পিয়ালী বসু ঘোষ

 


কথার মৌতাতে

"লেভেল ক্রসিং এ গাড়ি থামতেই 
রাস্তা বলল,ওপারেতে গ্রাম
শহুরে মুখোশ, টুপি জামা জুতো 
এখানে খুলুন ,জমা রেখে যান"

পাতা বিহীন গাছের সংসার দেখতে দেখতে রহস্য কাহিনীর মত এগিয়ে চলছিল সময় । মাথার মধ্যে বিলি কাটছিল ব্রত চক্রবর্তীর এই কটি পংক্তি।শীত এলে চেনা শহরটা বদলে যায় দ্রুত ।রাতারাতি এক নির্বাক চলচ্চিত্রের মত একা ছড়িয়ে থাকে বিষণ্ন জলের গানে । পূর্বজন্মের স্মৃতির মত উঠে আসে বিবিধ নিরুদ্দেশ সংবাদ।


ঘোর কাটলে ভাবি জমা রাখার মত আহরণ ছিলই বা কবে ?কেবল  শীতের পিঠে সরল গদ্যের মত এলিয়ে ছিলো পথ। সে পথে কখনো কখনো পিছিয়ে পড়তে ভালোলাগে ,দুপাশের ব্যস্ততা ঝিমিয়ে এলে এগিয়ে যাওয়া পথ বিনুনি দুলিয়ে নিজের খেয়ালে চলে । পরশ্রীকাতর শহুরে আলো চোখে মুখে ছিটে  এলে মুখ আর মুখোশ চিনতে পারিনা আজও। নিজেকেই আড়াল করি নিজের অতীতচারিতা। 

কথার ভিতরে এখন কথা জেগে ওঠে।
 একেকদিন এমন হয়।একেকটা দিন প্রবল শ্বাসকষ্টপ্রবণ শব্দমালা ভীড় করে আসে, ভুলিয়ে দেয় আমার মানুষী আস্তানা, অহংকারী মুখ ।
কুয়াশা নেমে আসে অনাহারী কথার মৌতাতে। সেসব কথাদের আমি আগলে রাখি,স্নেহ দিই  আমর্ম।

প্রাচীন বৌদ্ধগুম্ফার ভিতরে রঙীন ফ্রেস্কো দেখলে  আচমকা আমার কপালে ঘাম জমে। মৃদু গ্রীষ্ম চেতনায় ক্ষুদ্র একাকিত্বকে মুক্তি দিই  | মনে মনে ছুঁই পদ্মপাণি বুদ্ধের পা, নিজেই হয়ে উঠি নীলপদ্ম | 






মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সোমা দত্ত

সব্যসাচী মজুমদার

সৌম্যজিৎ আচার্য