নীলম সামন্ত
চক্রবর্তী' একটি বৃক্ষের নাম
অনেকদিন কেউ ঘরে ফেরেনি৷ সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর জুতোর ফিতে বাঁধতে বাঁধতে ভাবি খুব কি দেরি হয়ে গেলো? সময় বুঝতে পারিনা৷ ঘড়িটা বন্ধ বেশ কিছুদিন৷ কবজিতেও ঘাস বেড়ে উঠছে৷ একটা মথ উড়ে এলে দেখি মুখে করে সন্ধে ঢুকিয়ে দিচ্ছে ঘরের ভিতর৷
দেরী আমাদের কোনদিনই হয়না। খড়কুটোর মধ্যে নিজের যায়গা করে নেওয়ার পর বৃক্ষের জন্ম দিই৷ দু একটা গোলাপ। অসময়ের চাঁদ নেমে আসে পায়ের বুড়ো আঙুলে।
হঠাৎ করেই আমার মনে পড়ে যায় এযাবৎকাল আমি খুঁজে চলেছি একটি স্ফটিক পুরুষ৷ যাকে দূর্গের ফটকের মতো বল্লমবিদ্ধ করে সোজা শিরদাঁড়ায় সাজিয়ে রাখা যাবে সাজঘরের চৌকাঠে। যার শরীর থেকে বেড়ে উঠবে কদমগাছ৷
অথচ আমি আজও ছড়িয়ে পড়িনি সেদ্ধ ধানের মতো। ঐতিহাসিক চরিত্রের ভাস্কর্য গোছাতে গোছাতে শব্দ হয়। বহু পুরোনো থেকে নৌকা নামে৷ নৌকার ওপর ছড়িয়ে থাকে শুকনো গোলাপ আর আদরের নামকরণ। সুযোগ বুঝে গোপনে ডুবে যায় ভগ্নপ্রায় চাঁদ৷
এভাবেই মনে করি ঈশ্বরের পূজারির কথা। উঠোনময় ছড়িয়ে ফেলি মুরগির রোগগ্রস্ত পালক। কার কে ছিল কে জানে৷ তাও কথা বলি। তলপেটের ওপরে রাত্রি ঘন হয়৷ একদল মানুষ সেই রাত্রি ডিঙিয়ে হেঁটে যায় শহরের দিকে।
আমার কথা আর কি লিখি?
একদিন কঠিন হয়ে যাবো ভুমিকম্পে জেগে ওঠা সদ্য ভঙ্গিল পর্বতের মতো৷ তুমি এসো মাঝে মধ্যে ঘুড়ি ওড়াতে। যে পাখি শিষ দেয় তাকে শিখিয়ে দিও আমার নাম। এখানে এলে বলব "চক্রবর্তী একটি বৃক্ষের নাম।"
আহা আহা, কী ভালো লিখেছ নীলম। গভীর এক দর্শনাক্রান্ত বিষাদ বা দহন লেগে আছে। তাও সুন্দর। কিছু কিছু প্রতীক, কিছু ব্যঞ্জনা তোমার স্বতন্ত্র প্রকাশটিকেই তুলে ধরল। শেষে বলি: " হঠাৎ করেই আমার মনে পড়ে যায় এযাবৎকাল আমি খুঁজে চলেছি একটি স্ফটিক পুরুষ৷ " সাংঘাতিক ভালো বললে। কবিরা হয়তো এভাবেই বলে।
উত্তরমুছুনআপনি পড়লেন আনন্দ পেলাম। ভালো থাকুন।
মুছুন