পোস্টগুলি

মার্চ, ২০২৫ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

সম্পাদকীয়

ছবি
  বাতিঘর অনলাইন পরাবাস্তব সংখ্যা  পরাবাস্তবতা (Surrealism) শিল্প ও সাহিত্য জগতের এক বিশেষ আন্দোলন, যা ১৯২০-এর দশকে ইউরোপে উদ্ভব হয়। এর প্রবর্তক ছিলেন ফরাসি কবি ও সমালোচক আন্দ্রে ব্রেঁতাঁ। পরাবাস্তবতাবাদ এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি, যা চেতনার গভীরে লুকিয়ে থাকা অবচেতন মনের প্রতিফলন ঘটাতে চায়। সাধারণ বাস্তবতাকে অস্বীকার করে, পরাবাস্তবতার শিল্পীরা স্বপ্ন, কল্পনা ও অবচেতন জগতের ভাবনাকে প্রাধান্য দেন। বাংলা সাহিত্যে বিশেষত কবিতায় পরাবাস্তবতা প্রতিফলিত হয়েছে মূলত ১৯৪০-৫০ এর দশকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা, বিশ্ব রাজনীতির পালাবদল, এবং বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলন সব মিলিয়ে কবিদের মনের গভীরে এক অস্থিরতা এবং মানসিক দ্বন্দ্বের জন্ম দেয়। সেই সময়ের কবিরা বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে নিজস্ব অবচেতন, দুঃস্বপ্ন এবং ভাবনার নানা রূপ তুলে ধরেন। বাংলা কবিতায় পরাবাস্তবতার ধারাটি প্রচলিত কবিতার বিন্যাস ও বিষয়বস্তুকে ভেঙে দেয়। প্রচলিত চিত্রকল্প, ছন্দ, এবং রূপকগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কবিরা নতুনভাবে বোধ ও ভাব প্রকাশের চেষ্টা করেন। বিশেষত জীবনানন্দ দাশের কবিতায় পরাবাস্তবতার স্পষ্ট প্রকাশ দেখতে পাওয়া যায়। তার কবিতা...

সৌমনা দাশগুপ্ত

ছবি
  কেন্দ্রাভিগ  তোমার জরায়ু চুঁয়ে মৃত বীজেদের চলাচল শস্যখেতের থেকে কুপিয়ে তুলছ যে ওপেক অন্ধকার একদিন সেঁটে যাবে করোটির ক্যানভাসে শুধু কেন ভিজে যাও ঢেউ উৎসাহে লোহিত ঘামের ঢেউ ঝরে যাবে একদিন বাতাসে অর্বুদকণা ভাবছ জমাট বাঁধছে রং রং নয়, সেতো চাঁদের রক্তপাত সে-ও ডোবে তাড়িত জ্যোৎস্নায় টলটলে চাঁদমাটি, ফেটে যায় ওম পাঙাশ রঙের ভোর শ্যাওলা সম্ভার লেখে হিমেল চূড়ায় সিঁধ কাটো বৃষ্টিরথ, কেন্দ্রাভিগ                                   

সৌরভ বর্ধন

ছবি
  কাঙাল আমাকে কেমন কাঙাল করেছে রোদ!  দমবন্ধ রুটির ভেতর কষ্ট যেন আরও অর্জিত ভ্রম, আরও জোয়ানের ঝাঁঝ থরোথরো। যদিও কিছুদিন পর এই নৃসিংহ দশা কেটে যাবে আমার তারপর বিরাম, নেমে আসবে ক্ষীণতোয়া শব্দের প্রহেলিকা।  সারা দিনমান আমি ছান্দোগ্য রীতিতে অধিষ্ঠিব পরকাল আর সেই কাহিনীর জ্যোতি গাঢ় সাম্রাজ্যের ইতি-উতি উড়িবে, বিষপিঁপড়ের কঠোর শাসন নেমে আসবে স্নানে।  ভগ্নপ্রায় গৃহ সকল, কুহক আর মোরগের ধর্মসাপ  কিলবিল করে বাজবে হাতে; অথবা গলায় আটকে যাবে বিষন্ন রস  অস্তিত্বের প্রতি নিষ্ফল উপক্রমণিকা।  পরিত্যক্ত নই;  তাই জ্বলজ্বল ক'রে রুগ্ন পাতার ঝোপে আমারই ফুল ফোটে, অকথ্য শীতে গীত হয় গ্রীষ্মের সাঙ্ --- এমনই সাঙাৎ ধরা স্বভাব!  তাকে দাম্পত্য ছুঁড়ে আহত করার মতো প্রণয় দরকার এখনই। একান্ত নারীর ছিদ্র দিয়েই যেটুকু উষ্ণ জল, ঠিক জল নয়, তরল  অথবা এখনই ঘাট থেকে তাড়িয়ে আনতে পারি মসীহার মুণ্ডুহীন শব।  তবুও রাজার উর্ধ্বপাতন ও প্রতিরক্ষার টানে  সমূহ কারিকুরি আর শস্যবীজ সব পুষ্প হয়ে ফুটেছে উদ্যানে। সকলেই ধরা খেয়ে তৃষ্ণা নিবারণ হেতু গলে গলে পড়েছে চেয়ারে ব...

