উমা মণ্ডল



হে  , নৈঃশব্দ্য----
 
 

 
নির্জনতা  ভালবাসি  আমি ; ফিরে  ফিরে  যাই  সেই
নৈঃশব্দের  কুঠারের  কাছে  ছোবলের  স্বাদ  নিতে  
নেশা  গ্রস্ত  হয়ে  যাচ্ছি  রাত্রিচর  ব্যথা
এত  বিষাদের  নদী  আকর  কেটেছে  কপালের  মধ্যমায়  
শুধু  ভেসে  যায়  ইহকাল  পরকাল
 
হে  অন্ধ  নাবিক  পাড়  কই......
স্রোত  ভেঙে  চলাচল  করে  ক্লান্ত  শুশুকের  দল
স্বাদু  অমৃতের  লোভে  কাঁটা  মনসার  বিষ  শরীরে
নীল  দেখি  সতেজ  পাখনা
ছেড়ে  দাও   ঈশ্বরের  দূত  ওই  মূর্খ  প্রাণীটিকে
 
 
 
 
দিনকাল  চলে  যাবে
পুরাণেতে  লেখা  আছে  লম্বা  হিসেবের  ফলাফল
লাঙল  ফলিয়ে  ঘাম  ঝরায়  পূর্ব  নক্ষত্র  দেহ
জরা  নেই  যযাতির  মতো
মুঠো  মুঠো  প্রাণবায়ু  তুলে  দেয়  সমপদী  তালে
বেঁচে  থাকো  চিরঞ্জীবী  সূর্য
শুধু  একটাই  প্রার্থনা 
মহামৃত্যুঞ্জয়  মন্ত্র  লেখা  আছে  যে  ত্রিভঙ্গি  নৃত্যে
সাধনায়  যেন  জয়  করতে  পারি  সেই  পট  
নির্জনতা  কাছে  এসো  আরও


 

 
ভাষা  নেই  জল  শুষে  নেওয়া  বৈশাখের  ভাষা  নেই
হাঁটু  মুড়ে  বসে  থাকি  মহাশূন্যের  সম্মুখে
হাতে   ধরা  আছে  শুষ্ক  দীঘি
মৃণালের  নিথর  শরীর
 
জন্মাবধি  শুনে  আসছি  সন্ধিপূজা , একশ  আট
পদ্ম  চাই ; অশুভের  পাঁজরে  আঘাত  আনবে  সে
ছুঁচ  হয়ে , অকাল  বোধন  হবে  না   ঐহিক ? 
 
মেঠো  ইঁদুরের  স্বপ্নে  দেখা  রাজহাঁস  বলেছিল
ধান  হবে  ঘড়া  ভেঙে ; মিথ্যার  প্রবাদ .........
রাজনৈতিক  চাদরে  আশ্রিত  বাহুবলি
সম্মোহনে  ডাকে  গন্ধ  ছড়িয়ে  আঁশের
 
 
 

 
অন্ধকার  কি  বান্ধব  নির্জনতার  বা  শান্ত  বয় যে  ঝর্ণারা ..... পাথরের  একাকীত্ব  ভেঙে ; তারকরুণা  বিলাস  বাঁশি  অরণ্য  চিরে  সবুজ  আনে  ধূসর  পাণ্ডুলিপিতে , তবুও  কলমে  পোষা  মৃত্যু  যখ  হয়ে  হাসে
 
কী  ভীষণ  ক্লাইম্যাক্স ; পর্দা  জুড়ে  শীত  বাবু  হয়ে  বসে । মাথার  ওপরে  বন্ধ  পাখা  , একটানা  রাত্রির  কান্না ; বাস্তুসাপের  শাবক  তুলে  নিয়ে  গেছে  কালো  পেঁচা । হরিধ্বনি দেবে  না  গৃহস্থ  আত্মাদল .........   ঈশানের  মতিগতি  ভালো  নয় । যদি  বুড়ো  বটের  মাথায়  বাজ  পড়ে  উত্তর  দেবে  কে  কোন  সাহসী  বাহক ? এতগুলো  গৃহস্থকে  কাঁধে  নিয়ে  যেতে  পারবে  তো  ভৈরব      
 
 
  
 
 

