাতে দিয়ে হেডস্যার একটু ব্যথিত স্বরে বলেন --
ভালো থাকবেন নতুন স্কুলে |

দুই.
হরিণডাঙ্গা বালিকা বিদ্যালয় |জেলাসদর ছাড়িয়ে প্রায় ঘন্টাখানেকের বাস জার্নি |সবুজ গাছগাছালিতে ঘেরা গ্রামের স্কুল |একটু এগোলেই নদী |বাস থেকে নেমে একটা খেলার মাঠ ক্রস পেরোতেই স্কুলের নাম লেখা বুনো লতায় অর্ধেক ঢাকা সাইনবোর্ড চোখে পড়লো |

আসতে পাড়ি?
বয়স্ক টি আই সি চোখ তুলে বললেন --
আসুন, কি ব্যাপার?
আমি বৃষ্টিলেখা সেনগুপ্ত |আপনার সাথে ফোনে কথা হয়েছিল |এইচ এম পোস্টে জয়েন করতে এসেছি |
ও, হ্যাঁ, হ্যাঁ, আসুন, আসুন |আমরা তো আপনার জন্যই অপেক্ষা করছি |
ভদ্রমহিলার পাশের চেয়ারে বসেছিলেন পার্টির হোলটাইমার গোছের একজন |মাথায় কাঁচাপাকা চুল |কাঁধে ঝোলা ব্যাগ |
ভারপ্রাপ্ত দিদিমনির চোখে মুখে ভারমুক্তির চাহনি |
আলাপ করিয়ে দিই, ইনি অনিমেষবাবু, স্কুলের সেক্রেটারি |
বৃষ্টিলেখা নমস্কার জানাতেই পঞ্চাশোর্ধ মানুষটা মাত্রাতিরিক্ত বিনয়সহযোগে বললেন --
খুব ভালো হলো, আপনি জয়েন করুন |স্কুলের উন্নয়নে আমাকে সব সময় পাবেন |
বৃষ্টিলেখা বিনম্র হাসি ফিরিয়ে দেয় |
হেডমিস্ট্রেসের চেয়ারে বসে একবার নিজের ঘরটার দিকে চোখ বোলায় |টেবিলের কাঁচের নীচে গাদা গুচ্ছের কাগজ এলোমেলো বাঁকাচোরা হয়ে রয়েছে |এক কোণে কেৎরে পড়ে আছে একটা বাতিল প্রিন্টার |কম্পিউটারটা ভালো কিনা কে  জানে |আর এক কোণে ডাঁই করা বাতিল কাগজপত্র, আয়রন ক্যাপসুলের বাক্স |দেয়ালে সন্যাসীবেশী মলিন বিবেকানন্দ |পুরোনো এক ক্যালেন্ডারের ছবি হয়ে ফ্যানের হাওয়াই সমানে ঘেঁষটে চলেছে |প্লাইউড দিয়ে ভাগাভাগি করা ঘরটার অন্যপাশে বসেন ক্লার্ক দুলালদা |সাথে থাকেন একমাত্র গ্ৰুপ ডি স্টাফ নকুল |অনর্গল বিড়ি টেনে টেনে তার ঠোঁটে অমোচনীয় কালচে ছোপ |
সদ্য ভারমুক্ত দিদিমনি বৃষ্টিলেখাকে স্কুল চত্বর ঘুরে দেখালেন |সারি সারি ক্লাস রুম |বারান্দায়, ফাঁকা জায়গায় সর্বত্র ছেঁড়া প্লাস্টিক আর কাগজের ওড়াওড়ি |ময়লা রংচটা দেয়ালে অগুনতি অমুক প্লাস তমুকের পাশাপাশি দুএকটা বিশ্রী স্ল্যাং |
স্টাফ রুমের ছবিটা আলাদা কিছু নয় |দেয়ালের সাথে সাঁটা টিচারদের ঢাউস লকার |আলমারির মাথায় পুরোনো খাতা কাগজের স্তুপ |মনীষীদের ধুলোমাখা ছবিগুলোর পেছনে আদ্যিকালের ঝুল |রবীন্দ্রনাথের গলায় কবেকার শুকনো গাঁদা ফুলের মালা ছিঁড়ে সাপের খোলসের মতো ঝুলে আছে |কোনের এক টেবিলে ছড়ানো ছেটানো চক ডাস্টার, ভালো, ভাঙ্গাচড়া জিওমেট্রিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্টস |ম্যাপের স্ট্যান্ডে কিছু অবহেলিত রোল করা ম্যাপ |
নতুন বড়দি ঢোকা মাত্রই সবাই একটু নড়েচড়ে বসলো |সবাই যার যার মতো করে তাকে পড়ে নেওয়ার চেষ্টা করলো |স্টাফদের পক্ষ থেকে প্রাক্তন টি আই সি ফুলের তোড়া তুলে দিলেন |
সংক্ষিপ্ত আলাপপর্ব শেষ হলে বৃষ্টিলেখা বললো --
আপনাদের সাথে আলাপিত হয়ে খুব ভালো লাগলো |আজ থেকে আমি আপনাদের সাথী হলাম |স্কুলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা একসাথে কাজ করবো |
প্রত্যেকেই সম্মতিসূচক মাথা নাড়লো |
বৃষ্টিলেখা রুম ছাড়তেই বাংলার দিদিমনি চন্দ্রিমা মজুমদার অস্ফুটে ফুট কাটলেন  --
বাপরে !স্বপ্নের ফেরিওয়ালী এলেন !