সমর্পিতা ঘটক

ছবি
 নীলচে যন্ত্রণা ও লিওনেল মেসি প্রায়শই চমকে উঠি, কাচের বাসন ভেঙে পড়ছে মেঝেতে, রাস্তায়, গহিনে ঝনঝন... দোকানঘর কাপপ্লেট, সেরামিক বয়াম, পায়েসের বাটি, ছড়িয়ে ছিটকে পড়ল কারুকাজ ড্রাগন মুখ, ইন্ডিগো জ্যামিতি... পরিমিতিবোধ, পান থেকে চুন ... জ্ঞান দিচ্ছে অস্পষ্ট মুখ পাশের ছাদে আমতেল,  ডবকা লেবু... রৌদ্র স্নান... নিখুঁত গড়ন!   নীল ঢাকনা... স্বচ্ছ গা ফ্যান্টাসি  দীর্ঘ... অভয় মিত্রের মতো জাগলারি করছি মেসির চুম্বকবিদ্যা সগৌরবে আসিতেছে...                     হরিণের মতো উজ্জ্বল অরণ্য আমার হাতে, মাথায়, কাঁধে দামি ক্রকারিস আমি আসছি, তিনটে অ্যাসিস্ট আর দুটো গোল নিশ্চিত।

দেবদাস রজক

ছবি
  গোলাপবর্ণ জাগতিক-জিভ নক্ষত্র চুষে খাই উদগ্রীব রাক্ষস নাকি ডাগর বালক! আলো খাই আলো খাই আনন্দদাহ পেটের ভিতর আস্ত ঈশ্বর এই আমি! ভ্যাকুম ক্লিনার আগুনের ‘বিষন্ন’ চেটে খাই সম্ভ্রম পোড়ে, পোড়ে সম্ভ্রম আর কত কম্পনকাল? গ্যালন গ্যালন গ্রাভিটি গিলছি তাপ আর ভর, কৃষ্ণমুখ, জ্বালামুখ কণাদহন! সূর্য বেটে খাই অন্ধকার খাওয়াবে কে? কে খাওয়াবে বিষাক্ত পেগ? ‘অন্ধকার’ ধারালো ব্লেড আলজিভ কেটে ফেলি, চেরাজিভ মাথায় গ্রহাণুলেহন, কী প্রতাপ! ছাই-ভস্ম-অঙ্গার ওয়ারলেস খাদকপাখি পুঁতে ফ্যালে আমায় চন্দ্রবালুকায় আনকোরা রাতের গল্প নয় ভয়াবহ রিমোটপ্রবাহ ধাতব নেপচুনযান দেহ ছিঁড়ে ছুটে চলে নরকের বেশে গোলাপবর্ণ জাগতিক-জিভে রাক্ষসবালক মোচড় দিয়ে ওঠে মানুষ খাওয়ার চুক্ চুক্ ধ্বনি এসো! কালের অস্থি এই চুল্লিতে ভরি