 
আজকাল  স্বপ্নে  থাকি  বেশি ; নিবু  নিবু  জ্বলা  বাতি
জাদুঘরের  পথিক  গুহাচিত্র  থেকে  উঠে  এসেছে  কাঁধে  বল্লম
রক্ত  নেবে  নাকি
মন্দিরের  দরজায়  ধাক্কা  মারি ; পাথরের  মূর্তি
শুধু   মাত্র  বাদুরের  ঘর  সামলায়
 
ছুটে  যাই  পাখিদলে পরিযায়ী  ব্যথা  বোঝে
উপনিষদে  কলম  লেখে ; আভাগীর  ইতিহাস
 
পরিবর্তন  হবেনা  কিছু  তবুও  ঝড়  উঠবেই
ধুলো  চোখে  জল  আসবে আগাছা  উঠে  যাবে  শিকড়
থেকে ; ভূমি  উৎপাটনে  অংশগ্রহণ  করবেই
সমাজ  সংস্কারকের  দল , ইতিহাস  হয়ে .........  

 
 
 

কতকাল  গর্ভতে  থাকবো  মাগো .........সেই  প্রাচীন  সমুদ্র  মন্থন  কালে  আশ্রয়  নিয়েছি । যুগ  থেকে  যুগে  ডানা  বেঁধে  হেঁটে  গেছি । তবু  কালাধার , বন্দী  গৃহ ; পায়ে  দলে  চলে  যায়  পাতালের  কৃ্মি । গুঁড়ো  হয়ে  গেছি । আর  কবে  জন্ম  দেবে  নৈঃশব্দের  স্বয়ম্ভুকেশেষ  হয়ে  যেন  না  যায়  কলির  গান ............ 




 

হাতে  কিছু  নেই  জালি-কাটা  করতল । ভোজালির  কোপে  খণ্ড  খণ্ড  ভূমি  কাল । জীবাশ্মের  নদী  খেয়ে  গেছে । বিষাদ  বাতাস  বয়ে  যায় । বসি  পাশে , সেই  জল ......কোন  মাঝি  নেই , নেই  ভাটিয়ালি  তান ; দুরন্ত  স্রোতের......... 
 
বৈঠা   যখন  কলম  হয়ে  স্রোতের  অক্ষর  আঁকে , লোকে  ভাবে  বাণ  ডাকে । কবি  নয়  ছন্দ  বাঁক  বোঝে  না ; নিষ্প্রাণ  গ্রহপুঞ্জ । ধার  নেওয়া  আলো  বুকে  বেঁধে  রাখে  বরফ  জলের  আত্মীয়রা



 

মধ্য  রাত্রিরের  পথ , বৃষ্টি  এসে  ভিজিয়ে  দিয়েছে । বেড়ালের  থাবাগুলি  জ্বলন্ত  বারুদ  যদি  বিস্ফোরণ  ঘটে  নিঃশব্দে , আঙুলে  ছাপ  দিয়ে । রাশি  রাশি  মূক  মৃত্যু । কতগুলি  ভেলা  দেবে  ভাসিয়ে  জলেতে .......মাংসাশী  মাছেরা  টেনে  নিয়ে  যাবে  হেঁশেলের নিরাপদ  আস্তানায় । বনভোজনে  মাতবে , তদন্ত  হবে  না । কলমের  কালি  নির্জনতা  বোধে  স্নান  করে  এক  একটি  হত্যা  চিত্র  কল্পনা  করেছে



 

 
রাত্রির  আকাশ  ছেয়ে  আছে  নক্ষত্রআসনে
এইসময়েই  তার  আসা  নিঃশব্দ  চরণে ;
আসলে  সে  কায়াহীন  ছায়া
এক  বুদবুদ  উড়ে  বেড়ায়  শিকলহীন  পায়ে ।
স্পর্শ  থেকে  বহুদূরে  অথচ  গলার  ঠিক  পাশে
আদুরে  বান্ধবী  না , কি  প্রেমিক  বান্ধব
ঠিক  জানিনা ; হয়তো  শর্তহীন  বন্ধু
প্রশ্নচিহ্ন  ঝুলে  থাকে  টিকটিক  শব্দে
 
ঝুপ  করে  পড়া  আশা  আমার  বোধের  জন্মঘরে
ঘুরপাক  খায়
অনুভূতি  আঁক  কাটে  গোলাকার  চক্রে
হে , নৈঃশব্দ্য ……ভাষাহীন  বোধিবৃক্ষ ; আমার  আত্মজ





       


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোমা দত্ত

সব্যসাচী মজুমদার

সৌম্যজিৎ আচার্য