সৌরভ বর্ধন


হলোজোয়িক কবিতা

১.
আশ্চর্য মায়া কোলে নিয়ে ফুটে আছে একটি ফুল।
আমরা তাকে দৃষ্টি বলে ডাকতে পারি।
কোপানো মাটির দিকে তাকিয়ে ছায়া নাড়ে ঘোড়ানিম
----- একেও স্তব বলা যেতে পারে!
দিশেহারা শোধের জন্য গুটিকয় সেই ফুলের বেড়ি পরে 
বসে আছি আমি, আমার ছন্দজ্ঞান হয়নি এখনও। 
শাপলা নদীর থেকে আমি কল্লোল ছেঁকে তুলে আনি কাম। কখনও কখনও নিরন্ন খুশির চড়া গেঁথে দিই পেটে।

২.
তোমার আশার কথা, আসবে তো বলেছিলে বাষ্পরাগ! 
রূপের হাউই সাথে নিয়ে এসো। 
ম্যারাথন জেরার মুখে আমার অবস্থা যে কীরকম 
তা তো বৈঠা জানে, বিস্তর জল ও জলের কণা 
তাকে নষ্ট করতে হয়। তাই অগত্যা 
আমি সমকোণী চৌপলের কোণে কোণে নত হই, 
সুপারির দেহের মতো কেঁপে ওঠে কর্পূররস।
সাদাটে বেগুনের গোলগাল কাঁটায় ক্ষীর জমে থাকে বলে রিক্ত আবেগ আমাকে নিঃশুল্ক প্রবেশাধিকার দিয়েছে। 

৩.
বোতাম লাগানো এই কথপোকথন 
চাও না যখন আর, মুছে ফেলো বুকের লোমকূপ।
তোমার বুকে যে উপগ্রহ দুটি এখনও বাস করে! 
আমি জানি অ্যালভেরা দিয়ে কেউ কথার শীত করলে 
তুমি তাকে ওম দিয়েছো।
জানি অবচেতন একটি অস্থির পুরুষ, 
তবুও তাকে জন্ম দেওয়া শিল্পেরই কাজ।

৪.
খাদ্য গ্রহণের যে তিনটে কাল হয়, 
তারা ভিন্নভাবে সম্পূর্ণ নিরাপত্তাহীন। 
সকল জন্মচক্র ধরে ধরে যদি এগোনো যায় 
তবে আমাদের নরকবাস স্বাভাবিক হয় আরও।
আমরা কোনো জ্যামিতিক চিত্রের পাশে শুইনি,
লাঠিপেটা চেহারা নিয়ে চারিদিকে ছিটিয়েছি থুতু;
তখন ঘেন্নায় সংরক্ষণ জরুরি হয়ে পড়েছে।
খণ্ড খণ্ড আমাদের স্বত্তাকে ইস্তেহারিক প্যাগোডা ভেবে
বসে গেছে তদন্ত কমিশন।

৫.
তারপর বিভিন্ন ফুলগাছে 
আমরা একসাথে ফল আঁকি, বিভিন্ন করাতকল 
আমরা একসাথে চিরে নিই খাবারে; পিছলে যাই, 
ফিরে আসি, এসে বলি - আয় ভক্তি আয়,
লাক্ষা জ্বালাই, গদগদ হই ছিঁড়েখুঁড়ে। 
চাষাদের মতো শাঁখের মালা, পুঁতির থলে, 
তারামাছের বাজু উপহার দিই 
আর দোল মাখি দোয়েল পাখি।

৬.
পরিপাক ও শোষণ শেষে আত্তিকরণের সময় যখন এলো
আমি ঝঞ্ঝাহীন জন্তুহীন দুটি নয়ন মুদে বসে আছি,
যেন অপাচ্য বস্তুর বহিঃস্করণ খুব জরুরি এসময়। 
ফলে আমার কোমরে বাঁধা গোলাপী গামছাটি 
প্রথমে লাল ও পরে অপরিচিত খঞ্জনীর গোঁ ধরে থাকে।
বজ্রযোনির খোয়ার ভিতরে ডানা 
ঝাপটাতে ঝাপটাতে হজম হয়ে যাই আমি।
যেন হৃদয়ের দ্বার ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছি,
আমাকে তুমি জীবন বলে ডাকতে পারো অথবা না।

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোমা দত্ত

সব্যসাচী মজুমদার

সৌম্যজিৎ আচার্য