তিন. স্কুলটা ছিল প্রৌঢ়ত্বে পৌঁছে যাওয়া প্রায় ফুরিয়ে যাওয়া কোন মানুষেরই মতো |অথবা কোমায় পৌঁছে মৃত্যুর অপেক্ষায় দিন গোনা কোনো রোগী |কিন্তু বৃষ্টিলেখা চ্যালেঞ্জটা নিয়েই নিলো |মাস ছয়েকের মধ্যে স্কুলের হাল অনেকটাই বদলে গেলো |এখনো প্রায় সব টিচার প্রার্থনা সভায় সময়মতো উপস্থিত হয় |নিজে দাঁড়িয়ে থেকে স্কুলবাড়ির ভেতর, ক্লাসরুম অনেকটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করিয়েছে |দিদিমণিরাও কিছুটা হলেও পুরোনো অভ্যাস ভুলে নতুন উদ্যোগে সামিল হয়েছেন |সারা স্কুল চত্বর জুড়ে এখন বেশ একটা ফুরফুরে তাজা বাতাস আপনমনে খেলে বেড়ায় |

    জেলা সদর থেকে ছাড়ে মধুমালতী বাসটা |বেশ কজন স্কুল টিচার ডেইলি প্যাসেঞ্জার একসাথে যাতায়াত করেন |বৃষ্টিলেখাও একদিনেই কিছুটা হলেও মিলেমিশে গেছে |ফুলকুমারী গার্লসের অর্চনাদি, হরিদেবপুর বয়েজের ব্রতীন ব্যানার্জী, পড়শী স্কুলের অশেষবাবু |এরা সবাই হেডপোস্টে |আরও একজন, অতীন |কদমগাছি হাই স্কুলের এইচ এম |
ঘন্টাখানেকের এই বাস জার্নি বেশ লাগে বৃষ্টিলেখার |নানান আলাপচারিতা, খুচরো কথা, হাসি, ছোটোখাটো তর্কে বিতর্কে মশগুল থাকে সবাই |এমনকি স্বভাব মুখচোরা বৃষ্টিলেখাও এখন বেশ অংশগ্রহণ করে চলমান আড্ডায় |
আজ বাস ছাড়তেই অর্চনাদি বললেন --
আরে বৃষ্টি,  তুমি তো ফাটিয়ে দিয়েছো একেবারে |তোমার স্কুল তো এখন সবার মুখে মুখে |
বৃষ্টিলেখা থামিয়ে দিয়ে বলে --
না না, তেমন কিছু নয় |একটু চেষ্টা করছি আর কি |
অশেষবাবু একটু খোলামেলা বলেন --
তেমন কিছু নয় মানে? খোদ সেক্রেটারির মেয়ে, আপনার হিস্ট্রি টিচার, তার ক্লাসে লাস্ট বেঞ্চে বসে প্রায় পঁচিশ মিনিট তার ঘুম সহ্য করে, ঘুম ভাঙিয়ে ক্লাস থেকে রেস্কিউ করেছেন |সেক্রেটারির ভাইয়ের সূর্য ভাঁটার থার্ড ক্লাস ইট সাপ্লাই বন্ধ করেছেন |যে ইভা দি মোটেই ক্লাস নিতো না, তাকে ক্লাসে ঢোকাতে পেরেছেন, এসব তো এই কমাসের মধ্যেই |
কদমগাছির অতীন চুপ করেছিল |বললো --
আমি আর একটা দারুন খবর জানি |হরিণডাঙার গ্ৰুপ ডি নকুল বড়দির ভয়ে বিড়ি খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে |
সবাই হেসে ওঠে একসাথে |বৃষ্টিলেখার স্টপেজ এসে যায় |