পিয়াংকী

ছবি
  শিল্প  এরপর থেকে আসল গল্প শুরু  উঠোন থেকেই দেখা যাচ্ছিল ঘরের ভিতর অবধি - ভ্যান গঘের প্রিয় ক্যানভাস নিয়ে খেলছে তাঁরই পোষা কুকুর। গায়ের লোম কোথাও কোথাও খসে গেছে, আরশোলা মাথায় চেটে দিলে যেমন হয় অথবা  টাকপোকা হলে ডার্মাটোলজিস্ট দেখানো উচিত কিন্তু...  কুকুরের চামড়া থাকে ?  দূর থেকে এসব দেখছি আর ভাবছি -- সৌরস্থানে যেক'টি গ্রহ ,  প্রত্যেক গ্রহে যদি একজোড়া গৃহপালিত পাঠানো যেত একজোড়া = একটা কুকুর + একটা মানুষ  উফফফফ আলফাল যত !  ততক্ষণে,  প্রায় পৌনে এক ভাগ শিল্প খেয়ে নিয়েছে ওই  কুকুর এখনই ওর মুখ কেড়ে নিয়ে তাতে উপযুক্ত  কাপড় পরানো দরকার   উলঙ্গ মুখে উনুন গ্রহে গ্রহে যত তছরুপ,  রংবিক্রেতার তত লাভ এসব দেখিয়ে কতই বা রোজগার হয় শিল্পীর  উন্নাসিক হলে মানুষ এবং কুকুর কি এক দেখতে লাগে ?  ভাবা ছাড়াও কবির মেলা কাজ  স্বপ্ন থেকে উঠে এসে দেখি,  কুকুরের লোমওঠা জায়গাগুলো সব পালকে পরিপূর্ণ  সাবাশ ডাক্তার ! ধন্যবাদ।

সুবিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

ছবি
  ঘরে বাইরে   একটা দোলনা দুলছে আর এগিয়ে আসছে পৃথিবী একটা দোলনা দুলছে আর পিছিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী বিন্দু,  বিন্দু থেকে রেখা, রেখা থেকে চাপ, চাপ থেকে বৃত্ত, বৃত্ত থেকে বিন্দু। একটা বাস্তব কাঁদছে আর তার পেছন দিকে হাসছে পরাবাস্তব,  একটা পরাবাস্তব কাঁদছে আর তার পেছন দিকে হাসছে বাস্তব। একটা দোলনা দুলছে আর আলোকিত হচ্ছে নিখিলেশ একটা দোলনা দুলছে আর অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে সন্দীপ। ঘরেবাইরে অভিনয় চলছে  ওয়ান টু থ্রি ক্ল্যাপ স্টিক ...  শট ওয়ান, টেক ওয়ান রেডি,  ক্যামেরা রোলিং, সাউন্ড, একশন।  অভিনয় হচ্ছে পর পর চিত্রনাট্য বরাবর।

রিমলী বিশ্বাস

ছবি
  মায়া নিরলস মায়া মায়া টান দু'চোখে ঘুম নেমে এলে টলে ওঠে বুক রাতপরীদের উড়ে চলা শ্রাবণের মেঘে বৃষ্টিধোয়া কাঙ্ক্ষিত মুখ! পিচ্ছিল পথে নামে অভিসারী মন! পৃথিবীর প্রতিটি প্রেম দুর্ঘটনাপ্রবণ! ঘুমের ভেতর ঘুম, অন্ধকারের ভেতর অন্ধকার  শবর-শবরী জলে নামে জলজ সুঘ্রাণের খোঁজে,  মুহূর্ত থমকায়, বলে ওঠে  ভালোবাসার অন্য নাম সহস্র মরণ পৃথিবীর প্রতিটি প্রেম দুর্ঘটনাপ্রবণ! কেন শরীর জাগে? শীতঘুম শেষ হওয়া  সরীসৃপ যেন! ছুঁতে চেয়ে আদরে আদর মাখে মধ্য রাতের কোকনদ নীল বিছানায়!  যে কোনো ভুল অনিবার্য মনে হয়! এই যে এত মায়া,  সবই কী পতঙ্গের পাখি হতে চাওয়া?  বিপদসংকুল বুঝি দেহ পর্যটন? পৃথিবীর প্রতিটি প্রেম দুর্ঘটনাপ্রবণ!

ঋজু রেজওয়ান

ছবি
  সীমানার শর্ত বিজ‌য়ের সব মুহূ‌র্তেই... তার অ‌ধিকার! কেন্দ্র হোক আর কেন্দ্রা‌তিগ ব‌লের আসন; কেউ কেউ বোরখায় রমনীয় স‌ঙ্গানুসঙ্গের; ওহ‌মের কাছা ও কা‌ছির অ‌ভিভাবকসুলভ নিঃশ‌ব্দে ব‌সে আছে... মিস না ম্যাডাম? ক্লা‌সের সবাই উঠে দাঁড়াইল [ধর‌তে পা‌রেন] নত-ই হইল কোন সমস্যা দে‌খি না— Monotonously. বেহালার স্টীলপ্লে‌টে যে স্ট্রিং, বাঁধায় বাজে। সিল্কের মতই টানটান— উত্তেজিত গুনগুন যেন, প্রান্তটি ধরেই নিয়ন্ত্রণও করছে কেউ! তবুুও করছে দাবী, ভেতরের অদৃশ্য তরঙ্গ। হাতের ভাঁজগুলিও খুলে গেল! কেন জানি, শুকনো ঠোঁটেও বিজয় দেখছি...

