চয়ন ভৌমিক
পরিচিত ছায়াদের ট্রাফিক
হে মায়া সকাল, তোমার সুন্দর আক্রমণে, বিধ্বংস হয়ে গেছে গতরাতের যাবতীয় অন্ধকার। এ' যেন এক নতুন জন্ম। এই আলো পাকা ধানের মতো উজ্জ্বল। কোন গোপন হিসাবে , এক আশ্চর্য ঢেউ, আড়ামোড়া ভেঙে ছড়িয়ে পড়ে, সমস্ত হিংসার ভিতর, অজ্ঞাত থেকে যায় তার কারণ। সমস্ত রিপু দপদপ করে তেলহীন প্রদীপের মতো। কোথা থেকে ভেসে আসে শুদ্ধ স্বর! আমি ভয় পাই। এই ঝলমলে সকালকে জড়িয়ে ধরতে চাই সবলে। তার সমস্ত ব্রীড়া ও ভঙ্গিমা লেগে থাক আমার শরীরে সারাজীবন, বাউল সঙ্গীতের মতো।
এটুকুই প্রার্থনা... এটুকু ভিক্ষান্ন নিয়েই, মৃত্যুহীন হয়ে যাক ধুলোবালি জীবন।
২
রহস্যে মোড়া কোনো রূপকথার রাজকুমার এখনো ঘোড়ায় চড়ে স্বপ্নে আসে তোমার। তার ইরানি ঘোড়ার ক্ষুরের ধুলো, উড়ে এসে পড়ে, ওই চেপে বসা বাহারি অলংকারের গায়ে। সহসা মসৃণতা ছিঁড়ে বেরিয়ে আসে অভিমানের ফাটা ত্বক। ছেঁড়া মোজার ভিতরে জমতে থাকা শীত, রক্তাক্ত হয়ে ভেসে যায় দূর শরতের দিকে। কাঁসরের ঘন্টায় কেঁপে ওঠে কয়েক মাইল লম্বা মেঠো শৈশব। সেখানে কী আর ফেরা যায় না? আর কি অপেক্ষায় থাকা যায় না, চুলখোলা শীতের দুপুরের দিকে? শ্মশানের মাটিতে কাশফুল ফুটে ওঠে আগমনীর অতীত সুরে। গোপনে হেলে যেতে থাকে বাহারি রান্নাঘর, পালঙ্কের অন্ধ কারুকাজ। চেনা লাল ফিতে, দশভুজা হয়ে ফিরে ফিরে আসে, অন্য এক বাড়ির দরজা খুলে।
৩
লেখার গভীরে আগুন চলে তোমার। ছাই চাপা বুক কেঁপে কেঁপে জমিয়ে রাখে ব্যথা।
আরো নীচে জলাধারের মায়া, সাদাকালো রিড
জঙ্গলমহলের জটাচুল বালকের হাতে, খেলনা তিরধনুক।
জোয়ারভাটার জীবন বন্ধুর হয়ে ওঠে একজোড়া উল্লসিত চোখের সামনে। তার স্তনবিভাজিকার মসৃণ পথে, অপার রহস্য লিখতে লিখতে, চলচ্চিত্র শেষ হয়ে যায়।
৪
উত্তেজক অথচ কী নরম সেই রাত। যেন চাঁদ জ্বলে উঠলো কিন্তু পৃথিবী পুড়ে গেল না অকারণ।
এলোমেলো বাতাস সাক্ষী আছে, সেইসব ভেঙে যাওয়া কাচ ও মসৃণ পিঠে প্রতিফলিত নীল আলোর।
নামকরণ থেকে সমাপ্তি - পুরোটাই চমক। যেন কবির ভাষাতেই, জ্বলে গেল অথচ পুড়িয়ে দিয়ে গেল না।
উত্তরমুছুনদ্বিতীয় কবিতাটি সবচেয়ে ভালো লাগল আমার। যদিও বাকিগুলিও কম ভালো লাগেনি।
লিখে যেটুকু আনন্দ পাই, তার থেকেও বেশী আনন্দের যখন কেউ গভীর পাঠবোধ থেকে সেই কবিতাগুলো চাক্ষুস করতে পারে।
উত্তরমুছুনকী অবলীলায় তুমি এইরকম শব্দবিন্যাস ঘটাও চয়ন! চমৎকার লাগল।
উত্তরমুছুনকি যে বলি তোমায় যুগান্তর
মুছুন