চার.
বছর গড়িয়ে গেল | দেখতে দেখতে হরিণডাঙ্গা বালিকা বিদ্যালয়ের খোলনলচে পাল্টে গেলো |এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় দুর্দান্ত রেজাল্ট করলো মেয়েরা |সারা জেলাতেই আলোচনায়  উঠে এলো প্রায় রুগ্ন হয়ে যাওয়া স্কুলটার নাম |
কিন্তু সাফল্য শুধু দেয় না মানুষকে, নিয়েও নেয় অনেক কিছু |স্কুলকে ধ্যান জ্ঞান করে ফেললেও বৃষ্টিলেখা অত্যন্ত বুদ্ধিমত্বার সাথে হিসেব নিকেশ করে সুগতর প্রতি, তিন্নির প্রতি নিজের কর্তব্য যথাসম্ভব পালন করে |তবুও কোথাও কি কিছু ঘাটতি হলো? নাকি সময় স্বভাবতই এমন আগ্রাসী?
গত চারদিন সুগতর সাথে একটাও কথা হয় নি |মেয়েটা যন্ত্রের মতো স্টাডি নিয়ে আছে |মা বাবার মন কষাকষি হলে আগে শিশুসুলভ সরলতায় মধ্যস্থতা করতো |সহজেই মিটে যেত |
কিন্তু যে ঘটনার কথা বৃষ্টিলেখা সুগতর কলিগের কাছ থেকে জানতে পেরেছে তার সমাধান কোথায় তা সে নিজেও জানে না | বুকে পাথরচাপা হয়ে জমে আছে অনেক কথা |কাউকে, কাছের কাউকে না বলতে পারলে পাগল হয়ে যাবে সে |
নদীটা যেন ওদেরই জন্য অপেক্ষা করছিলো |হেমন্তের হিমেল বাতাস আনমনে খুনসুটি করছে লম্বা সবুজ ঘাসেদের সঙ্গে |তিরতির করে কাঁপছে বহমান জলধারা |অতীনের হাতে ভরসার হাত রেখে অনেক্ষন বসে ছিল বৃষ্টিলেখা |অনেক্ষন ধরে ভাবছিলো কিভাবে বলবে |
অতীনকেই মুখ খুলতে হয় --
কদিন ধরেই গুমোটমুখে আসছো, যাচ্ছো |বাসেও চুপচাপ, ফোনেও তাই |কি হয়েছে বোলো বৃষ্টি, প্লিজ |

জীবনতো নদীরই মতো |ভাঙতে ভাঙতে, গড়তে গড়তে বয়ে চলা |ঘুণপোকার মতো কি যেন এক অবচেতনা সুগতর সাথে দূরত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে বৃষ্টিলেখার |কিভাবে যেন একাধিক শাখানদী উপনদী মূল জলধারার গতিমুখ, চলন ছন্দ তছনছ করে দিয়েছে ভেতরে ভেতরে |আর ঠিক ততটাই বেপরোয়া স্বতঃস্ফূর্ততায় বৃষ্টিলেখার আহত মন আশ্রয় পেতে চেয়েছে অতীনের কাছে |বিশ্বাস, ভরসার এই মৃত্যু হয়, তো এই জন্ম হয় |

জলে ভেজা নালিঘাসের ঝোপ থেকে একটা সাহসী সারস সহসা উড়াল দিল দিনান্তের আলোয় উদ্ভাসিত নদীর বুক ছুঁয়ে, অন্যকোনোখানে, অন্যকোনো ঘাটে |

মন উজাড় করে সব কথা বলার পর শেষে বললো --
ওই লেডি এটেন্ডেন্টকে সুগতর অফিস থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে |অফিস বস মেয়েটাকে শাস্তি দিয়ে সুগতকে একটা চান্স দিয়েছেন |

বৃষ্টিলেখার চোখের কোণ থেকে গড়িয়ে পড়া মুক্তোদানার মতো অশ্রুকণাটাকে ঠোঁট দিয়ে শুষে নেয় অতীন, নির্দ্বিধায় |
অস্তগামী লাল টুকটুকে সূর্যটা ওদের দুজনকে এক পেলব অপার্থিব আলোয় আলোকিত করে টুপ করে ডুবে যায় ওপার দিগন্তে |
বৃষ্টিলেখা অতীনের চোখে সম্পূর্ণ  সমর্পিত চাহনি রেখে বলে --
অতীন, জীবনের সহযাত্রী হওয়া খুব কঠিন কাজ, বলো?


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোমা দত্ত

সব্যসাচী মজুমদার

সৌম্যজিৎ আচার্য