দেবশ্রী দে

ছবি
  একটি পেলব গান একটি পেলব ঘুমের শরীরে কোনও রোম থাকে না অথচ কী মোহে ছুঁয়ে দিই একটি জ্যান্ত ফ্রকের মেয়ে আর একটি ছেলে— হাওয়ার মতোই গান গায়, গান গায় ঘুমের যোনিতে। শুনি জ্যোৎস্না-চোখের চেনা সুরে হাসে দুইজন এমনই কোনও ক্ষণে তুমি স্বপ্ন হয়ে যাও তোমার স্তনে লেখা হয় ওদের গান কী মোহে যে ছুঁয়ে দিই... ঘুমপাড়ানির মতো পেলব স্বপ্ন তুমি নও

মৌসুমী রায়

ছবি
 পৃথিবীর অভিমান টিনের শেডে ঢাকা পড়ে ছাদ, ঘুড়িগুলো গভীর অভিমানে নীল। বিশ্বকর্মার দুপুর পেরিয়ে যায়। মাঞ্জায় বুক টনটন। তবু, ছেলেদের দেখা নেই। ছেলেরা তখন ভীষন রকম মগ্ন গেম গেম খেলায়। মোবাইলের স্ক্রিনে সাপের মত এঁকেবেঁকে মোম ঢালা হাইওয়ে। ছেলেরা প্রানপণ রেসিং বাইক চালাচ্ছে। ওদিকে, শরতের  চিরসবুজ মাঠে  উড়ছে ঘাসফড়িং, উচ্চিংড়ে, রঙ বেরঙের প্রজাপতি। খোলা হাওয়া বইছে শন শন। ছেলেরা তখন ফ্রি ফায়ারের  উদ্দাম ডানায় চেপে,  এক গ্যালাক্সি থেকে অন্য কোন  গ্যালাক্সিতে। আকাশ ,বাতাস, খোলা মাঠ  বা রোদ্দুরের ডাক তাদের  কাছে আর কিছুতেই পৌঁছাচ্ছে না। বিপন্ন পৃথিবী একলাই নিজের  কক্ষে বিষন্ন  ঘুরছে।

দীপঙ্কর সরকার

ছবি
  হত্যার অপর পৃষ্ঠা    হত্যার অপর পৃষ্ঠায় লিখে রাখি তোমার নাম সাকিন ও ঠিকানা, কতকাল কথা নেই দীর্ঘ  দিনের আড়ি। তবু ভুলতে পারিনি তোমার  রাগ অনুরাগ। সন্দেহপ্রবণ আমি, ভেবেছি একদিন পৌঁছে যাব তোমাদের নীল সাদা  বাড়ি। চমকে দেওয়ার মতো আরও কিছু  উপহার সামগ্রী নিয়ে অতর্কিতে হানা দেব, বিস্ময়ে বেবাক হবে যেন এক অশরীরী -- এমনই কাণ্ড কারখানা আমার স্বভাবে বদ রাগী। লেখার যা নয় হত্যার অপর পৃষ্ঠায়  লিখে রাখি তাও প্রচণ্ড বাড়াবাড়ি...

সৃশর্মিষ্ঠা

ছবি
  পারভার্সন     এমনকি স্বপ্নেও দেখা বা কথা, কিছুই হয়নি  দেখব শুনব মিলিত হবো ভাবতে ভাবতে  বাস্তব অবাস্তব পেরিয়ে  আমরা আমাদের প্রেতের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে  দ্রাঘিমাংশ ভুলেছি  আর কিছু নিখুঁত অসভ্যতা করেছি  যার ঘ্রাণে চমকে উঠেছে   পরাবাস্তব বাই লেনে ফেলে আসা  আমাদের অন্তর্বাস...

