পিয়ালী বসু ঘোষ
অযথা বকুল ঝরে
ব্যক্তিগত একটা ছুটিতে হারানো চটি জোড়া খুঁজতে যাবো ভেবে কাজ গুছিয়ে নিয়েছিলাম, এদিকে ঝোড়ো বৃষ্টি। নাকাল জনজীবন। তবুও আমি যাবই। এমন কত প্রতিজ্ঞা নিজের সাথে করে করে তামাদি খাতায় ঠাঁই পেয়েছে। একথা মনে পড়লেই আরও শক্ত হয়ে ওঠে অযত্নে ঝুলে যাওয়া চোয়াল। আয়না খুঁজি। মোবাইলের টুং শব্দে দেখি মুক্তগদ্যের ডাক। আয়না দেখার কথা ভাগ্যিস ভুলে গেছি ততক্ষনে, বলি, বেশ। তবে শুরু করাই যাক। এমন শুভলগ্ন মোটেই সুলভ নয়। জলভরা মেঘগুলো সহজে মাটিতে নামেনা, অথচ যেই আজ নামলো ওমনি ভাতের হাঁড়িতে নাচছে ঘুম। একটা আলুনি জীবন গদ্য রহস্য সমাধানের ডাক পেলে মুক্ত করে দেয় বসন। পথনির্দেশিকা ভেঙে ঢুকে পড়ে অন্যের জলভরা সন্দেশ এর তালে। শাঁস অবধি পৌঁছতে পৌঁছতে তছনছ করে যাবতীয় নির্মাণ। তারপর আহাম্মক বনে দেখে লোকটার নিজস্ব অক্ষরচিহ্ন নেই! গোনা আয়ু, এই ফুরায়, এই ফুরায়। আসলে শরীরের সব নুন ধুয়ে মুছে কখন যে পানীয় হয়ে যায় , সে খেয়াল থাকেনা। টায়ার পুড়িয়ে উষ্ণ হতে চাওয়া জনগণের মত শাক দিয়ে মাছ ঢাকি , থুড়ি পোড়া গন্ধ ঢাকি । সম্পর্ক পোড়া গন্ধ।
আলোকরঞ্জন লিখেছিলেন
"বোধিসত্ত্ব পাখি হয়ে জন্মাবে আবার ডাক নাম ধরে
আমার গোধূলি থেকে ছোঁ মেরে তোমাকে নিয়ে যাবে
সম্পূর্ণ আগুন সাক্ষী করে "
আমিও চেয়েছিলাম ররফ জলে ডুবে তোমার উষ্ণতা। তুমি আমাকে উদ্বাস্তু সম্বোধন করে ছুঁড়ে দিলে গলিপথের স্টোনচিপে। এই মুহূর্তে আমার ঠিকানা নেই। তোমার শহরে 'কোল কাহিনী ' চৰ্চা চলেছে কিছুদিন আগেই, মশাল জ্বলবে,আগুন নিভবেনা, উৎসব হবেনা কিংবা হলো'র শহরে বেপরোয়া মিডিয়ার গালে চড় মেরে ঝড়ও ফেরার। সে জানে এ ধ্বংসস্তুপ এ শেষ দেখার কিছু তো নেই আর।
বহুরূপী তোমার শহর। শীত আসেনি বদলে শীতের জাত ভাই ডাক দিয়ে গেছে । কি করে আসবে? তার আগেই বসন্ত এসেছে শিমুল পলাশ নিয়ে,অসময়ের ফুলকপির মত, বেশী দামে বিক্রি হয়েছে তার জলজ স্বর।
এখন কপালে বিনবিন করছে ঘাম। বিভ্রান্ত এ দেশে গ্রীষ্মের চলে যাওয়া নেই। গুলমোহরের গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে বর্ষা। গলা শুকিয়ে আসে। রক্তে বাড়ে বরফকুচি, চিনি। জল থৈ থৈ করে তবুও তৃষ্ণা জাগেনা আমার। মিথ্যে রাজপোশাকে আমাদের অভিষেক হয় রোজ, তাই ঘরে ফেরা হয়না। ঘর বলতে চারটে দেওয়াল, একটা জানালা, অর্ধেক পর্দা।
শিল্পীর কারিগরির কাছে কবিতার খবর নিই, ভূপেন বোস এভিনিউ জলে ডোবেনা কিন্তু আমার লেখা ন্যাকা আবেগ, যার কিনা কবিতার মত শরীর, আশিরনখ ডুবে গেলো যে ওই রাস্তায়।
এদিকে বাংলাবাজারের কেষ্টু বিষ্টু দাদা হাতে বেল ফুল ঝুলিয়ে বলেছে আমি যা লিখি তা কাঙাল ভোজন। সাহস করে মাঝে মাঝে মুক্ত মনে গদ্যের শরীরে হাত বোলাই, না না যেভাবে দাদারা...... সেভাবে নয় মোটেই। যদিও একথা সত্যি, দুঃখ টুক্ষ লিখতে এলেম লাগে, ভাবনার মনোক্রোমে বড়শি নিয়ে বসলেই হয়না। তবে জানতে ইচ্ছে করে যারা স্রোতের দোকানের বড়সড় খদ্দের, ঢেউ চেনেন। মানুষ চেনেন কী?
অদ্ভুত সুন্দর একটা পড়লাম, মুক্তছন্দ যেন!
উত্তরমুছুনঅনেক ধন্যবাদ জানবেন।
উত্তরমুছুনচমৎকার গদ্য। Combative & subversive. কঠিনতম প্রশ্ন দিয়ে লেখাটা শেষ হল।
উত্তরমুছুনঅলোক বিশ্বাস
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
উত্তরমুছুনঅনেক দিন পর আবারও তোর মুক্ত গদ্য পড়লাম। ভাল লাগল রে।
উত্তরমুছুনভালোবাসা জানিস দি
মুছুনঅসাধারণ, ঝর্ণার মতো
উত্তরমুছুন