নিলয় নন্দী
হ্রস্বদীর্ঘকথা
দীর্ঘকবিতার দিন শেষ।
ইতস্তত বনবাদাড় পাতায় পাতায় রক্তপাত
সূর্য ডুবে গেলে গাঢ় অন্ধকারে মিশে যাওয়ার আগে
দিগন্ত লাল আর দীর্ঘশ্বাস, সখ্যতা নিবিড়
আঁকাবাঁকা রাস্তা শরীর বরাবর...
জেব্রাক্রসিং ছেড়ে শিরা উপশিরা আশ্চর্য সফর
ইনস্টা রিলে মিথ্যে দেহভঙ্গি নিশিডাক বা
তেরে মেরে মিলন কী ইয়ে রয়না
কেঁপে ওঠো আরশিনগর, বৃথা হয়রানি
আবেগ,অতিকথন বা ক্রমাগত বাঁশির সুর...
একমাত্র বিলাপ টিঁকিয়ে রাখে সাবলীল প্রেম
একমাত্র দূরত্ব টিঁকিয়ে রাখতে পারে দীর্ঘকবিতা
বাকি সব কমা ড্যাশ সেমিকোলনের সংসার -
আমার গভীরে জল, জলের গভীরে নুড়ির আলাপ
মাছেদের ইতিউতি সংলাপ, রংবদল
নির্জন দ্বীপ ডুবে যায়, গহ্বর খুঁজে নেয় সাপ
কবিতার গিঁট আলগা হয়ে গেলে দীর্ঘ শোকসভা
প্রতি পংক্তিতে অগুরু গন্ধ উদ্বায়ী কর্পূর
যে যায় সে যায় বাকি সব পরমান্নভোজন
পরিচিত উদগার, এসো, শব্দের শরীর পান করি
চুমুকে চুমুকে অক্ষর ফেনা ঢেউ ভাঙার কৃৎকৌশল
একটি কবিতা থেকে ছিঁড়ে আনি আর একটি কবিতা
দীর্ঘ হ্রস্ব বা হ্রস্ব দীর্ঘ বিন্যাসে সমবায়ে
সংসার ভেঙে দিচ্ছে যত আঁতেল বরাহনন্দন
সংসার গড়ে নিচ্ছে গুচ্ছ গুচ্ছ প্রেম পরস্মৈপদী
ছোট গ্রাম অবাধ্য কামনা পুড়ে গেলে
ঘুম নদী নদী ঘাম ভেসে গেলে
তুমিও কি দু'লাইনে লিখে ফেলো দীর্ঘতম সংলাপ!
তবু আমি পাতার পর পাতা লিখে চলি
কার্ণিশ থেকে লাফ দিয়ে ছাদের পর ছাদ মহাকাব্য
শুকোতে দিই মাঘের রোদ্দুরে...
স্তবকে স্তবকে হিম গুঁড়ো গুঁড়ো কুমারী কুয়াশা
বাতিল চিঠি, পুরনো সাইকেল আর গলি কাব্য লিখে যাচ্ছি ক্রিং ক্রিং ডাকহরকরা
পূর্বজন্মের ডাক, ও অসুখ ও আরোগ্য, দুজনেই এসো
পাটি পেতে বসো। দীর্ঘ সুখের কথা বলি।
টুকরো টুকরো বিরহ, বিরাগ বা ক্কচিৎ আনন্দ
বুক ফুঁড়ে ঘোরানো সিঁড়ি স্তব্ধ চাঁদ ফিসফাস স্বর
ক্ষমতার প্রোপাগান্ডা বা পঞ্চম কাব্যগ্রন্থ
হ্রস্বদীর্ঘ দীর্ঘহ্রস্ব আলাপচারিতা
বন্দরের ইশারা, হাওয়াকল বা প্রবাস পান্থশালা
ঘাসের ভিতরে চাপ চাপ রক্ত, রক্তে সুররিয়ালিজম
বালিঘড়ি মেপে নিচ্ছে কবিতার পতন বা সিঁড়ির
কে যেন সুতোয় গেঁথে নিচ্ছে শব্দ শীৎকার অগ্রন্থিত
গভীরতা মাপি, মাপো, মেপে নাও আদিম কবিদল
যদিও কবিতাটির কোনো নাম ছিল না...
খুব ভালো লাগলো লেখাটা।
উত্তরমুছুনবেশ লাগলো
উত্তরমুছুন