ঈশানী রায়চৌধুরী

ছবি
 নক্ষত্রপ্রাচীন যুবা তুমি তো চেনো না মোরে নক্ষত্রপ্রাচীন যুবা, এই অনন্তের রাতে পরিচয় কিবা! তবু যদি হেঁটে যাও, যেদিকে বাঁকানো আছে কালপুরুষের ছিলা, আমি আছি অগ্নিকোণে লুব্ধক শরীরে... ঠোঁটের কিনারে নিয়ে চুম্বনপ্রত‍্যাশা। একদিন উড়ে গেছে আমার চোখের পাতা আশ্বিনের ঝড়ে। একটা মেঠো শ্বাস ঝাপটিয়ে ডানা উড়ে ছিল ছায়াপথ ধরে, সেদিনের স্মৃতি আজ ধুলোর মতন নম্র স্বরে গান গায়.. নাভি থেকে শ্বাস নিলে খুঁজে পাবে কদমসুবাস। ওহে যুবা, তোমার ফসিলচোখে অভিসার ছেনে আমি যাবো অরোরার আলোপথ চিনে। নীহারিকা জানালার পর্দা সরিয়ে, হাতছানি ছুঁড়ে দেব; পারবে কি তুমি সেই ডাক ঠেলে হতে নিষ্ঠুরমানব! তারপর একদিন তারা খ'সে ঝরে যাবো সবুজ-সমুদ্রে, মাছ হয়ে চিনে নেব তোমার পিচ্ছিল ত্বক পাখনায় ছুঁয়ে। অন‍্য মাছের ঝাঁকে ছুটে যাবে লাম্পট‍্যের টানে! না না, হৃদয়টা খুঁড়ে আমি ভরে নেব অসহ পাথর-জোড়া নিশ্ছিদ্র বেদনা। বেদনার নীলরসে জন্ম নেবে মুক্তো দ‍্যুতিময়... সেই স্নিগ্ধজ‍্যোতি যেন অবহেলে দুচোখ পোড়ায়! মহাকাল লিখে নেবে কালো তার জাবেদাখাতায়, একটা গোপন ব‍্যথা কী সাহসে অধিকার করল আদায়! রূপকথা হেরে যাবে একদিন প্রলয় শিশিরে, আমরাও পাড়ি দেব ব্ল‍্যাকহো...

আলোলিকা

ছবি
  মুখোমুখি   একটা সময় স্বপ্নগুলো মৌনআপেল আর আঙুর থোকা ছিল টুপটাপ ঝরতো আহ্লাদ ভোরের ছাউনি ডিঙিয়ে একাকী হাঁটতাম বিষণ্ন চিবুকে আকাশের নীল শূন্যতা নিয়ে আসতো অর্কিড প্রেম তোমার সঙ্গ আমাকে তুমি ভিক্ষা দিয়েছিলে কাঙাল আমি বসেছিলাম দুহাত পেতে।  ঠোঁটে, গালে, গলার আড়ালে, আলজিভে,  ঘাড়ের পিছনে সেই কৃষ্ণবর্ণ বিন্দুতে সজাগ জীবন্ত হয়েছিল  তোমার চুমু  ইরেজার ঘষেও  বিবর্ণ করা যাবেনা কখনো যাকে  এখন মুখোমুখি আমার আমি স্তিমিত প্রদীপে  মুখ দেখবার আরশি ভেঙে বসে থাকি শেষ প্রতীক্ষায়  আমাকে খায় ভিক্ষা তোমার সঙ্গ খুলে খুলে ভেতর থেকে করাত কাটে শিকড় খুঁজে মরে

সুপর্ণা লিলিথ দাস

ছবি
  পাহাড় না বেলাভূমি  কার্নিশে বসে আছে অবেলার বৃষ্টি ও বিকেলের একাকিনী চা।  পাহাড়ি রোডোডেনড্রেন বা  বেলাভূমির স্টারফিশ কার ডাকে সাড়া দেবে ভ্রান্ত যৌবন ? ঢেউ এর সাথে তটে ফেরে কাঁচে ভরা পুরাতন চিঠি  লাইট হাউসের দেখানো পথে নোনতা মেঘও  চলে আসে মাঝে মাঝে সি-ফেসিং ঘরে ,  রমণে ব্যস্ত উইন্ড চাইমস্ চিঠিদের পুরনো প্রেম ঠেলে রাখে পাশে দ্বিধা করেও ফিরে যেতে চায় প্রেম-ছিট বেডশিট-  সাদা রং তার মেখে দিতে পাহাড়ের পরকীয়া ঘুমে ঝর্ণার খাঁজে খাঁজে এখনো কি হেঁটে যায়  ডানা খোলা পরীদের দল?  পাথরের জলে তাদের স্তন খোলা স্নান আহ্! যদি দেখতেন কবি-  বৃষ্টির গোপন ঠিকানায় লিখতেন কিছু ডার্ক শেড ছবি। বোবা ভ্রমরেরা মাঝে মাঝে স্থলপদ্ম গাছে খুঁজে ফেরে শ্বাস ,  আমি কি এখনো খুঁজি না- “পাহাড় না বেলাভূমি?”- এ প্রশ্ন কার ছিল! 

পপি মৈত্র

ছবি
  কাব্য  নিরক্ষরেখা বরাবর হেঁটে যাচ্ছে নিঃস্ব রাত ছায়ার ভাঙ্গনে জেগে ওঠে নক্ষত্রের দুঃস্বপ্ন ঘড়ির কাঁটা ছুঁয়ে গোপন হচ্ছে সময়ের হিসেব আয়নার কৌণিক দূরত্বে কোন জিজ্ঞাসা নেই  সামনে দাঁড়ালে নিজেকে রোমান্টিক মনে হয় সুরের তাল কাটলে কথারও অভিমান হয়__ পরাস্ত হাতের পরশে সংক্রমিত হচ্ছে অনাথ কাব্য।

সর্বানী বন্দোপাধ্যায়

ছবি
 আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন পৃথিবীতে তারা নেমে আসে  রাত হলে কুয়াশার মতো ভাবনার জালে  ঢেকে যায় শহরের আদি রূপকথা;  গাছে গাছে কথা হয় ফিসফিসে সুরে  দূরে ডাকে সাগরের ঢেউ  তবু ঋণ বেঁধে ফেলে মাকড়ের প্রায়।  আকাশ ছোঁয়ার শখে উঁচু হয়  একতলা বাড়ি। ছাব্বিশ তলা ঢেকে  মেঘ ঘেরে ঘর চৌকাঠ-  বৃষ্টিও ছুঁয়ে যায় গৃহহীন গৃহঋণী   রমণীর ঠোঁট, ঘন হয়ে আসে চাঁদ  পরী নামে নীল রঙা কুহকিনী ছাদে।  

মানস চক্রবর্তী

ছবি
  দৃষ্টিহীন   আজ রাস্তায় ঘোলাটে চোখের এক ব্যক্তিকে দেখলাম  অব্যবহিত পরেই এক মহিলাকে দেখলাম, যার একটি চোখ নেই  ঘোলাটে পৃথিবী, দৃষ্টিহীন পৃথিবী, মৃত্যুর অব্যবহিত পূর্বে জ্যাঠামশায়ের চোখ ঘোলাটে হয়েছিল  মৃত্যুর পূর্বে কাকিমাও হারিয়েছিলেন একটি চোখ  ভয় করে, অসম্ভব ভয় করে  দিন দিন দৃষ্টিহীন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে  কচি বাঁশপাতায় আর শিশির দেখি না আমরা  বৃষ্টিস্নাত কদমকে হাসতে দেখি না ভেজা অপরাজিতার সৌন্দর্য দেখি না  পৃথিবী জুড়ে কেবলই দৃষ্টিহীন মানুষ  কেবলই দৃষ্টিহীন...

সুদীপ চক্রবর্তী

ছবি
  বসন্তসেনার হাসি ~ একা-একা বসে থাকবে? কি করবে? দেখবে জমির উপর দু-তিনটে সূর্য! এখনও ডেট পাইনি বলে কোর্টের দরজা বন্ধ। একা-একা বসে থাকবে? কি করবে? রোজ-রোজ কান্না আর যন্ত্রণা রোজ-রোজ অভাব আর সামন্ততন্ত্রের অট্টহাসি। বিচার চাইতে এসেছিলে, বিচারক প্রতিদিন বাড়ি থাকে নাকি! তাবলে কি প্রতিবাদ হবে না? আন্দোলন হবে না কিছু? স্পেস স্টেশনে ধর্ষণ হলে দেখবে গ্রাভিটির মাথা নীচু আমার ব্রক্ষ্মাণ্ড ছিল, বুকে ইচ্ছে ছিল  মেয়ে যেন আর্টস না পড়ে, এক-একা কি করবে তুমি, অভাব-দারিদ্র-কলহ প্রতিটা ঘরে ঘরে। নীলিমার সঙ্গে টয়লেটে ~ নীলিমা গুপ্ত  একবার আমার সঙ্গে টয়লেটে গিয়েছিল  তারপর থেকে, যতবার অনুরোধের আসর ভাবি ভাবি গ্রহতারা, মস্তিষ্ক প্রক্ষলন হয়, গান কই? কই গান? চারিদিকে প্রাণের পাহারা আমি তো অনুভূতি বীজ, দিক নেই, স্থির নেই কিছু  পরিবর্তন কুকুরের মতো আমার পিছু-পিছু। ভাবি এই মাঠ, ফাল্গুন বলে নেশা ছেড়ে দাও, পলাশ ও বলে কি দরকার ও সব ছাইপাঁশ গিলবার! তুমিও মানুষের মতো চিন্তা করো চিন্তা করো, প্রতিবেশী দেশ এখানে বললে কথা খুলে নেবে কাপড়ের লেজ বলো তুমি আমেরিকা! বলো তুমি জয় হোক ধ্বনি! বর্ধমান কোথায় শেষ ...

নিলয় নন্দী

ছবি
  ১ প্রশ্ন ~ "আমার লিপস্টিকের রঙ কফির মতো, নাকি কফিটাই আমার ঠোঁটের মতো?" আমি উত্তর দিই না। শুধু দেখি— কফির ধোঁয়ায় মিশে যাচ্ছে তোমার অস্তিত্ব, বাদামী ঠোঁট, বাদামী কফি, আর এক পরাবাস্তব বিকেল... ২ মৃত্যু ও ম্যাজিক রোমান্টিসিজম ~ চাঁদের চৌহদ্দিতে টোকা মেরে অন্ধকারের ঘুম ভাঙাই  তোমার ছায়া ফিসফিস করে বলে, "মৃত্যু এক মায়ার দরজা— খুললে হয়তো দেখা যাবে অতলান্তিকের নিচে ঝলমলে এক শহর।" অগুনতি তারা, মন্দারমণি আর  এক পরিত্যক্ত নৌকা, নিবিড় জ্যোৎস্নায় রূপোলী চরে মৃত কবিদের স্বপ্ন। কারা লিখে গেছে দুঃখের চিঠি, মনে পড়ে না। রাত বাড়লে বুকের ভেতর আঁচড়ায় লোমশ বেড়াল ছায়া ভাসে, শব্দেরা ডিগবাজি খায়। মৃত্যুর রাস্তা আর রোমান্টিসিজমের ধোঁয়া মিশে যায় অনন্ত লাবণ্যে... তুমি বললে, "মৃত্যু কোনো শেষ নয়, এ এক ধোঁয়ার সেতু— যা আমাদের স্বপ্নের দেশে নিয়ে যায়।" আমি শেষের কবিতা পড়ে যাচ্ছি বিগত বাইশ  উঠছি, বসছি, হাতে নিচ্ছি ম্যাজিক স্টিক  ছুঁয়ে দিচ্ছি স্তনতিল, ঝড়ের পায়রা  পরীর ডানায় বৃথা অঘ্রাণ... মৃত্যু যতটা মহার্ঘ, অন্ধকার ততটা নয়  মৈথুন যতটা শারীরিক, মন ততটা নয়  এখানে রাত কোনো শেষ নয়, ব...

সংস্কৃতি বন্দ্যোপাধ্যায়

ছবি
 ১. এক আকাশের নিচে ~ প্রতিধ্বনির পথে হাঁটছি একা সমান্তরাল গাছ ঝুঁকে আছে বুকে সত্যবেশ খুলে দিচ্ছে পাপড়ি কত মুখ জুড়ছে নিঃস্তব্ধ ডানায় ঝিরঝিরে চাঁদ, মেঘের ছাঁট, ফলনের দিন... বয়ে যাচ্ছে শ্রান্ত নোঙরে ২. সন্তানের জন্য ~ ঘরের বাড়ন্ত চাল যখন মুখ বুজে হাসে বৃষ্টির ছায়া পড়ে   বুকের জানালায় দূর তৃষ্ণায় নিঝুম নামে নিরস্ত্র ডালের বড়ি, শাড়ির মতো ছেড়ে রাখা রাত সাদা ঘুম টেনে দেয় কাজলে নাড়ি ছেঁড়া ধনে কত হ্রদ খুলে যায়

মঞ্জরী গোস্বামী

ছবি
 ১ ঘাতক এসেছে চুপি চুপি মনের ভেতর তার চৌকো পায়ের ছাপ বাগানের পথ জুড়ে বিকল মোটরগাড়ি ভোঁতা স্বরে হর্ন বাজায় এখনও পাও নি ছাড় , পাও নি স্নানের অনুমতি ফুলস্কেপে টব এঁকে কবে থেকে বসে আছো ম্লান পিয়ানোয় হাত রেখে জন্মবধির ডাকো , তাকে একবার ডেকে দিয়ে যাও যার কাছে আজন্ম বিষদাঁত বন্ধক রাখা ২ সে আসল রিং মাস্টার জীবনের কেঁদো বাঘ তার কাছে জড়োসড়ো থাবা বেহায়া খিদে নিয়ে ল্যাজ নাড়ে ক্ষুদ্রকায় টুলে গোটা মহাকাশ ঘুরেও পৃথিবী ব্যর্থ, অসহায় পল অনুপলে বদলেছে বাঁচার মহিমা হাজার সূর্য রাখো,  মৃত্যু তবু একা-অন্ধকার ভয়ানক উপেক্ষা ছুঁড়ে দেয় জড়ানো কম্বলে...

কৌশিক সেন

ছবি
  তন্ত্র ~ নরকের ঘাটে ঘাটে অবুঝ প্রত্যয় বাতাস ফিরে পায় গ্রাম্যতা। প্রণত  শরীর, নগরের রাজপথে অনুপ্রাস রেখে যায় গুনে গুনে। এখানে থেমেছ যদি, শোক নয় আশ্বাস। আচমনে দীর্ঘ হয় স্নান অস্থিকলস; রাতের শ্বাপদ সুখ বুকে বাঁধে মুণ্ডমালিনী। এমনওতো হতে পারে শৃগালশরীর ছেঁড়াপাতা রেখে যায় জাদুকরী, লজ্জাস্থানে এখনও স্নান সারে কেউ কেউ। নিদ্রাসুখ ভেঙে যায় তিমির অবগাহনে, এখনও শোক জমে নাড়িপথে স্কন্ধকাটা চুষে খায় বাতাসার রস। ভাণ্ড তবু উপচে পড়ে স্বর গ্রামে প্রবাহে মাঘের নদী উপচায় যোনিমুখে সামলে চলার খেদ জেনে রাখে  করোটিকঙ্কাল। ফুঁক মারি। ছাই ওড়ে সাধনার পঞ্চমুণ্ডে  খাড়া হয় বাঁশি। হাঁ’মুখে কিশোরীরং ঘনঘন জিভ নাড়ে কদাকার শৃগালজননী। সবশেষে খেরোখাতা খুলি। জবাফুল রেখে আসি জরায়, বৃক্ষজরায়ুতে ঈর্ষা রাখি ললাটচন্দনে, রোহিনীলতায়….. পদ্মনাভ  ~ ধিমতি নাভির দেশ। কেঁপে উঠে অজর অমর  স্থাপনের ঘাসে ঘাসে অজপাসকাল। উলের কাঁটায়  বোনা অলাতচক্র যত। খামোশ হয়েছে সঙ্গীত। গাঢ় হয়ে আসে পদাতিক। শমনেই রাজার সমন  কখনও কি শ্লোক ছিল ভূর্জের অমোঘ সুষুম্নায়! উৎসবে মিশে যায় পথ্যের কত উপ...

শম্পা সামন্ত

ছবি
  ১ কুয়ো ~ ১৩৬ বাই ৩৮ বাইলেনে যখন আস্তানা গেড়েছি, তখন ও বাই শব্দটির প্রকৃত ব্যবহার শিখিনি। পঞ্চব্যাঞ্জনের চচ্চড়ি রান্নায় কবিরাজ প্রদত্ত দশ ধাতুর ওষুধ ব্যবহার করা যেতেই পারে। এ বিষয়ে অহল্যা রাজ্যের রাণি অহল্যাবাই কী নিদান দিয়েছিলেন জানা নেই। কবি এতদিনে জানতে পারল বাঘেদের আস্তানাগুলো সবই ব্যবহার‍যোগ্য এক একটা কুয়ো। ২ নিয়ত বায়ু ~ গল্পে গল্পে জানা গেল যে নিঝুম পুকুরটির বুকে তরঙ্গ রণিত হয়। আর নির্বোধ পথিকের অতিরিক্ত শ্রবণেন্দ্রিয়ের অবস্থান তার মস্তিষ্কের ঠিক নিচেই। অথচ মস্তিষ্কের পাশে কোনো প্রবাহ নেই স্বচ্ছ।  সে যেন আলটপকা শোনে এবং বলে নিয়ত। অথচ নিয়ত বাহিত বাতাসের কোনোই অনিয়ম নেই। গ্রীষ্মের পরে বর্ষা, কিংবা বসন্তের পরে কালবৈশাখী।